ঢাকা ০৩:৪৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo যাত্রাবাড়ীতে ফের হাসনাত-সারজিসের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা Logo বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ‘মিয়ানমার নৌবাহিনীর গুলিতে’ বাংলাদেশি জেলে আহত Logo সাম্প্রদায়িক উসকানিতে পা না দিয়ে দেশবাসীকে সজাগ থাকাতে হবে: মামুনুল হক Logo ঝালকাঠিতে সম্পত্তি লিখে নিতে বাবাকে ৮ দিন তালাবদ্ধ করে রাখলেন মেয়েরা Logo চীন সরকারের আমন্ত্রণে, চীন সফরে গেলেন জামায়াত ও অন্যান্য দলের প্রতিনিধিরা Logo ১৫ বছর পর রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে লিভারপুলের জয় Logo ২০০ টাকার হিসাব দিতে না পারায় স্বামীর হাতে প্রাণ গেল স্ত্রীর Logo কর ফাঁকির ২ মামলা থেকে তারেক রহমানকে অব্যাহতি Logo এই ইসকন জঙ্গি, তারা স্বৈরাচারের সঙ্গী: হাসনাত আবদুল্লাহ Logo জটিলতা কাটিয়ে হিলি দিয়ে আসছে পেঁয়াজ

বগুড়ায় কোরআনে বর্ণিত ত্বীন ফলের পরীক্ষামূলক চাষ

বগুড়ায় কোরআনে বর্ণিত ত্বীন ফলের পরীক্ষামূলক চাষ

বগুড়া প্রতিনিধি:  বগুড়া জেলায় প্রথমবারের মতো ব্যক্তি উদ্যোগে শুরু হয়েছে মরুভূমির ত্বীন ফলের চাষ। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত এ ফলটি ঔষধি গুণসম্পন্ন এবং স্বাদে বেশ মিষ্টি। প্রথমবারের মতো ডুমুর আকৃতির ত্বীন গাছে ফল আসতে শুরু হওয়ায় দৃষ্টি কেড়েছে স্থানীয়দের।

শাজাহানপুরের আড়িয়া পালপাড়ায় সিঙ্গাপুর ফেরত যুবক সোয়েব সাদিক নবীন পরীক্ষা মূলকভাবে এই ত্বীন ফলের চাষ করেছেন। তার বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে ত্বীন ফল। দেশের চাষিদের মাঝে এর ফল ও চারা খুব অল্প মূল্যে বিক্রি করা তার লক্ষ্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে প্রায় দুই বিঘা জমিতে করা হয়েছে ত্বীন ফলেন চাষ। আর এ ত্বীন ফলের ফলন ভালো হয়েছে। এ ত্বীন ফলের বাগান পরিচর্যার জন্য রাখা হয়েছে ১ জন মালি ও ৪ জন শ্রমিক। নতুন বাগান হওয়ায় স্থানীয় অনেক মানুষই আগ্রহ নিয়ে ত্বীন ফলের এ বাগান দেখতে আসছেন।

বাগান দেখতে আসা বগুড়া শহরের লিটন রহমান জানান, আরব দেশের ফল এখন নিজ এলাকায় চাষাবাদ হচ্ছে। তাই ফলটি দেখার আগ্রহ নিয়ে ছুটে এসেছি।

বাগানের মালী জুয়েল জানান, ত্বীন গাছে কোনো রকম রাসায়নিক সার দেওয়া হয়নি। জৈব ও কম্পোজ সার মিশিয়ে গোড়ায় দিয়েছি। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো বড় হয়ে উঠেছে। এ সময়ে তেমন কোনো রোগবালাই দেখা যায়নি। রোপণকৃত গাছগুলোর মাটি বেলে ও দো-আঁশ মাটির সংমিশ্রণ হলেও এ আবহাওয়ার সঙ্গে এখন মানিয়ে নিয়েছে ত্বীন।

