ঢাকা ১০:১১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড Logo ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ Logo ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৮০ Logo পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব Logo নওগাঁ ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে মারধর Logo পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা Logo ৫ বছর পর দেশে এসেছেন শাবানা Logo নুরাল পাগলের কবর ভাঙচুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৫ নেতা গ্রেপ্তার Logo মার্কিন বাণিজ্যে শুল্ক ছাড় পাচ্ছে মিত্র দেশগুলো, ট্রাম্পের নতুন আদেশ Logo বরগুনায় নিজ বসতঘর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

ব্যাবসা-বাণিজ্য ডেস্কঃ   রমজানকে সামনে রেখে দফায় দফায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। ১০ দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম অন্তত তিন দফা বেড়েছে। এতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে আবারও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দাম আরও বেড়ে যাবে।

তারা বলছেন, রমজানে পেঁয়াজের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও ইতিমধ্যে অনেকে রোজার কেনাকাটা শুরু করেছেন। ফলে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে গেছে। এই ফাঁকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সামনে পেঁয়াজের চাহিদা আরও বাড়বে। সুতরাং দাম আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৫৫-৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। তার আগের সপ্তাহে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। এ হিসাবে দুই সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

অবশ্য এর আগেও পেঁয়াজের দাম কয়েক দফা অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত রফতানি বন্ধ করলে দেশের বাজারে হু হু করে দাম বেড়ে পেঁয়াজের কেজি ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। এরপর সরকারের নানামুখী তৎপরতায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও তা আর একশ টাকার নিচে নামেনি।

তবে চলতি বছরের মার্চের শুরুতে রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ভারত। ফলে দেশের বাজারে দফায় দফায় কমতে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। কয়েক দফা দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকায় নেমে আসে।

কিন্তু করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে আবার বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। ৪০ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে ৮০ টাকায় উঠে যায়। এ পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে ভোক্তা অধিদফতর ও র‌্যাব। পেঁয়াজের বাজারে চলে একের পর এক অভিযান। এতে আবারও দফায় দফায় দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসে।

তবে ভোক্তা অধিদফতর ও র‌্যাবের অভিযান বন্ধ হওয়ায় আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। রমজানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের এই দাম বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

রামপুরা বাজার থেকে পেঁয়াজ কেনা খায়রুল হোসেন বলেন, করোনার শুরুতে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম। সেই পেঁয়াজ ফুরিয়ে গেছে। রমজানও চলে এসেছে। তাই বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসেছি। কিন্তু বাজারে আবার পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনছি।

জুয়েল নামের আর এক ক্রেতা বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার ব্যবসায়ীদের একের পর এক সুবিধা দিচ্ছে। অথচ এই ব্যবসায়ীদের একটি অংশ মানুষকে জিম্মী করে একের পর এক পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন যেসব পণ্য মজুদ করে রাখা যায়, সেগুলোর দাম বাড়ছে। যেগুলো পঁচে যায়, মানে শাক-সবজির দাম কিন্তু বাড়ছে না। বরং কমছে। এ থেকেই বোঝা যায় মজুদ করে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ দাম বাড়াচ্ছেন।

তিনি বলেন, করোনা আতঙ্কের শুরুতে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়ে গেল। এরপর র‌্যাব, ভোক্তা অধিদফতর অভিযানে নামলে দাম ঠিকই কমে যায়। এতেই তো বোঝা যাচ্ছে মুনাফা লোভি ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে। র‌্যাব ও ভোক্তা অধিফতরের উচিত আবার পেঁয়াজের বাজারে অভিযান চালানো। তা না হলে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম আরও বাড়িয়ে দেবেন।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আলম বলেন, আমরা খুচরা ব্যবসায়ী। দাম বাড়া বা কমা আমাদের ওপর নির্ভর করে না। পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ালে আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই। তবে আমাদের ধারণা রোজার কারণে এখন পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। রোজায় পেঁয়াজের চহিদা আরও বেড়ে যাবে তখন দাম আরও বাড়তে পারে।

রামপুরার ব্যবসায়ী মনির বলেন, করোনা ভাইরাসের শুরুতে যারা পেঁয়াজ কিনেছিলেন, তাদের অনেকেরই পেঁয়াজ শেষ হয়ে এসেছে। ফলে ওই ক্রেতারা এখন আবার বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসছেন। এর সঙ্গে রোজার কেনাকাটাও শুরু হয়েছে। ফলে অনেকে রোজার জন্য বাড়তি পেঁয়াজ কিনছেন। এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। ফলে দামও বেড়েছে। মানুষের কেনা শেষ হলে আবার হয় তো দাম একটু কমতে পারে।

শ্যামবাজারে পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকার পণ্যবাহি গাড়ি চলাচলের সুযোগ দিলেও অনেকে মাল নিয়ে ঢাকায় আসতে চাচ্ছেন না। যে কারণে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ কম। যে মাল আসছে তার পরিবহন খরচও বেশি এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে।

ট্যাগস

নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড

বেড়েই চলেছে পেঁয়াজের ঝাঁজ

আপডেট সময় ০৬:২৬:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল ২০২০

ব্যাবসা-বাণিজ্য ডেস্কঃ   রমজানকে সামনে রেখে দফায় দফায় বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। ১০ দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের দাম অন্তত তিন দফা বেড়েছে। এতে পেঁয়াজের দাম বেড়ে আবারও প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে দাম আরও বেড়ে যাবে।

