ঢাকা ০৯:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :

ইউএনওকে কুপিয়ে রক্তাক্ত, ঘটনার বর্ণনা দিলেন মুক্তিযোদ্ধা বাবা

ইউএনও ওয়াহিদার বাবা ওমর আলী

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম (৩৫) ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের সময় মুখোশ পরা ছিলেন হামলাকারীরা। এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ (৬৫) এমনটি জানিয়েছেন।

তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রমেক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুুুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আনা হয়েছে।

ওমর আলী শেখ বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা-সাড়ে ৩টার দিকে তাহাজ্জুদ নামাজ পরে কেবল শুয়েছিলাম। ঘুম ঘুম লাগছিল। এমন সময় মেয়ের চিৎকার শুনে ওপর তলায় যাই।

মেয়ে তখন আমাকে ডাকছিল আর বলছিল, ঘরে কেউ ঢুকেছে বাবা, দ্রুত আসো। আমি ওপর তলায় গিয়ে দেখি মুখোশধারী এক ব্যক্তি মেয়ের কাছে চাবি চাচ্ছিল। টাকা-পয়সা ও গহনা কোথায় তা জানতে চাচ্ছিল বারবার।

তথ্য না দিলে আমার নাতিকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছিল ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে আমি তাকে ধরে ফেলি। এ সময় তার সঙ্গে আমার ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন হাতুড়ি দিয়ে আমার ঘাড়ে আঘাত করলে মেঝেতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর কি হয়েছে আমি বলতে পারি না।

আগের কোনো শত্রুতা বা অন্য কোনো কারণে এ হামলা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ বলেন, মুখোশধারী ব্যক্তি শুধু চাবি আর টাকা-পয়সা কোথায় তা জানতে চেয়েছিল।

তার মুখোশ পরা ছিল বলে আমি তাকে চিনতে পারিনি। পরে শুনেছি আমার মেয়েকে কুপিয়ে জখম করা হয়। কেন এ হামলা হয়েছে তা আমি বলতে পারছি না। তবে বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে বের হয়ে যায় ওই ব্যক্তি। তবে বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে ছিল।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে ঘটনার তদন্ত করছি আমরা। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।

এ বিষয়ে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব বলেন, এখনও হামলার কারণ জানা যায়নি। ইউএনওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছি আমরা। তদন্ত শেষে জানা যাবে কারা এ হামলা করেছে এবং ঘটনায় কয়জন জড়িত।

ওয়াহিদা খানমের স্বামী মেজবাউল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত। আহত স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।

তার বাড়ি রাজশাহীতে। ওয়াহিদা খানমের বাবার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায়। তাদের চার বছরের এক ছেলে রয়েছে। ওমর আলী শেখ প্রায়ই তার মেয়ের কর্মস্থল ঘোড়াঘাট বেড়াতে আসেন। কয়েক দিন ধরে মেয়ের কাছেই থাকছেন তিনি।

বুধবার দিবাগত রাত ৩টা-সাড়ে ৩টার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা।

আহত ইউএনও রংপুর ডক্টরস ক্লিনিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ট্যাগস

বনি আমার প্রেমিক ছিল না,ওর সঙ্গে আর সিনেমা করব না: ঋত্বিকা সেন

ইউএনওকে কুপিয়ে রক্তাক্ত, ঘটনার বর্ণনা দিলেন মুক্তিযোদ্ধা বাবা

আপডেট সময় ০৮:৩৮:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২০

দিনাজপুর প্রতিনিধিঃ দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম (৩৫) ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের সময় মুখোশ পরা ছিলেন হামলাকারীরা। এ ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ (৬৫) এমনটি জানিয়েছেন।

তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রমেক) ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের নিউ সার্জারি বিভাগে চিকিৎসাধীন। ইউএনও ওয়াহিদা খানমকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুুুর থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আনা হয়েছে।

ওমর আলী শেখ বলেন, বুধবার দিবাগত রাত ৩টা-সাড়ে ৩টার দিকে তাহাজ্জুদ নামাজ পরে কেবল শুয়েছিলাম। ঘুম ঘুম লাগছিল। এমন সময় মেয়ের চিৎকার শুনে ওপর তলায় যাই।

মেয়ে তখন আমাকে ডাকছিল আর বলছিল, ঘরে কেউ ঢুকেছে বাবা, দ্রুত আসো। আমি ওপর তলায় গিয়ে দেখি মুখোশধারী এক ব্যক্তি মেয়ের কাছে চাবি চাচ্ছিল। টাকা-পয়সা ও গহনা কোথায় তা জানতে চাচ্ছিল বারবার।

তথ্য না দিলে আমার নাতিকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিচ্ছিল ওই ব্যক্তি। একপর্যায়ে আমি তাকে ধরে ফেলি। এ সময় তার সঙ্গে আমার ধস্তাধস্তি শুরু হয়। তখন হাতুড়ি দিয়ে আমার ঘাড়ে আঘাত করলে মেঝেতে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যাই। এরপর কি হয়েছে আমি বলতে পারি না।

আগের কোনো শত্রুতা বা অন্য কোনো কারণে এ হামলা হয়েছে কি-না জানতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা ওমর আলী শেখ বলেন, মুখোশধারী ব্যক্তি শুধু চাবি আর টাকা-পয়সা কোথায় তা জানতে চেয়েছিল।

তার মুখোশ পরা ছিল বলে আমি তাকে চিনতে পারিনি। পরে শুনেছি আমার মেয়েকে কুপিয়ে জখম করা হয়। কেন এ হামলা হয়েছে তা আমি বলতে পারছি না। তবে বাথরুমের ভেন্টিলেটর ভেঙে বের হয়ে যায় ওই ব্যক্তি। তবে বাইরে কেউ দাঁড়িয়ে ছিল।

এ বিষয়ে র‍্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে ঘটনার তদন্ত করছি আমরা। এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।

এ বিষয়ে রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার আব্দুল ওয়াহাব বলেন, এখনও হামলার কারণ জানা যায়নি। ইউএনওকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠিয়েছি আমরা। তদন্ত শেষে জানা যাবে কারা এ হামলা করেছে এবং ঘটনায় কয়জন জড়িত।

ওয়াহিদা খানমের স্বামী মেজবাউল হোসেন রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে কর্মরত। আহত স্ত্রীকে নিয়ে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন।

তার বাড়ি রাজশাহীতে। ওয়াহিদা খানমের বাবার বাড়ি নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায়। তাদের চার বছরের এক ছেলে রয়েছে। ওমর আলী শেখ প্রায়ই তার মেয়ের কর্মস্থল ঘোড়াঘাট বেড়াতে আসেন। কয়েক দিন ধরে মেয়ের কাছেই থাকছেন তিনি।

বুধবার দিবাগত রাত ৩টা-সাড়ে ৩টার দিকে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে দুর্বৃত্তরা।

আহত ইউএনও রংপুর ডক্টরস ক্লিনিকে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় পাঠানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। তার বাবা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।