বাগাানের মালিক নবীনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিঙ্গাপুরে গিয়ে তুরস্কের এক যুবকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার। সেখানেই তিনি ত্বীন ফলের স্বাদ পেয়েছেন, পাশাপাশি চাষ সম্পর্কে অবগত হন। করোনা পরিস্থিতিতে দেশে ফিরে বসে না থেকে তিনি ফলবাগান করার কাজ শুরু করেন।

পরবর্তীতে তুরস্কের বন্ধুর মাধ্যমে সেখান থেকে আনা ছয় মাস বয়সী ৬০০ চারা রোপণ করেন প্রায় ২ বিঘা জমিতে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চারা রোপণের তিন মাসের মধ্যে ফল ধরেছে গাছগুলোতে।

বেলে দো-আঁশ মাটিতে জৈব ও ভার্মি কম্পোস্ট সার প্রয়োগে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো বেড়ে উঠছে। প্রতিটি পাতার গোড়ায় গোড়ায় সবুজ তিন ফল, যা পাকলে লাল, খয়েরি বা মেরুন রং ধারণ করবে।

এটি মূলত আরব, ইন্দোনেশিয়া, তুর্কি এবং থাইল্যান্ডে চাষাবাদ করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশেও ত্বীন ফলের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। ত্বীন ফল বাংলাদেশের কৃষি খাতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সফলতা বয়ে আনতে সক্ষম। কৃষক, বেকার ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই লাভজনক একটি বিনিয়োগ হতে পারে।

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম জানান, এ প্রথমবার বগুড়ায় বেসরকারিভাবে এক তরুণ পরীক্ষামূলকভাবে ত্বীন চাষ করেছেন। কোনো রকম রাসায়নিক কীটনাশক সার ছাড়াই এ ফলটি চাষ করা সম্ভব। এ ফলের ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক চাষে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবে বলেও জানান তিনি।

এখানে প্রথম চাষে আশানুরূপ ফলন হয়েছে। এখন বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন ও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। তবে ত্বীন গাছটির বীজ থেকে চারা উৎপাদনের হার কম হওয়ায় নির্ভরতা করতে হচ্ছে কাটিং বা কলম চারায়। যার কারণ হচ্ছে বীজের চারায় ফলন আসে কয়েক বছর পর। অন্যদিকে কলম চারায় ফল আসে মাত্র ৩ মাসে।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

যাত্রাবাড়ীতে ফের হাসনাত-সারজিসের গাড়িতে ট্রাকের ধাক্কা

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

বগুড়ায় কোরআনে বর্ণিত ত্বীন ফলের পরীক্ষামূলক চাষ

আপডেট সময় ০২:০০:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২১

বগুড়া প্রতিনিধি:  বগুড়া জেলায় প্রথমবারের মতো ব্যক্তি উদ্যোগে শুরু হয়েছে মরুভূমির ত্বীন ফলের চাষ। পবিত্র কোরআনে বর্ণিত এ ফলটি ঔষধি গুণসম্পন্ন এবং স্বাদে বেশ মিষ্টি। প্রথমবারের মতো ডুমুর আকৃতির ত্বীন গাছে ফল আসতে শুরু হওয়ায় দৃষ্টি কেড়েছে স্থানীয়দের।

শাজাহানপুরের আড়িয়া পালপাড়ায় সিঙ্গাপুর ফেরত যুবক সোয়েব সাদিক নবীন পরীক্ষা মূলকভাবে এই ত্বীন ফলের চাষ করেছেন। তার বাগানে এখন শোভা পাচ্ছে ত্বীন ফল। দেশের চাষিদের মাঝে এর ফল ও চারা খুব অল্প মূল্যে বিক্রি করা তার লক্ষ্য।

সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে প্রায় দুই বিঘা জমিতে করা হয়েছে ত্বীন ফলেন চাষ। আর এ ত্বীন ফলের ফলন ভালো হয়েছে। এ ত্বীন ফলের বাগান পরিচর্যার জন্য রাখা হয়েছে ১ জন মালি ও ৪ জন শ্রমিক। নতুন বাগান হওয়ায় স্থানীয় অনেক মানুষই আগ্রহ নিয়ে ত্বীন ফলের এ বাগান দেখতে আসছেন।

বাগান দেখতে আসা বগুড়া শহরের লিটন রহমান জানান, আরব দেশের ফল এখন নিজ এলাকায় চাষাবাদ হচ্ছে। তাই ফলটি দেখার আগ্রহ নিয়ে ছুটে এসেছি।

বাগানের মালী জুয়েল জানান, ত্বীন গাছে কোনো রকম রাসায়নিক সার দেওয়া হয়নি। জৈব ও কম্পোজ সার মিশিয়ে গোড়ায় দিয়েছি। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো বড় হয়ে উঠেছে। এ সময়ে তেমন কোনো রোগবালাই দেখা যায়নি। রোপণকৃত গাছগুলোর মাটি বেলে ও দো-আঁশ মাটির সংমিশ্রণ হলেও এ আবহাওয়ার সঙ্গে এখন মানিয়ে নিয়েছে ত্বীন।

বাগাানের মালিক নবীনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিঙ্গাপুরে গিয়ে তুরস্কের এক যুবকের সঙ্গে বন্ধুত্ব হয় তার। সেখানেই তিনি ত্বীন ফলের স্বাদ পেয়েছেন, পাশাপাশি চাষ সম্পর্কে অবগত হন। করোনা পরিস্থিতিতে দেশে ফিরে বসে না থেকে তিনি ফলবাগান করার কাজ শুরু করেন।

পরবর্তীতে তুরস্কের বন্ধুর মাধ্যমে সেখান থেকে আনা ছয় মাস বয়সী ৬০০ চারা রোপণ করেন প্রায় ২ বিঘা জমিতে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে চারা রোপণের তিন মাসের মধ্যে ফল ধরেছে গাছগুলোতে।

বেলে দো-আঁশ মাটিতে জৈব ও ভার্মি কম্পোস্ট সার প্রয়োগে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার ও পরিচর্যার মাধ্যমে গাছগুলো বেড়ে উঠছে। প্রতিটি পাতার গোড়ায় গোড়ায় সবুজ তিন ফল, যা পাকলে লাল, খয়েরি বা মেরুন রং ধারণ করবে।

এটি মূলত আরব, ইন্দোনেশিয়া, তুর্কি এবং থাইল্যান্ডে চাষাবাদ করা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশেও ত্বীন ফলের চাষাবাদ শুরু হয়েছে। ত্বীন ফল বাংলাদেশের কৃষি খাতে বাণিজ্যিকভাবে ব্যাপক সফলতা বয়ে আনতে সক্ষম। কৃষক, বেকার ও তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য খুবই লাভজনক একটি বিনিয়োগ হতে পারে।

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূরে আলম জানান, এ প্রথমবার বগুড়ায় বেসরকারিভাবে এক তরুণ পরীক্ষামূলকভাবে ত্বীন চাষ করেছেন। কোনো রকম রাসায়নিক কীটনাশক সার ছাড়াই এ ফলটি চাষ করা সম্ভব। এ ফলের ব্যক্তিগত বা বাণিজ্যিক চাষে সর্বাত্মক সহযোগিতা করে যাবে বলেও জানান তিনি।

এখানে প্রথম চাষে আশানুরূপ ফলন হয়েছে। এখন বাণিজ্যিকভাবে চারা উৎপাদন ও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যাবে। তবে ত্বীন গাছটির বীজ থেকে চারা উৎপাদনের হার কম হওয়ায় নির্ভরতা করতে হচ্ছে কাটিং বা কলম চারায়। যার কারণ হচ্ছে বীজের চারায় ফলন আসে কয়েক বছর পর। অন্যদিকে কলম চারায় ফল আসে মাত্র ৩ মাসে।