ঢাকা ০৫:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

স্ত্রীর নূপুর বন্ধক থেকে ছাড়াতেই অটোরিকশা চালকে হত্যা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আমবাগান এলাকায় অটোরিকশা চালক দুলাল মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে অটো ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাতে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন-আলমগীর হোসেন, বাতেন মিয়া, লিটন মিয়া ও শুক্কর আলী। তারা সবাই ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

এদের মধ্যে গ্রেফতার আলমগীর তার স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, স্ত্রীর নূপুর বন্ধক থেকে ছাড়াতেই অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ নভেম্বর রাতে নিহত দুলাল মিয়ার স্ত্রী জহুরা খাতুন অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর গত ২৭ নভেম্বর রাতে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলমগীর হোসেন, বাতেন মিয়া, লিটন মিয়া ও শুক্কর আলীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার (২৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে গ্রেফতার আলমগীর হোসেন, বাতেন মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা অটোরিকশা চালক দুলাল মিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

পরে তাদের আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তবে গ্রেফতার লিটন মিয়া ও শুক্কুর আলী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আলমগীর ও বাতেন পূর্ব পরিচিত। দুজনই একসঙ্গে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ ও নেশা করতেন। নেশার টাকা জোগাড় করতেই আলমগীর তার স্ত্রীর পায়ের নূপুর সাত হাজার টাকায় বন্ধক দেন।

পরে আলমগীর বন্ধক ছাড়াতে পারেননি। স্ত্রীর নূপুর বন্ধক থেকে ছাড়াতেই আলমগীর ও বাতেন অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন।

এই পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতেই ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে মাসকান্দা থেকে যাত্রীবেশে কয়েকজন দুলালকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আমবাগান এলাকায় ভাড়ায় নিয়ে যান।’

পরে দুলাল মিয়া আমবাগান এলাকায় যাওয়া মাত্রই আগে থেকে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাতেন তার কাছে থাকা চিকন রশি দিয়ে দুলালের গলায় পেঁচিয়ে ধরেন। এ সময় আলমগীরের হাতে থাকা চাকু দিয়ে দুলালের পিঠে আঘাত করেন এবং রিকশা থেকে তাকে ফেলে দেন। পরে তারা রিকশা ছিনিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমবাগান এলাকার বাসিন্দারা দুলাল মিয়াকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে স্বীকার করা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই রশি, চাকু ও ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) এলাকার আমবাগান এলাকায় চালক দুলাল মিয়াকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করে করে পালিয়ে যান ছিনতাইকারীরা।

ট্যাগস

স্ত্রীর নূপুর বন্ধক থেকে ছাড়াতেই অটোরিকশা চালকে হত্যা

আপডেট সময় ০৪:০৮:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ নভেম্বর ২০২০

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) আমবাগান এলাকায় অটোরিকশা চালক দুলাল মিয়াকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে অটো ছিনতাইয়ের ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাতে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলেন-আলমগীর হোসেন, বাতেন মিয়া, লিটন মিয়া ও শুক্কর আলী। তারা সবাই ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।

এদের মধ্যে গ্রেফতার আলমগীর তার স্বীকারোক্তিতে জানিয়েছেন, স্ত্রীর নূপুর বন্ধক থেকে ছাড়াতেই অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) ফারুক হোসেন বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২৬ নভেম্বর রাতে নিহত দুলাল মিয়ার স্ত্রী জহুরা খাতুন অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার পর গত ২৭ নভেম্বর রাতে ময়মনসিংহ নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আলমগীর হোসেন, বাতেন মিয়া, লিটন মিয়া ও শুক্কর আলীসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘শনিবার (২৮ নভেম্বর) রাত ৯টার দিকে গ্রেফতার আলমগীর হোসেন, বাতেন মিয়া আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তারা অটোরিকশা চালক দুলাল মিয়াকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

পরে তাদের আদালতের নির্দেশে জেলহাজতে পাঠানো হয়। তবে গ্রেফতার লিটন মিয়া ও শুক্কুর আলী ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার না করায় তাদের রিমান্ড চাওয়া হবে।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আলমগীর ও বাতেন পূর্ব পরিচিত। দুজনই একসঙ্গে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজ ও নেশা করতেন। নেশার টাকা জোগাড় করতেই আলমগীর তার স্ত্রীর পায়ের নূপুর সাত হাজার টাকায় বন্ধক দেন।

পরে আলমগীর বন্ধক ছাড়াতে পারেননি। স্ত্রীর নূপুর বন্ধক থেকে ছাড়াতেই আলমগীর ও বাতেন অটো ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন।

এই পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতেই ঘটনার দিন রাত আটটার দিকে মাসকান্দা থেকে যাত্রীবেশে কয়েকজন দুলালকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আমবাগান এলাকায় ভাড়ায় নিয়ে যান।’

পরে দুলাল মিয়া আমবাগান এলাকায় যাওয়া মাত্রই আগে থেকে পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বাতেন তার কাছে থাকা চিকন রশি দিয়ে দুলালের গলায় পেঁচিয়ে ধরেন। এ সময় আলমগীরের হাতে থাকা চাকু দিয়ে দুলালের পিঠে আঘাত করেন এবং রিকশা থেকে তাকে ফেলে দেন। পরে তারা রিকশা ছিনিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমবাগান এলাকার বাসিন্দারা দুলাল মিয়াকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে স্বীকার করা প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই রশি, চাকু ও ছিনতাই হওয়া অটোরিকশা উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

প্রসঙ্গত, বুধবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) এলাকার আমবাগান এলাকায় চালক দুলাল মিয়াকে হত্যা করে অটোরিকশা ছিনতাই করে করে পালিয়ে যান ছিনতাইকারীরা।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471