ঢাকা ১০:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড Logo ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ Logo ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৮০ Logo পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব Logo নওগাঁ ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে মারধর Logo পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা Logo ৫ বছর পর দেশে এসেছেন শাবানা Logo নুরাল পাগলের কবর ভাঙচুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৫ নেতা গ্রেপ্তার Logo মার্কিন বাণিজ্যে শুল্ক ছাড় পাচ্ছে মিত্র দেশগুলো, ট্রাম্পের নতুন আদেশ Logo বরগুনায় নিজ বসতঘর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নিয়মাবলী

স্বাস্থ্য ডেস্কঃ  স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিদেশ থেকে যারা দেশে ফিরছেন, তাদের ‘হোম কোয়ারেন্টিন’-এ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। অনেকে এই পরামর্শ না মানায় সম্মুখীন হচ্ছেন জরিমানার। কিন্তু আপনি কী জানেন যে, কীভাবে থাকতে হয় হোম কোয়ারেন্টিনে?

নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটার ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত হলে প্রথমে জ্বর, কাশি, হাঁচি, গলা ব্যথা দেখা দেবে। এরপর শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে।

বিদেশফেরত কেউ যদি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে থাকেন, তাহলে তো এখনই উপসর্গ দেখা দেবে না। কিন্তু কয়েকদিন পর থেকে যখন লক্ষণগুলো স্পষ্ট হতে শুরু করবে, ততদিনে আপনার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যসহ আশেপাশের অনেক মানুষের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে ঝুঁকির সৃষ্টি হবে। এই ঝুঁকি এড়ানোর জন্যই চিকিৎসকরা তাকে আলাদা করে রেখে পর্যবেক্ষণ করার কথা বলছেন। আর এই আলাদা করে রাখাকেই বলা হয় কোয়ারেন্টিন।

নিজের বাসায় আলাদা করে রাখার প্রক্রিয়াকেই বলা হয় হোম কোয়ারেন্টিন। আর যাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় আলাদা করে রাখা হয়েছে, সেটাকে বলা হচ্ছে ‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন’। যেমন- আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারেন্টিন।

হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের একটি নির্দেশনা রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেওয়া ছাড়া কোনোভাবে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। বাড়ির বাইরের সকল কাজ, স্কুল, কলেজ অথবা জনসমাগম থেকে বিরত থাকতে হবে। এটিই হচ্ছে কোয়ারেন্টিনের প্রথম ও অত্যাবশ্যকীয় শর্ত।

আইইডিসিআর জানিয়েছে, চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে একেক জনের কোয়ারেন্টিনের সময় একেক রকম হতে পারে। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আপাতত ১৪ দিন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে।

যেভাবে ঘরে থাকতে হবেঃ

– পরিবারের সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন ঘরে থাকতে হবে। আলাদা ঘরে থাকা সম্ভব না হলে অন্যদের থেকে ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে।

– আলাদা বিছানায় ঘুমাতে হবে।

– অন্যদের সঙ্গে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে হবে এবং ওই স্থানগুলোর জানালা খুলে দিয়ে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। যদি আলাদা গোসলখানা বা টয়লেট ব্যবহার করা সম্ভব হয়, তাহলে আলাদা ব্যবহার করুন।

– শিশুদের কাছে যাওয়ার সময় হাত ভালোভাবে ধুতে হবে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আর যে সকল মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তারা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন।

– পোষা প্রাণী সঙ্গে রাখা যাবে না।

কীভাবে ব্যবহার করবেন মাস্কঃ

– একই ঘরে বাড়ির অন্যান্যদের সঙ্গে অবস্থান করার সময়, বিশেষ করে ১ মিটারের মধ্যে আসার সময় কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

– মাস্ক পরিহিত অবস্থায় হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে।

– বাড়ি থেকে যদি বিশেষ কোনো কারণে বের হতে হয়, সেক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

