আনোয়ার হোসেন, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা ক্রমে বেড়েই চলেছে। হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত জেলা কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিন যাবত চলছে শীতের দাপট। সেই সাথে দেখা দিয়েছে ঘন কুয়াশা আর হিমেল ঠান্ডা হাওয়া।
বিকেল থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত প্রচন্ড শৈত্য প্রবাহে কাহিল এ জনপদের মানুষ। প্রতিদিনই ক্রমেই এ জেলার তাপমাত্রা কমা বাড়া করছে।
গত কয়েকদিন ধরে দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রা বিরাজ করে এ জেলায়। ফলে শিশু, বৃদ্ধ ও প্রতিবন্ধী লোকজন রয়েছে চরম বিপাকে।
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে কৃষি আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলার সর্বনিন্ম তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। তবে আরও কয়েকদিন তাপমাত্রা নিন্মগামী থাকতে পারে বলে জানান তিনি।
এদিকে, কনকনে শীতের হিমেল ঠান্ডায় জনজীবন কাহিল হয়ে পড়েছে। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছে। অতিরিক্ত ঠান্ডায় স্থবির হয়ে পড়েছে এ জেলার সবকিছু। হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়েছে চরাঞ্চল ও নদ-নদী তীরবর্তী এলাকায় হতদরিদ্র মানুষজন। বিশেষ করে কৃষি শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশী বিপাকে পড়েছে। কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে সময়মত কাজে বের হতে পারছেন না অনেক শ্রমিক।
এতে করে কিছুটা বিলম্বিত হয়ে পড়ছে বোরো আবাদ। কমে গেছে তাদের আয় রোজগারও।
গত সোমবার ও মঙ্গলবার দুপুরে হালকা সূর্যালোকে কিছুটা স্বস্তি মিললেও ঠান্ডার প্রকোপ কমেনি। অন্যদিকে, তাপমাত্রা কমতে থাকায় শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশ কিছু মানুষ। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বৃদ্ধ। গত কয়েকদিনে জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
অন্যদিকে, অতিরিক্ত শীত ও ঘন কুয়াশায় বেড়ে ওঠা আলু খেতে মারাত্বক ক্ষতির আশংকা করছেন আলু চাষে বিখ্যাত কুড়িগ্রামের কাঁঠালবাড়ী এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা।
কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের সবজি গ্রাম এলাকার কৃষক মকবুল মিয়া বলেন, গত কয়েকদিন যাবত এ জেলায় হিম পড়ছে। ফলে আমাদের আলু খেতগুলোর আগাছা কিছুটা দুর্বল হচ্ছে। তবে ওষুধ ও কীটনাশক ছিটিয়ে রক্ষা করতে হবে। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী কুয়াশা থাকলে মারাত্বক ভাবে আলুর ফলন বিপর্যয় ঘটবে বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত ফলন বিপর্যয়ের সম্ভাবনা নেই।