ঢাকা ০২:২৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত সাপাহারে জবই বিল

নওগাঁ সদর থেকে মাত্র ৮৫ কি . মি পশ্চিমে  অবস্থিত প্রাকৃতিক এক অপার সৌনন্দর্যের জবই বিল । নওগাঁ সাপাহার উপজেলা  এ বিল অবস্থিত । শীতের শুরুতে এ বিলে মুখরিত হচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথি পাখির ।

খাবারের খোঁজে এবং শীত নিবারণের জন্য জবই বিলে ঝাঁক বেঁধে আসছে পর্যটক পাখি। ঐতিহ্যবাহী জবাই বিল হাজার হাজার পাখির নিরাপদ বিচরণ ভূমি। যা অত্যন্ত মনমুগ্ধকর এক প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিলের পানি কমতে শুরু করলে শীত মৌসুমে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির আনাগোনা শুরু হয়। জবাই বিল ও পার্শ্ববতী পূনর্ভবা নদীতে পাখিদের জলকেলিতে উচ্ছ্বসিত পরিবেশ এক অপূর্ব মনোমুগ্ধকর স্থানে পরিণত করেছে। এসব স্থানে পাখিরা দিন রাত বিচরণ করছে। পাখির কল-কাকলীতে বিমুগ্ধতা ছড়াচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের মনে।

জবাই বিল ও পূনর্ভবা নদীতে অতিথি পাখিদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার থাকার ফলে প্রতি বছর শীত মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছুটে আসে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে হাজার হাজার পাখি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাখি হলো শামুকখোল, সাদা বক, বালিহাঁস, চাহা, রাজহাঁস, পাতি সরালীসহ নানা প্রজাতির নাম না জানা পাখি। মূলত: এই বিলের ছোট ছোট মাছ আর শামুকই পাখির প্রধান খাবার।

জবই বিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সবুজ জানান, বর্তমানে এই বিলে পাতি-সরালি, লাল ঝুটি-ভুতিহাস, গিরিয়া হাস, তিলি হাঁস, টিকি হাঁস, পিয়াং হাঁস, ঠেঙ্গি হাঁস, চা পাখি, বেগুনী বক, বাজলা বক, শামুখ খোল, মাছ মুরাল, সাপ পাখি, চখা চখি, হরেক রকম হাঁসের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বিলটি পাখির সমাহারে সারা বিল ভরে উঠবে।

তাদের জরিপ মতে ২০১৯ সালে এবিলে দেশি বিদেশি মিলে পাখির সংখ্যা ৫ হাজার ৫৯৩টি, ২০২০ সালে ৭ হাজার ৬৮৩টি, ২০২১ সালে ৯ হাজার ৭১২টি এবং ২০২২ সালে বিলে মৎস্য শিকারীদের ব্যাপক দাপাদাপিতে পাখির সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬৯২টিতে। ২০২৩ সালের পাখি জরিপ কাজ চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে সবুজ জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষার শেষ ভাগে বিলে পানি কমতে শুরু করলে আবাদি জমি পানির নিচ থেকে বের হয়ে আসে। ওই জমিতে স্বল্প পরিমাণ পানি থাকায় ছোট মাছ, শামুক, পোকা-মাকড়ের আমদানি বেশি হয়। সেসব খাওয়ার জন্য নানা ধরনের পাখি ঝাঁক বেঁধে ছুটে আসে এই জবাই বিলে। যার ফলস্বরূপ জবাই বিল এলাকা হয়ে ওঠে মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক লীলাভূমি।

সাপাহার উপজেলার জবই বিলটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা ও সারা বছর বিলে নিরাপদে পাখির বসবাসের জন্য একটি অংশ সংরক্ষিত এলাকা ঘোষনা করে সেখানে পাখির জন্য অভয় আশ্রম নির্মানের জোর দাবী করছে প্রকৃতি প্রেমিকগণ।

