ঢাকা ১১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নখের আঁচড়’ থেকেই গৃহবধূর হত্যার রহস্য উন্মুচন

                                                                     ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মবাড়িয়া পৌরশহরের মধ্যপাড়া বসাক পাড়া এলাকা থেকে গৃহবধূর লুবনা আক্তার (১৮) মরদেহ উদ্ধার করারপর এর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

লুবনা পৌরশহরের কাজীপাড়া এলাকার মুসলিম মিয়ার মেয়ে। সোমবার সকালে তথ্যাঅনুসন্ধ্যাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানান, নিহত লুবনার সঙ্গে নুপুরের পূর্বপরিচয় ছিল।

ভোরে একটি নম্বর থেকে আমাদের কাছে ফোন দিয়ে বলা হয় কাজের মেয়েকে মারধর করা হচ্ছে। এরপর থেকেই ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়াযায়। ঘটনাটি জানার পর সকালে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করি। প্রথমে আমারা ওই তরুণীর পরিচয় পাইনি। সে কাজের মেয়ে কী না সেটিও আমরা বুঝতে পারছিলাম না।

পরবর্তীতে ওই তরুণীর পরিবার এসে লাশ শনাক্ত করে। লাশের পাশে একটি ভাঙা টব ছিল। গলায় রশি পেঁচানো থাকলেও আমরা নিশ্চিত ছিলাম এটা হত্যা। আর লাশ দেখে মনে হচ্ছিল দূরে থেকে এনে এখানে ফেলা হয়নি। যারাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা আশপাশেরই হবে। সেজন্য প্রথমেই আমরা আশপাশের ঘরগুলোকে নজরদারিতে রাখি।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে আমরা প্রধান সন্দেহ ভাজন হিসেবে রানাকে আটক করি। রানার শরীরে ‘নখের আঁচড়’ দেখেই আমাদের সন্দেহহয়। লুবনাকে ধর্ষণ অথবা হত্যার সময় হয়তো সে বাঁচার জন্য নখ দিয়ে আঁচড় দিয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে সে ও তার বন্ধু নুপুর মিলে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যা করে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে।

রোববার রাতে নুপুর ফোন করে লুবনাকে রানার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর রাত দেড়টার দিকে প্রথমে নুপুর এবং পরবর্তীতে রানা ধর্ষণ করে লুবনাকে।
ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছাদ থেকে লুবনাকে নিচে ফেলে দেয়া হয়।
কোনো প্রমাণ না রাখার জন্য লুবনার মোবাইলফোনটি ভেঙে বাড়ির পাশে ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন রেজা আরো জানান, রানার গায়ে নখের আঁচড় বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে বলতে পারবেন লুবনার নখের আঁচড় কি না। আমাদের তদন্ত এখনও চলেছে। তবে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে রানা এবং নুপুর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানায়, দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছে তাকে। মূলত ‘নখের আঁচড়ের’ সূত্র ধরে লুবনার দুই হ্যতাকারীকে শনাক্ত করেছেন তারা।

স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেন। হত্যকাণ্ডে জড়িত রানা কর (৩০) ও নুপুর বসাক (৩২) নামে দুই যুবককে আটক করে পুলিশ।

তাদের দুইজনের বাড়ি মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লায়।
এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লার রানার বাড়ির পাশে একটি বাড়ির উঠান থেকে লুবনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পরপরই নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রানাকে পরে নুপুরকেও আটক করে পুলিশ।

ট্যাগস

নখের আঁচড়’ থেকেই গৃহবধূর হত্যার রহস্য উন্মুচন

আপডেট সময় ০৮:৫৯:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ এপ্রিল ২০২০

                                                                     ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ব্রাহ্মবাড়িয়া পৌরশহরের মধ্যপাড়া বসাক পাড়া এলাকা থেকে গৃহবধূর লুবনা আক্তার (১৮) মরদেহ উদ্ধার করারপর এর কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ।

লুবনা পৌরশহরের কাজীপাড়া এলাকার মুসলিম মিয়ার মেয়ে। সোমবার সকালে তথ্যাঅনুসন্ধ্যাকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানা পুলিশের কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানান, নিহত লুবনার সঙ্গে নুপুরের পূর্বপরিচয় ছিল।

ভোরে একটি নম্বর থেকে আমাদের কাছে ফোন দিয়ে বলা হয় কাজের মেয়েকে মারধর করা হচ্ছে। এরপর থেকেই ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়াযায়। ঘটনাটি জানার পর সকালে আমি নিজেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত কাজ শুরু করি। প্রথমে আমারা ওই তরুণীর পরিচয় পাইনি। সে কাজের মেয়ে কী না সেটিও আমরা বুঝতে পারছিলাম না।

পরবর্তীতে ওই তরুণীর পরিবার এসে লাশ শনাক্ত করে। লাশের পাশে একটি ভাঙা টব ছিল। গলায় রশি পেঁচানো থাকলেও আমরা নিশ্চিত ছিলাম এটা হত্যা। আর লাশ দেখে মনে হচ্ছিল দূরে থেকে এনে এখানে ফেলা হয়নি। যারাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত তারা আশপাশেরই হবে। সেজন্য প্রথমেই আমরা আশপাশের ঘরগুলোকে নজরদারিতে রাখি।
তিনি আরো বলেন, প্রথমে আমরা প্রধান সন্দেহ ভাজন হিসেবে রানাকে আটক করি। রানার শরীরে ‘নখের আঁচড়’ দেখেই আমাদের সন্দেহহয়। লুবনাকে ধর্ষণ অথবা হত্যার সময় হয়তো সে বাঁচার জন্য নখ দিয়ে আঁচড় দিয়েছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রানা হত্যার কথা স্বীকার করে জানিয়েছে সে ও তার বন্ধু নুপুর মিলে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যা করে ছাদ থেকে নিচে ফেলে দিয়েছে।

রোববার রাতে নুপুর ফোন করে লুবনাকে রানার বাড়িতে ডেকে নিয়ে আসে। এরপর রাত দেড়টার দিকে প্রথমে নুপুর এবং পরবর্তীতে রানা ধর্ষণ করে লুবনাকে।
ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ছাদ থেকে লুবনাকে নিচে ফেলে দেয়া হয়।
কোনো প্রমাণ না রাখার জন্য লুবনার মোবাইলফোনটি ভেঙে বাড়ির পাশে ড্রেনে ফেলে দেয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হোসেন রেজা আরো জানান, রানার গায়ে নখের আঁচড় বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে বলতে পারবেন লুবনার নখের আঁচড় কি না। আমাদের তদন্ত এখনও চলেছে। তবে ধর্ষণের পর লুবনাকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে রানা এবং নুপুর।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা জানায়, দুই বন্ধু মিলে ধর্ষণের পর গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করেছে তাকে। মূলত ‘নখের আঁচড়ের’ সূত্র ধরে লুবনার দুই হ্যতাকারীকে শনাক্ত করেছেন তারা।

স্বল্প সময়ের মধ্যেই এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেন। হত্যকাণ্ডে জড়িত রানা কর (৩০) ও নুপুর বসাক (৩২) নামে দুই যুবককে আটক করে পুলিশ।

তাদের দুইজনের বাড়ি মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লায়।
এর আগে সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মধ্যপাড়া এলাকার বসাকপাড়া মহল্লার রানার বাড়ির পাশে একটি বাড়ির উঠান থেকে লুবনার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ উদ্ধারের পরপরই নিহতের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে রানাকে পরে নুপুরকেও আটক করে পুলিশ।