আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই কোথাও দেখা যাচ্ছিল না উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনকে। তারপর থেকেই নানা গুঞ্জন উড়ে বেড়াচ্ছিল।
কখনও শোনা গেছে তিনি মারা গেছেন, আবার কেউ বলেছে করোনা থেকে বাঁচতে নিরাপদে অবস্থান করছেন কিম।গত ১১ এপ্রিলের পর থেকে কিমকে আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।
এমনকি উত্তর কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং দেশটির প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সাংয়ের জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানেও লাপাত্তা ছিলেন কিম। এরপরেই বিশ্বের নজরে আসে বিষয়টি।
অবশেষে সব গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়ে প্রকাশ্যে এলেন কিম। সম্প্রতি উত্তর কোরিয়ার একটি সার কারখানার উদ্বোধন করতে দেখা গেছে এই শীর্ষ নেতাকে। সে সময় তার সঙ্গে রাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের পাশাপাশি বোন কিম ইয়ো-জংও ছিলেন।
এদিকে, কিমের প্রকাশ্যে আসার ঘটনায় নিজের খুশি গোপন করতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিম ফিরে আসায় বেশ খুশি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিম ফিতা কেটে সার কারখানার উদ্বোধন করেছেন এমন কিছু ছবি পোস্ট করেছেন ট্রাম্প। সেখানে ট্রাম্প লিখেছেন, তিনি (কিম জং উন) ফিরে এসেছেন এবং ভালো আছেন, এটা দেখে আমি খুব আনন্দিত।
রোববার দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা মুন চুং ইন সিএনএনকে বলেন, উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতার স্বাস্থ্য নিয়ে জল্পনা থাকলেও আসলে তিনি ভালো আছেন, বেঁচে আছেন। ওই উপদেষ্টা বলেন, গত ১৩ এপ্রিল থেকে উত্তর কোরিয়ার পূর্ব উপকূলীয় শহর ওনসানে অবস্থান করছেন কিম।
উত্তর কোরিয়া তাদের সর্বোচ্চ নেতার বিষয়ে কোনো তথ্য বর্হিবিশ্বের কাছে প্রকাশ করে না। এসব বিষয় অনেকটাই গোপনীয়। সেকারণে কিমের হঠাৎ করে উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা নিয়ে নানা ধরনের জল্পনা তৈরি হয়েছিল।
তিনি প্রকাশ্যে না আসা পর্যন্ত প্রকৃত ঘটনা জানা সম্ভব হয়নি।এদিকে রোববার সকালে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি গার্ড পোস্টে দুই কোরিয়ার মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জয়েন্ট চীফ অব স্টাফ এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার সীমান্তের একটি গার্ড পোস্টে স্থানীয় সময় সকাল ৭টা ৪১ মিনিটে উত্তর কোরিয়া থেকে কয়েক দফা গুলি চালানো হয়।
উত্তর কোরিয়ার হামলার জবাবে দক্ষিণ কোরিয়াও গুলি চালিয়েছে। তবে এই গোলাগুলির ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি।
এই গোলাগুলির ঘটনাকে কেন্দ্র করে, এশিয়ান ইন্সটিটিউট ফর পলিসি স্টাডিসের ভাইস প্রেসিডেন্ট চই ক্যাং বলছেন, গ্রে এরিয়া হিসেবে পরিচিত সীমান্তের ওই অঞ্চলে গোলাগুলির ঘটনা এটা প্রমাণ করে যে, কিম জং উন এখনও উত্তর কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রধান হিসেবে আছেন।
তিনি বলেন, গতকাল কিম দেখাতে চেয়েছেন যে, তিনি পুরোপুরি সুস্থ আছেন। আর আজ তিনি এটা দেখাতে চাচ্ছেন যে, সামরিক বাহিনীর ওপর তার পুরো নিয়ন্ত্রণ আছে। টিটিএন/পিআর