পঞ্চগড়ে দেড় বছর বয়সী ছেলের গলায় ছুরি ধরে এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকালে ওই ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পরে অভিযান চালিয়ে রাতেই তাদের বাড়ি থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— পঞ্চগড় সদর উপজেলার সদর ইউনিয়নের জগদল বাজার এলাকার জনি ইসলাম (২৭), বিপ্লব হোসেন (২৫), মকছেদুল ইসলাম (৩৩) ও সাতমেড়া ইউনিয়নের বদিনাজোত এলাকার সাদেকুল ইসলাম (২৮)।
পঞ্চগড় থানার ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, “শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে দ্রুত সদর উপজেলার সাড়ে তিন মাইল এলাকায় যাই। সেখান থেকে অচেতন অবস্থায় এক নারী এবং তার সঙ্গে থাকা একটি দেড় বছরের ছেলে শিশুকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।”
হাসপাতালে সাংবাদিকদের ওই নারী বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমার স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর বাবার বাড়ি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে কাজের সন্ধানে একটি ভাড়া বাড়িতে উঠি। শুক্রবার রাতে আমার ছেলেটা অসুস্থ হয়ে পড়ায় ওকে নিয়ে ইজিবাইকে করে বাবার বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। পথে আরেকটা ইজিবাইক আমাদের পেছন পেছন আসতে দেখি।’
রাত ১১টার দিকে পঞ্চগড়-জগদল সড়কের তিনমাইল এলাকায় পৌঁছালে পেছনে থাকা ইজিবাইক চালক তাদের থামিয়ে নামতে বলেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, ‘পেছনে যে গাড়িটা আমাদের ফলো করছিল, তার চালক পরিচিত ছিল। সে গাড়ি থেকে নামতে বলে। নামার সঙ্গে সঙ্গেই গাড়িতে থাকা কয়েকজন আমার সন্তানসহ কাছের একটি চা-বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে ধর্ষণ করা হয়।এরই মধ্যে দুই চালক ইজিবাইক নিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।
ওই নারী বলেন, ‘সাহায্যের জন্য চিৎকার করার চেষ্টা করলে ওরা আমার বাচ্চার গলায় ছুরি ধরে আমাকে চুপ থাকতে বাধ্য করে।
‘ধর্ষণের ঘটনায় ছয়জনের মধ্যে তিনি চারজনকে চিনতে পেরেছেন বলে জানান।
ধর্ষণের শিকার ওই নারীর বড় ভাই বলেন, “রাত দেড়টায় পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখি বোনের শরীরে অনেক রক্ত। অজ্ঞান অবস্থায় ছিল। আমার বোনের সঙ্গে যারা এমন অমানবিক কাজ করেছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুল কাশেম বলেন, “শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার সময় পুলিশ অচেতন অবস্থায় এক নারীকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। প্রাথমিক পরীক্ষায় শারীরিক নির্যাতনের আলামত পাওয়া গেছে। আপাতত তিনি স্থিতিশীল রয়েছেন।”
ওসি আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, “ওই নারী চারজনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও দুজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।”
গ্রেপ্তারকৃত চার জনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।