তারা বলছেন, রমজানে পেঁয়াজের চাহিদা কয়েক গুণ বেড়ে যায়। করোনা ভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক থাকলেও ইতিমধ্যে অনেকে রোজার কেনাকাটা শুরু করেছেন। ফলে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে গেছে। এই ফাঁকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সামনে পেঁয়াজের চাহিদা আরও বাড়বে। সুতরাং দাম আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৫৫-৬০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০-৪৫ টাকা। তার আগের সপ্তাহে ছিল ৩০-৩৫ টাকা। এ হিসাবে দুই সপ্তাহের মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

অবশ্য এর আগেও পেঁয়াজের দাম কয়েক দফা অস্বাভাবিক হারে বাড়ে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ভারত রফতানি বন্ধ করলে দেশের বাজারে হু হু করে দাম বেড়ে পেঁয়াজের কেজি ২৫০ টাকা পর্যন্ত উঠে যায়। এরপর সরকারের নানামুখী তৎপরতায় পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও তা আর একশ টাকার নিচে নামেনি।

তবে চলতি বছরের মার্চের শুরুতে রফতানি বন্ধের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় ভারত। ফলে দেশের বাজারে দফায় দফায় কমতে শুরু করে পেঁয়াজের দাম। কয়েক দফা দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৪০ টাকায় নেমে আসে।

কিন্তু করোনা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে মার্চের দ্বিতীয় সপ্তাহে আবার বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। ৪০ টাকার পেঁয়াজ এক লাফে ৮০ টাকায় উঠে যায়। এ পরিস্থিতিতে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নামে ভোক্তা অধিদফতর ও র‌্যাব। পেঁয়াজের বাজারে চলে একের পর এক অভিযান। এতে আবারও দফায় দফায় দাম কমে পেঁয়াজের কেজি ৩০ টাকায় নেমে আসে।

তবে ভোক্তা অধিদফতর ও র‌্যাবের অভিযান বন্ধ হওয়ায় আবারও অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। রমজানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের এই দাম বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

রামপুরা বাজার থেকে পেঁয়াজ কেনা খায়রুল হোসেন বলেন, করোনার শুরুতে পাঁচ কেজি পেঁয়াজ কিনেছিলাম। সেই পেঁয়াজ ফুরিয়ে গেছে। রমজানও চলে এসেছে। তাই বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসেছি। কিন্তু বাজারে আবার পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। বাধ্য হয়ে বাড়তি দামে পেঁয়াজ কিনছি।

জুয়েল নামের আর এক ক্রেতা বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে সরকার ব্যবসায়ীদের একের পর এক সুবিধা দিচ্ছে। অথচ এই ব্যবসায়ীদের একটি অংশ মানুষকে জিম্মী করে একের পর এক পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন। ভালো করে খেয়াল করলে দেখবেন যেসব পণ্য মজুদ করে রাখা যায়, সেগুলোর দাম বাড়ছে। যেগুলো পঁচে যায়, মানে শাক-সবজির দাম কিন্তু বাড়ছে না। বরং কমছে। এ থেকেই বোঝা যায় মজুদ করে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ দাম বাড়াচ্ছেন।

তিনি বলেন, করোনা আতঙ্কের শুরুতে পেঁয়াজের দাম হু হু করে বেড়ে গেল। এরপর র‌্যাব, ভোক্তা অধিদফতর অভিযানে নামলে দাম ঠিকই কমে যায়। এতেই তো বোঝা যাচ্ছে মুনাফা লোভি ব্যবসায়ীরা পরিকল্পিতভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছে। র‌্যাব ও ভোক্তা অধিফতরের উচিত আবার পেঁয়াজের বাজারে অভিযান চালানো। তা না হলে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম আরও বাড়িয়ে দেবেন।

খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আলম বলেন, আমরা খুচরা ব্যবসায়ী। দাম বাড়া বা কমা আমাদের ওপর নির্ভর করে না। পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ালে আমরাও বাড়তি দামে বিক্রি করতে বাধ্য হই। তবে আমাদের ধারণা রোজার কারণে এখন পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। রোজায় পেঁয়াজের চহিদা আরও বেড়ে যাবে তখন দাম আরও বাড়তে পারে।

রামপুরার ব্যবসায়ী মনির বলেন, করোনা ভাইরাসের শুরুতে যারা পেঁয়াজ কিনেছিলেন, তাদের অনেকেরই পেঁয়াজ শেষ হয়ে এসেছে। ফলে ওই ক্রেতারা এখন আবার বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসছেন। এর সঙ্গে রোজার কেনাকাটাও শুরু হয়েছে। ফলে অনেকে রোজার জন্য বাড়তি পেঁয়াজ কিনছেন। এ কারণে বাজারে পেঁয়াজের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। ফলে দামও বেড়েছে। মানুষের কেনা শেষ হলে আবার হয় তো দাম একটু কমতে পারে।

শ্যামবাজারে পেঁয়াজের পাইকারি ব্যবসায়ী সোহেল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকার পণ্যবাহি গাড়ি চলাচলের সুযোগ দিলেও অনেকে মাল নিয়ে ঢাকায় আসতে চাচ্ছেন না। যে কারণে এখন পেঁয়াজের সরবরাহ কম। যে মাল আসছে তার পরিবহন খরচও বেশি এ কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471