ক্রীড়া ডেস্কঃ স্লেজিংটা করেছিলেন অ্যান্ড্রু ফ্লিনটফ। কিন্তু কে জানতো সেটাই হিতে বিপরীত হবে ইংল্যান্ডের জন্য! ফ্রেডি’র গালির প্রতিশোধটা স্টুয়ার্ট ব্রডের উপর নিয়েছিলেন যুবরাজ সিং। ৬ বলে ৬ ছক্কার এক বিধ্বংসী ইনিংসও দেখেছিল ক্রিকেট বিশ্ব।
২০০৭ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ডারবানে মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-ইংল্যান্ড। শুরুতে ব্যাটিংয়ে নেমে ইংলিশ বোলারদেরকে দাপট দেখিয়ে ফিফটি তুলে নেন দুই ওপেনার গৌতম গম্ভীর ও বীরেন্দর শেওয়াগ। কিন্তু বড় পরীক্ষাটা নেন পাঁচে নামা যুবরাজ।
ব্রডের করা ইনিংসের ১৮তম ওভারে স্ট্রাইকে এসে ৬ বলে ৬ ছক্কা হাঁকিয়ে সবাইকে অবাক করে দেন ভারতীয় অলরাউন্ডার। টি-টোয়েন্টির ইতিহাসে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৬ বলে ৬ ছক্কা মারার রেকর্ড গড়েন যুবরাজ। মাত্র ১২ বলে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ডটাও নিজের করে নেন তিনি।
যুবরাজের এতসব করার পেছনে কারণ ছিল একটাই। ফ্লিনটফের স্লেজিংয়ের প্রতিশোধ নেওয়া। যা তাকে অনুপ্রাণিত করেছিল ৫ বলে ৬ ছক্কা মারতে। কিন্তু খোপটা গিয়ে পড়ে ব্রডের উপর।
যুবরাজ ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন গত বছর। এক বছর পর সেইদিনের কথা স্মরণ করেছেন ৩৮ বছর বয়সী সাবেক অলরাউন্ডার। রেডিওতে ‘দোসরা পোডকাস্ট’ নামের এক অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দেওয়ার সময় এসব ‘গোপন কথা’ সামনে আনেন যুবরাজ।
সেদিনের কথা স্মরণ করে যুবি বলেন, ‘ফ্রেডি ছিল আসলে ফ্রেডি। সে কিছু বলছিল এবং আমিও তার প্রত্যুত্তর দিচ্ছিলাম।’
দু’জনের এই বাকযুদ্ধের ফলই টি-টোয়েন্টি ইতিহাসের এক ওভারে ছয় ছক্কা। যুবরাজ বলেন, ‘ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ছয় বলে ছক্কা মারতে পেরে আমি খুশি হয়েছিলাম কারণ এর কয়েক সপ্তাহ আগে আমি ওয়ানডেতে দিমিত্রি মাসকারেনহাসকে পাঁচটি ছক্কা মেরেছিলাম।
যখন আমি ছয় বলে ছক্কা মারলাম তখন ভালোভাবে ফ্রেডির দিকে তাকালাম এবং দ্বিতীয়বার তাকালাম দিমিত্রির দিকে। সে আমাকে একটা হাসি উপহার দিয়েছিল।’
কিন্তু স্টুয়ার্ট ব্রডের কি হলো? যার উপর দিয়ে বিশাল এক ঝড় গিয়েছিল। ব্রড অবশ্য কিছু বলেননি। বলেছিলেন তার বাবা ক্রিস ব্রড। যিনি কিনা ঐ ম্যাচের ম্যাচ রেফারি ছিলেন।
পরেরদিন যুবরাজের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর ক্রিস ব্রড বলেছিলেন, ‘তুমি আমার ছেলের ক্যারিয়ার প্রায় শেষ করে দিয়েছো। এখন এ জার্সিতে তার জন্য একটা অটোগ্রাফ দাও।’
সেই ম্যাচে যুবরাজ ১৬ বলে ৩ চার ও ৭ ছক্কায় ৫৪ রানে আউট হন পল কলিংউডের বলে। ভারত জিতেছিল ১৮ রানে। টিম ইন্ডিয়ার দেওয়া ৪ উইকেটে ২১৮ রানের টার্গেটে ইংল্যান্ড ৬ উইকেট হারিয়ে করেছিল ২০০ রান।