ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মেসির জন্য মরতেও রাজি মার্টিনেজ!

ক্রীড়া  ডেস্ক :  গত ২৪ জুন ছিল লিওনেল মেসির ৩৪তম জন্মদিন। সেদিন রাতে আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের সকল খেলোয়াড় মিলে দলের অধিনায়ককে নানান সারপ্রাইজ গিফট দিয়েছিলেন।

কিন্তু দেননি শুধু একজন, গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, মেসিকে জন্মদিনের উপহার দিলেন না কেন? উত্তরে মার্টিনেজ জানিয়েছিলেন, মূলত প্রিয় অধিনায়ককে কোপা আমেরিকার শিরোপাটাই উপহার দিতে চান তিনি।

যেই কথা সেই কাজ। পুরো আসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে আর্জেন্টিনার কোপার শিরোপা জয়ে বড় অবদান রেখেছেন মার্টিনেজ।

বিশেষ করে কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচে টাইব্রেকারে তিনটি শট ঠেকিয়ে জাতীয় বীরে পরিণত হন মার্টিনেজ।

পরে ব্রাজিলের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচেও বেশ কিছু দুর্দান্ত সেভ দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক। যার সুবাদে শিরোপা জেতে আলবিসেলেস্তেরা আর মার্টিনেজের হাতে ওঠে টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার।

কোপা জিতে মার্টিনেজ জানিয়েছিলেন, মেসির জন্যই এটি জিতেছেন তিনি। আর এবার জানালেন, মেসির হাতে বিশ্বকাপ শিরোপাও তুলে দিতে চান এ ২৮ বছর বয়সী গোলরক্ষক। প্রয়োজনে নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত তিনি।

আর্জেন্টাইন সংবাদ ওলে’র সঙ্গে বিস্তারিত এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মার্টিনেজ। যেখানে উঠে এসেছে মেসির ব্যাপারে তার নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং কোপার শিরোপা জেতার পথে অধিনায়ক মেসির ভূমিকা। পাঠকদের জন্য সে অংশটুকু অনুবাদ করে দেয়া হলো:

‘উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে মেসি এসে আমাকে বললো, তুমি আমাদের লং পাস দিয়ে সাহায্য করবে। কারণ ওরা (উরুগুয়ে) অনেক গায়ের জোরে খেলে। এমনিতেও সে অধিনায়ক হিসেবে অনেক কথা বলে।

যখন সে (সেমিফাইনাল ম্যাচে) পেনাল্টিতে গোল করল, এরপর সে সেন্টারে ফিরে যেতে পারত। কিন্তু সে আমার কাছে এসে বলল, তুমি এখন একটা শট ঠেকাবে এবং আমি পরেরটাই ঠেকিয়েছি। সে আসলে এভাবেই আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করে। তাকে বর্ণনা করা কঠিন। কিন্তু সে এমন একজন অধিনায়ক। যাকে সবাই চাইবে।

‘ইন্সটাগ্রামের ছবিটা দেখে আমি আবেগে বাকহারা হয়ে পড়েছিলাম। সেই কথাগুলো কিংবা ছবিটা আজীবন নিজের কাছে রাখব আমি। অথবা তাকে জড়িয়ে ধরে রাখা সেই ছবিটা।

সেমিফাইনালেও একই ঘটনা, যখন সে আমাকে হাগ করতে এলো। তার এসব বিষয় আমাকে শক্তি দিয়েছে, ফাইনালে গোল ঠেকানোর। এটা আমাকে অনেক শক্তি দেয়।’

‘মেসি বলেছে, সে (মার্টিনেজ) একজন ফেনোমেনন। এটার পর আমি ফাইনালে কীভাবে ভালো না খেলতাম? আমি তাকে আমার জীবন দিতে পারতাম। আমি তার জন্য মরে যেতেও প্রস্তুত।

আমি ৪-৫ মাস আগেও বলেছি, আমি চাই আমার আগে সে কোপা আমেরিকা জিতুক। সকল আর্জেন্টাইন, এমনকি ব্রাজিলিয়ানরাও চেয়েছে আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকা জিতুক, শুধুমাত্র মেসির জন্য। আশা করি, আমরা তাকে বিশ্বকাপও দিতে পারব।’

