স্টাফ রিপোর্টারঃ পুরান ঢাকার আলোচিত সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমের ছেলে বহিষ্কৃত ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইরফান সেলিমের বাসায় অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের সত্যতা পায়নি পুলিশ।
র্যাবের পক্ষ থেকে চকবাজার থানায় করা মামলা দুটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে পুলিশ এ তথ্য উল্লেখ করেছে। এতে করে অস্ত্র ও মাদক মামলা থেকে দায়মুক্তি পাচ্ছেন ইরফান।
যদিও নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আদালত থেকে তার জামিন মেলেনি এখনো। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইরফান সেলিমের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য আইনে দায়ের হওয়া দুটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ইরফান সেলিমের কাছে কোনো অস্ত্র ও মাদক ছিল না। তার সহযোগী জাহিদের কাছ থেকে অস্ত্র ও মাদক পাওয়া গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ডিসি (মিডিয়া) মো. ওয়ালিদ হোসেন জানান, ইরফান সেলিমের দুই মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যে অস্ত্র ও মাদক মামলা ছিল তা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অস্ত্র ও মাদক তার সহযোগীর কাছে পাওয়া গেছে। সেগুলো আদালতে জমা দেওয়া হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকবাজার থানার পরিদর্শক (অপারেশন্স) মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, ইরফানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকের মামলার তদন্ত করেছে লালবাগ থানা পুলিশ। তদন্ত করে যা পেয়েছি, তা উল্লেখ করে প্রতিবেদন দিয়েছি।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, ইরফানের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘মিসটেক অব ফ্যাক্ট।’
প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে হাজী মো. সেলিমের ‘সংসদ সদস্য’ লেখা সরকারি গাড়ি থেকে নেমে নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর ও গালিগালাজ করা হয়। পথচারীর ধারণ করা ভিডিওটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। পুলিশ হাজী সেলিমের গাড়িচালক মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার ও গাড়িটি জব্দ করে। পরদিন এ ঘটনায় ইরফানসহ আরও চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের দু-তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খান।
এরপর ২৬ অক্টোবর চকবাজারের দেবীদাস লেনে হাজী সেলিমের বাসায় দিনভর অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটির ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদকে হেফাজতে নেয়। বাসায় অবৈধভাবে মদ ও ওয়াকিটকি রাখার দায়ে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত তাদের দুজনকে এক বছর করে কারাদন্ড দেয়। পরে মাদক ও অস্ত্র আইনে তাদের বিরুদ্ধে দুটি করে মোট চারটি মামলা করে র্যাব। যার দুই মাস পর অস্ত্র ও মাদক মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিল পুলিশ।