– মাস্কের সঙ্গে থুতু, সর্দি, কাশি বা বমি লেগে থাকলে অবিলম্বে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

– ব্যবহৃত মাস্কগুলো একটি ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলতে হবে এবং ভালোভাবে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

অত্যাবশ্যকীয় কিছু কাজঃ

– কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।

– সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকিয়ে নিতে হবে। যদি টিস্যু না থাকে তাহলে নির্দিষ্ট গামছা বা তোয়ালে হাত মোছার জন্য ব্যবহার করতে হবে। ভিজে গেলে বদলে ফেলতে হবে যাতে আর কেউ তা ব্যবহার করতে না পারে।

– অপরিষ্কার হাতে নাক, মুখ ও চোখ ধরা যাবে না।

– কাশি ও হাঁচির সময় মেডিকেল মাস্ক, কাপড়ের মাস্ক, টিস্যু পেপার বা বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে এবং ২০ সেকেন্ডের নিয়ম মেনে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।

– ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী কারও সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না এবং সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় যা যা করতে পারেনঃ

– পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।

– কোনো শিশুকে কোয়ারেন্টিনে রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলার সামগ্রী রাখুন এবং খেলনাগুলো ভালো করে জীবাণুমুক্ত করুন।

– বড় কোনো অসুবিধা না থাকলে বাসায় বসে অফিসের কাজ করতে পারেন।

– দৈনন্দিন রুটিন মেনে চলুন।

– কোয়ারেন্টিনের নিয়মের সঙ্গে পরিপন্থী নয় এমন যে কোনো বিনোদনমূলক কাজ (যেমন- বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা) করতে পারেন।

ট্যাগস

নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড

হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নিয়মাবলী

আপডেট সময় ০৮:২২:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ মার্চ ২০২০

স্বাস্থ্য ডেস্কঃ  স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বিদেশ থেকে যারা দেশে ফিরছেন, তাদের ‘হোম কোয়ারেন্টিন’-এ থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। অনেকে এই পরামর্শ না মানায় সম্মুখীন হচ্ছেন জরিমানার। কিন্তু আপনি কী জানেন যে, কীভাবে থাকতে হয় হোম কোয়ারেন্টিনে?

নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটার ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দিতে পারে। আক্রান্ত হলে প্রথমে জ্বর, কাশি, হাঁচি, গলা ব্যথা দেখা দেবে। এরপর শ্বাসকষ্টও দেখা দিতে পারে।

বিদেশফেরত কেউ যদি এই ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে থাকেন, তাহলে তো এখনই উপসর্গ দেখা দেবে না। কিন্তু কয়েকদিন পর থেকে যখন লক্ষণগুলো স্পষ্ট হতে শুরু করবে, ততদিনে আপনার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যসহ আশেপাশের অনেক মানুষের মধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে ঝুঁকির সৃষ্টি হবে। এই ঝুঁকি এড়ানোর জন্যই চিকিৎসকরা তাকে আলাদা করে রেখে পর্যবেক্ষণ করার কথা বলছেন। আর এই আলাদা করে রাখাকেই বলা হয় কোয়ারেন্টিন।

নিজের বাসায় আলাদা করে রাখার প্রক্রিয়াকেই বলা হয় হোম কোয়ারেন্টিন। আর যাদের সরকারি ব্যবস্থাপনায় আলাদা করে রাখা হয়েছে, সেটাকে বলা হচ্ছে ‘প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন’। যেমন- আশকোনা হজ ক্যাম্পের কোয়ারেন্টিন।

হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের একটি নির্দেশনা রয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নেওয়া ছাড়া কোনোভাবে বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। বাড়ির বাইরের সকল কাজ, স্কুল, কলেজ অথবা জনসমাগম থেকে বিরত থাকতে হবে। এটিই হচ্ছে কোয়ারেন্টিনের প্রথম ও অত্যাবশ্যকীয় শর্ত।

