আত্রাই প্রতিনিধি: নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া-পাঁচুপুর ভূমি অফিসের ‘ভূমি উন্নয়ন কর’ পরিশোধের রশিদ বই (দাখিলা) থেকে কার্বন কপিসহ অব্যবহৃত ৪টি মূল পাতাসহ ৮টি পাতা গায়েব করার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর দাখিলা বইয়ের ওই পাতাগুলো বাতিল করে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে জেলা প্রশাসন। তবে রশিদ বই থেকে কিভাবে পাতাগুলো গায়েব হলো তা নিশ্চিত করে জানা যায়নি।
অভিযোগ উঠেছে দায়িত্বরত কর্মকর্তা অসৎ উদ্দেশ্যে পাতাগুলো গায়েব করেছেন। এই ঘটনায় অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া-পাঁচুপুর ভূমি অফিসে সম্প্রতি ‘ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের ৫৬/২০২১-২২ নম্বর বহি (দাখিলা) থেকে অব্যবহৃত মূল ৪টি পাতাসহ মোট ৮টি পাতা গায়েব হয়। দাখিলা বইয়ে ২৩৮৯০১ থেকে ২৩৯০০০ পর্যন্ত মোট দুইশ’টি পাতা ছিল।
এর মধ্যে ২৩৮৮৯৭ থেকে ২৩৯০০০ নম্বর পর্যন্ত পাতাগুলো কার্বন কপিসহ গায়েব হয়। পরে হারিয়ে গেছে মর্মে থানায় একটি সাধারন ডাইরী (জিডি) করে বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করা হয়। এই অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে আত্রাই থানার পরিদর্শক (ওসি) আবুল কালাম আজাদ জানান, ভূমি অফিসে কর্মরত ইউনিয়ন ভূমি উপসহকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেন নিজেই ২৩ আগস্ট তারিখে আত্রাই থানায় একটি সাধারণ ডাইরি (জিডি) করেছেন। জিডিতে দাখিলা বহি ও পাতাগুলোর নম্বর উল্লেখ করলেও কিভাবে হারিয়ে গেছে সে বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি জাকির হোসেন মন্তব্য করেন ওসি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেন দাবি করে বলেন, অফিস থেকেই দাখিলা পাতাগুলো চুরি হয়েছে। কে বা কাহারা চুরি করে নিয়ে গেছে।
চুরির ঘটনায় মামলা না করে থানায় জিডি করলেন কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন- ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার দেওয়া পরামর্শে জিডি করা হয়েছে।
এ দিকে ঘটনার কয়েকদিন পর আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. ইকতেখারুল ইসলাম নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মিল্টন চন্দ্র রায়ের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক হারুন-অর-রশীদকে ঘটনার বিষয়ে অবহিত করেন।
জানার পর জেলা প্রশাসক বিষয়টি গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর দাখিলার ওই পাতাগুলো বাতিল করে একটি বিজ্ঞপ্তি (স্মারক নম্বর ১৬৭২) জারি করেন। জারিকৃত বিজ্ঞপ্তিটি ভূমি মন্ত্রনালয়সহ সংশ্লিষ্ট সকল দফতরে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে অভিযুক্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেনকে দ্বায়িত্বে রেখেই ঘটনা তদন্ত করছেন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মিল্টন চন্দ্র রায় জানান, ইউনিয়ন ভূমি অফিসে ব্যবহৃত দাখিলা বহি বা দাখিলার পাতাগুলো অতিগুরুত্বপূর্ন। পাতাগুলো কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে গায়েব করা হয়েছে কিনা তা ক্ষতিয়ে দেখা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, আত্রাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ঘটনাটি তদন্ত করছেন। অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।