সর্বাধিক পঠিত

অতিথি পাখির কলতানে মুখরিত সাপাহারে জবই বিল

আপডেট সময় ০৫:০৩:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৩

নওগাঁ সদর থেকে মাত্র ৮৫ কি . মি পশ্চিমে  অবস্থিত প্রাকৃতিক এক অপার সৌনন্দর্যের জবই বিল । নওগাঁ সাপাহার উপজেলা  এ বিল অবস্থিত । শীতের শুরুতে এ বিলে মুখরিত হচ্ছে বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথি পাখির ।

খাবারের খোঁজে এবং শীত নিবারণের জন্য জবই বিলে ঝাঁক বেঁধে আসছে পর্যটক পাখি। ঐতিহ্যবাহী জবাই বিল হাজার হাজার পাখির নিরাপদ বিচরণ ভূমি। যা অত্যন্ত মনমুগ্ধকর এক প্রাকৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, বিলের পানি কমতে শুরু করলে শীত মৌসুমে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির আনাগোনা শুরু হয়। জবাই বিল ও পার্শ্ববতী পূনর্ভবা নদীতে পাখিদের জলকেলিতে উচ্ছ্বসিত পরিবেশ এক অপূর্ব মনোমুগ্ধকর স্থানে পরিণত করেছে। এসব স্থানে পাখিরা দিন রাত বিচরণ করছে। পাখির কল-কাকলীতে বিমুগ্ধতা ছড়াচ্ছে প্রকৃতিপ্রেমীদের মনে।

জবাই বিল ও পূনর্ভবা নদীতে অতিথি পাখিদের জন্য পর্যাপ্ত খাবার থাকার ফলে প্রতি বছর শীত মৌসুমের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছুটে আসে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে হাজার হাজার পাখি। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাখি হলো শামুকখোল, সাদা বক, বালিহাঁস, চাহা, রাজহাঁস, পাতি সরালীসহ নানা প্রজাতির নাম না জানা পাখি। মূলত: এই বিলের ছোট ছোট মাছ আর শামুকই পাখির প্রধান খাবার।

জবই বিল জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও সমাজকল্যাণ সংস্থার সভাপতি সোহানুর রহমান সবুজ জানান, বর্তমানে এই বিলে পাতি-সরালি, লাল ঝুটি-ভুতিহাস, গিরিয়া হাস, তিলি হাঁস, টিকি হাঁস, পিয়াং হাঁস, ঠেঙ্গি হাঁস, চা পাখি, বেগুনী বক, বাজলা বক, শামুখ খোল, মাছ মুরাল, সাপ পাখি, চখা চখি, হরেক রকম হাঁসের আনাগোনা শুরু হয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বিলটি পাখির সমাহারে সারা বিল ভরে উঠবে।

তাদের জরিপ মতে ২০১৯ সালে এবিলে দেশি বিদেশি মিলে পাখির সংখ্যা ৫ হাজার ৫৯৩টি, ২০২০ সালে ৭ হাজার ৬৮৩টি, ২০২১ সালে ৯ হাজার ৭১২টি এবং ২০২২ সালে বিলে মৎস্য শিকারীদের ব্যাপক দাপাদাপিতে পাখির সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ৬ হাজার ৬৯২টিতে। ২০২৩ সালের পাখি জরিপ কাজ চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে বলে সবুজ জানিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, বর্ষার শেষ ভাগে বিলে পানি কমতে শুরু করলে আবাদি জমি পানির নিচ থেকে বের হয়ে আসে। ওই জমিতে স্বল্প পরিমাণ পানি থাকায় ছোট মাছ, শামুক, পোকা-মাকড়ের আমদানি বেশি হয়। সেসব খাওয়ার জন্য নানা ধরনের পাখি ঝাঁক বেঁধে ছুটে আসে এই জবাই বিলে। যার ফলস্বরূপ জবাই বিল এলাকা হয়ে ওঠে মনমুগ্ধকর প্রাকৃতিক লীলাভূমি।

সাপাহার উপজেলার জবই বিলটিকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা ও সারা বছর বিলে নিরাপদে পাখির বসবাসের জন্য একটি অংশ সংরক্ষিত এলাকা ঘোষনা করে সেখানে পাখির জন্য অভয় আশ্রম নির্মানের জোর দাবী করছে প্রকৃতি প্রেমিকগণ।


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471