আইইডিসিআর জানিয়েছে, চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে একেক জনের কোয়ারেন্টিনের সময় একেক রকম হতে পারে। এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে আপাতত ১৪ দিন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে রাখা হচ্ছে।

যেভাবে ঘরে থাকতে হবেঃ

– পরিবারের সদস্যদের থেকে আলাদাভাবে আলো বাতাসের সুব্যবস্থা সম্পন্ন ঘরে থাকতে হবে। আলাদা ঘরে থাকা সম্ভব না হলে অন্যদের থেকে ১ মিটার বা ৩ ফুট দূরে থাকতে হবে।

– আলাদা বিছানায় ঘুমাতে হবে।

– অন্যদের সঙ্গে ব্যবহার করতে হয় এমন স্থানের সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে হবে এবং ওই স্থানগুলোর জানালা খুলে দিয়ে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা করতে হবে। যদি আলাদা গোসলখানা বা টয়লেট ব্যবহার করা সম্ভব হয়, তাহলে আলাদা ব্যবহার করুন।

– শিশুদের কাছে যাওয়ার সময় হাত ভালোভাবে ধুতে হবে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে। আর যে সকল মায়েরা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান, তারা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াবেন।

– পোষা প্রাণী সঙ্গে রাখা যাবে না।

কীভাবে ব্যবহার করবেন মাস্কঃ

– একই ঘরে বাড়ির অন্যান্যদের সঙ্গে অবস্থান করার সময়, বিশেষ করে ১ মিটারের মধ্যে আসার সময় কোয়ারেন্টিনে থাকা ব্যক্তির মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

– মাস্ক পরিহিত অবস্থায় হাত দিয়ে ধরা থেকে বিরত থাকতে হবে।

– বাড়ি থেকে যদি বিশেষ কোনো কারণে বের হতে হয়, সেক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

– মাস্কের সঙ্গে থুতু, সর্দি, কাশি বা বমি লেগে থাকলে অবিলম্বে নতুন মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।

– ব্যবহৃত মাস্কগুলো একটি ঢাকনাযুক্ত ময়লার পাত্রে ফেলতে হবে এবং ভালোভাবে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিতে হবে।

অত্যাবশ্যকীয় কিছু কাজঃ

– কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাবান-পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।

– সাবান-পানি ব্যবহারের পর টিস্যু দিয়ে হাত শুকিয়ে নিতে হবে। যদি টিস্যু না থাকে তাহলে নির্দিষ্ট গামছা বা তোয়ালে হাত মোছার জন্য ব্যবহার করতে হবে। ভিজে গেলে বদলে ফেলতে হবে যাতে আর কেউ তা ব্যবহার করতে না পারে।

– অপরিষ্কার হাতে নাক, মুখ ও চোখ ধরা যাবে না।

– কাশি ও হাঁচির সময় মেডিকেল মাস্ক, কাপড়ের মাস্ক, টিস্যু পেপার বা বাহুর ভাঁজে মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে হবে এবং ২০ সেকেন্ডের নিয়ম মেনে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে।

– ব্যক্তিগত ব্যবহার্য সামগ্রী কারও সঙ্গে শেয়ার করা যাবে না এবং সাবান-পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করতে হবে।

কোয়ারেন্টিনে থাকা অবস্থায় যা যা করতে পারেনঃ

– পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে পারেন।

– কোনো শিশুকে কোয়ারেন্টিনে রাখতে হলে পর্যাপ্ত পরিমাণে খেলার সামগ্রী রাখুন এবং খেলনাগুলো ভালো করে জীবাণুমুক্ত করুন।

– বড় কোনো অসুবিধা না থাকলে বাসায় বসে অফিসের কাজ করতে পারেন।

– দৈনন্দিন রুটিন মেনে চলুন।

– কোয়ারেন্টিনের নিয়মের সঙ্গে পরিপন্থী নয় এমন যে কোনো বিনোদনমূলক কাজ (যেমন- বই পড়া, গান শোনা, সিনেমা দেখা) করতে পারেন।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471