‘আমি একজন আর্জেন্টিনা ভক্ত, যে নিজের স্বপ্ন অর্জন করতে পেরেছি। আমি লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগে রণে ক্ষান্ত দেইনি। আমি জানি না, মেসি আর কয়টা কোপা আমেরিকা কিংবা বিশ্বকাপ খেলবে।

তার সঙ্গে একটা টুর্নামেন্ট খেলা… যখন কোপায় আমার অভিষেক হলো, তখনই আমি বলেছি, স্বপ্ন সত্যি হয়েছে আমার।’

‘আর পরে যখন আমরা কোপা আমেরিকা জিতে নিলাম, আমি এটা কখনও ভাবতে বা কল্পনাও করতে পারিনি। আপনি সবসময় বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলতে চাইবেন এবং তার খেলা কাছ থেকে দেখা আমাকে আরও নির্ভার করেছে, আরও উন্নত করেছে।’

‘সবাই বলে, সে খেলোয়াড়দের রোমাঞ্চিত করে, আমাকেও করে, আমি একজন গোলরক্ষক। আমি যদি তার সঙ্গে একই লিগে সব ম্যাচ খেলতে পারতাম, তাহলে গোলরক্ষক হিসেবে আরও ভালো হতে পারতাম।

অ্যাস্টন ভিলায় দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়ে আমি জাতীয় দলের সঙ্গে ৪৫ দিন ছিলাম। এখানে আমার আরও অনেক উন্নতি হয়েছে। মেসির পাশে খেলা সবসময়ই অনেক ভালো লাগার।

ট্যাগস

মেসির জন্য মরতেও রাজি মার্টিনেজ!

আপডেট সময় ০৫:১৬:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ জুলাই ২০২১

ক্রীড়া  ডেস্ক :  গত ২৪ জুন ছিল লিওনেল মেসির ৩৪তম জন্মদিন। সেদিন রাতে আর্জেন্টিনা জাতীয় ফুটবল দলের সকল খেলোয়াড় মিলে দলের অধিনায়ককে নানান সারপ্রাইজ গিফট দিয়েছিলেন।

কিন্তু দেননি শুধু একজন, গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, মেসিকে জন্মদিনের উপহার দিলেন না কেন? উত্তরে মার্টিনেজ জানিয়েছিলেন, মূলত প্রিয় অধিনায়ককে কোপা আমেরিকার শিরোপাটাই উপহার দিতে চান তিনি।

যেই কথা সেই কাজ। পুরো আসরে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে আর্জেন্টিনার কোপার শিরোপা জয়ে বড় অবদান রেখেছেন মার্টিনেজ।

বিশেষ করে কলম্বিয়ার বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচে টাইব্রেকারে তিনটি শট ঠেকিয়ে জাতীয় বীরে পরিণত হন মার্টিনেজ।

পরে ব্রাজিলের বিপক্ষে ফাইনাল ম্যাচেও বেশ কিছু দুর্দান্ত সেভ দেন আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক। যার সুবাদে শিরোপা জেতে আলবিসেলেস্তেরা আর মার্টিনেজের হাতে ওঠে টুর্নামেন্টের সেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার।

কোপা জিতে মার্টিনেজ জানিয়েছিলেন, মেসির জন্যই এটি জিতেছেন তিনি। আর এবার জানালেন, মেসির হাতে বিশ্বকাপ শিরোপাও তুলে দিতে চান এ ২৮ বছর বয়সী গোলরক্ষক। প্রয়োজনে নিজের জীবন দিতেও প্রস্তুত তিনি।

আর্জেন্টাইন সংবাদ ওলে’র সঙ্গে বিস্তারিত এক সাক্ষাৎকার দিয়েছেন মার্টিনেজ। যেখানে উঠে এসেছে মেসির ব্যাপারে তার নিজস্ব চিন্তাভাবনা এবং কোপার শিরোপা জেতার পথে অধিনায়ক মেসির ভূমিকা। পাঠকদের জন্য সে অংশটুকু অনুবাদ করে দেয়া হলো:

‘উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে মেসি এসে আমাকে বললো, তুমি আমাদের লং পাস দিয়ে সাহায্য করবে। কারণ ওরা (উরুগুয়ে) অনেক গায়ের জোরে খেলে। এমনিতেও সে অধিনায়ক হিসেবে অনেক কথা বলে।

যখন সে (সেমিফাইনাল ম্যাচে) পেনাল্টিতে গোল করল, এরপর সে সেন্টারে ফিরে যেতে পারত। কিন্তু সে আমার কাছে এসে বলল, তুমি এখন একটা শট ঠেকাবে এবং আমি পরেরটাই ঠেকিয়েছি। সে আসলে এভাবেই আত্মবিশ্বাস সঞ্চার করে। তাকে বর্ণনা করা কঠিন। কিন্তু সে এমন একজন অধিনায়ক। যাকে সবাই চাইবে।

‘ইন্সটাগ্রামের ছবিটা দেখে আমি আবেগে বাকহারা হয়ে পড়েছিলাম। সেই কথাগুলো কিংবা ছবিটা আজীবন নিজের কাছে রাখব আমি। অথবা তাকে জড়িয়ে ধরে রাখা সেই ছবিটা।

সেমিফাইনালেও একই ঘটনা, যখন সে আমাকে হাগ করতে এলো। তার এসব বিষয় আমাকে শক্তি দিয়েছে, ফাইনালে গোল ঠেকানোর। এটা আমাকে অনেক শক্তি দেয়।’

‘মেসি বলেছে, সে (মার্টিনেজ) একজন ফেনোমেনন। এটার পর আমি ফাইনালে কীভাবে ভালো না খেলতাম? আমি তাকে আমার জীবন দিতে পারতাম। আমি তার জন্য মরে যেতেও প্রস্তুত।

আমি ৪-৫ মাস আগেও বলেছি, আমি চাই আমার আগে সে কোপা আমেরিকা জিতুক। সকল আর্জেন্টাইন, এমনকি ব্রাজিলিয়ানরাও চেয়েছে আর্জেন্টিনা কোপা আমেরিকা জিতুক, শুধুমাত্র মেসির জন্য। আশা করি, আমরা তাকে বিশ্বকাপও দিতে পারব।’

‘আমি একজন আর্জেন্টিনা ভক্ত, যে নিজের স্বপ্ন অর্জন করতে পেরেছি। আমি লক্ষ্যে পৌঁছানোর আগে রণে ক্ষান্ত দেইনি। আমি জানি না, মেসি আর কয়টা কোপা আমেরিকা কিংবা বিশ্বকাপ খেলবে।

তার সঙ্গে একটা টুর্নামেন্ট খেলা… যখন কোপায় আমার অভিষেক হলো, তখনই আমি বলেছি, স্বপ্ন সত্যি হয়েছে আমার।’

‘আর পরে যখন আমরা কোপা আমেরিকা জিতে নিলাম, আমি এটা কখনও ভাবতে বা কল্পনাও করতে পারিনি। আপনি সবসময় বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়ের সঙ্গে খেলতে চাইবেন এবং তার খেলা কাছ থেকে দেখা আমাকে আরও নির্ভার করেছে, আরও উন্নত করেছে।’

‘সবাই বলে, সে খেলোয়াড়দের রোমাঞ্চিত করে, আমাকেও করে, আমি একজন গোলরক্ষক। আমি যদি তার সঙ্গে একই লিগে সব ম্যাচ খেলতে পারতাম, তাহলে গোলরক্ষক হিসেবে আরও ভালো হতে পারতাম।

অ্যাস্টন ভিলায় দুর্দান্ত মৌসুম কাটিয়ে আমি জাতীয় দলের সঙ্গে ৪৫ দিন ছিলাম। এখানে আমার আরও অনেক উন্নতি হয়েছে। মেসির পাশে খেলা সবসময়ই অনেক ভালো লাগার।