ঢাকা ১০:১৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড Logo ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ Logo ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৮০ Logo পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব Logo নওগাঁ ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে মারধর Logo পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা Logo ৫ বছর পর দেশে এসেছেন শাবানা Logo নুরাল পাগলের কবর ভাঙচুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৫ নেতা গ্রেপ্তার Logo মার্কিন বাণিজ্যে শুল্ক ছাড় পাচ্ছে মিত্র দেশগুলো, ট্রাম্পের নতুন আদেশ Logo বরগুনায় নিজ বসতঘর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ভোটকেন্দ্র দখলে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট আগামীকাল বৃহস্পতিবার। ভোটের আগেই বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনা সরকারের পাশাপাশি ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে। এক মাস ধরে সংঘাত লেগেই আছে।

এতে দেশি অস্ত্রের পাশাপাশি বেড়ে গেছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। বেড়েছে অবৈধ অস্ত্রের চাহিদাও। নিকট অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অস্ত্রের চোরাচালানও বেড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশঙ্কা, ভোটের দিনও পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। এমনকি ভোটকেন্দ্র দখলে অবৈধআগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা।

এ বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সরকারের উচ্চপর্যায়ে একটি গোপন প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মীদের মধ্যে সংঘাতে পেশিশক্তি ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধিরও আশঙ্কা করা হয়েছে। এমনকি ভোটের দিন আধিপত্য নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়াও হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অবস্থায় ভোটের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ঘিরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান  বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণকালে কেউ যাতে কোনো ধরনের পেশিশক্তি বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য মাঠ পুলিশে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকাসহ প্রত্যন্ত এলাকায় পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব মাধ্যমে নজরদারি চলছে। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

র‌্যাব-পুলিশসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইউপি নির্বাচন ঘিরে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা কেন্দ্রিক অবৈধ অস্ত্র কারবারের সিন্ডিকেটগুলো অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি সক্রিয়। এ বছর ধাপে ধাপে এই নির্বাচন হচ্ছে। কাকতালীয়ভাবে ধাপে ধাপে অস্ত্র-গুলির চালানও নিয়ে আসছেন অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ সীমান্তে অস্ত্র-গুলির চালান ঢোকার পর তা হাতবদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়; বিশেষ করে যেসব উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে যশোরের শার্শা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, সিলেটের গোয়াইনঘাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলটুপি ও ভারতের মিজোরাম সীমান্ত দিয়ে বেশি অবৈধ অস্ত্রের চালান আসছে। এসব সীমান্তে অবৈধ অস্ত্র কারবারিরা সারা বছরই সক্রিয় থাকেন। অবৈধ অস্ত্রের দামও এখন চড়া।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক এলাকার অস্ত্র আরেক এলাকায় ভাড়ায় খাটানোরও ঘটনা রয়েছে। একজনের অস্ত্র আরেকজন ভাড়া নিচ্ছে। কোনো এলাকায় ভোটের মাঠ গরম করতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা অস্ত্রের সঙ্গে ক্যাডারও ভাড়া করছেন। অধিকাংশ অবৈধ অস্ত্রের চালান আসছে ভারত থেকে।

পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, অবৈধ অস্ত্রের মধ্যে নাইন এমএম পিস্তল, সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ পিস্তল, থ্রিটু বোরের রিভলবার এবং টুটু বোরের রিভলবার বেশি আসছে। এসব অস্ত্রের সঙ্গে আসছে গুলির চালান। একটি নাইন এমএম পিস্তল সীমান্ত থেকে বাংলাদেশি অস্ত্র ব্যবসায়ীরা কিনছে ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সেই অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে ৬০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত।

সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ পিস্তল সীমান্তে বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে। সেই অস্ত্র ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায়। থ্রিটু রিভলবার সীমান্তে বিক্রি হচ্ছে ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। টুটু বোরের রিভলবার সীমান্তে বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায়।

বাইরে দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। অবৈধ অস্ত্রের গতিবিধির ওপর নজর রাখে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের অ্যান্টি ইলিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিম। এই টিমের সদস্যরা গত ৩১ অক্টোবর ৪টি পিস্তল, একটি শটগান ও ৩০১ রাউন্ড গুলিসহ চার অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দেশের অস্ত্র ও গুলি চোরাচালানের অনেক অজানা তথ্য জানা যায়।

গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশে অস্ত্র-গুলির চাহিদা বেড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বারপ্রার্থীরা আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্র-গুলি মজুদ করছেন। সিটিটিসির প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অবৈধ অস্ত্র-গুলির চোরাচালান পরিস্থিতির ওপর তারা নজর রাখছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্র কারবারিদের গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে।

সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে অবৈধ অস্ত্রের পাশাপাশি গুলি চোরাচালান বেড়েছে। প্রতি রাউন্ড গুলি ২০০ টাকা দিয়ে প্রতিবেশী দেশ থেকে কিনছে অস্ত্র চোরাকারবারিরা। সেই গুলি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ সময় সীমান্তের ওপারের চোরাচালানিরা অস্ত্রের সঙ্গে কয়েক রাউন্ড গুলি উপহার হিসেবে দেন। উপহারের বাইরে গুলি কিনে নিতে হয়।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম সীমান্তে অবৈধ অস্ত্র তৈরির কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় তৈরি ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র হাতবদল হয়ে বাংলাদেশে আসছে। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি এলাকা দিয়ে মাঝে মধ্যেই ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রের চালান আসে। তেমনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ওপারেও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের কারাখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানার অস্ত্র শিবগঞ্জের তেলটুপি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব বলেন, বিজিবির পাশাপাশি শিবগঞ্জ সীমান্তে তাদের নজরদারি রয়েছে। মাঝে মধ্যে অস্ত্র ধরাও পড়ছে। যারা অস্ত্র চোরাচালান করে থাকে, তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র চোরাচালান হলেও এখানে অস্ত্র ব্যবহার হয় না।

 

ট্যাগস

নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড

ভোটকেন্দ্র দখলে অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের আশঙ্কা

আপডেট সময় ১১:৩৭:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোট আগামীকাল বৃহস্পতিবার। ভোটের আগেই বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার ঘটনা সরকারের পাশাপাশি ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে। এক মাস ধরে সংঘাত লেগেই আছে।

এতে দেশি অস্ত্রের পাশাপাশি বেড়ে গেছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার। বেড়েছে অবৈধ অস্ত্রের চাহিদাও। নিকট অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অস্ত্রের চোরাচালানও বেড়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে গোয়েন্দা সংস্থার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আশঙ্কা, ভোটের দিনও পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। এমনকি ভোটকেন্দ্র দখলে অবৈধআগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার হতে পারে বলেও তাদের আশঙ্কা।

এ বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থা সরকারের উচ্চপর্যায়ে একটি গোপন প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে দ্বিতীয় ধাপের ভোটের দিন ব্যাপক সহিংসতার আশঙ্কা করা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কর্মীদের মধ্যে সংঘাতে পেশিশক্তি ও অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বৃদ্ধিরও আশঙ্কা করা হয়েছে। এমনকি ভোটের দিন আধিপত্য নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়াও হতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অবস্থায় ভোটের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্র ঘিরে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের অনুরোধ জানানো হয়েছে প্রতিবেদনে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. কামরুজ্জামান  বলেন, ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণকালে কেউ যাতে কোনো ধরনের পেশিশক্তি বা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য মাঠ পুলিশে নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সীমান্ত এলাকাসহ প্রত্যন্ত এলাকায় পুলিশের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সব মাধ্যমে নজরদারি চলছে। শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

র‌্যাব-পুলিশসহ একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ইউপি নির্বাচন ঘিরে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা কেন্দ্রিক অবৈধ অস্ত্র কারবারের সিন্ডিকেটগুলো অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে এখন বেশি সক্রিয়। এ বছর ধাপে ধাপে এই নির্বাচন হচ্ছে। কাকতালীয়ভাবে ধাপে ধাপে অস্ত্র-গুলির চালানও নিয়ে আসছেন অস্ত্র ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশ সীমান্তে অস্ত্র-গুলির চালান ঢোকার পর তা হাতবদল হয়ে চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়; বিশেষ করে যেসব উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন হচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন ঘিরে যশোরের শার্শা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম, সিলেটের গোয়াইনঘাট, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার তেলটুপি ও ভারতের মিজোরাম সীমান্ত দিয়ে বেশি অবৈধ অস্ত্রের চালান আসছে। এসব সীমান্তে অবৈধ অস্ত্র কারবারিরা সারা বছরই সক্রিয় থাকেন। অবৈধ অস্ত্রের দামও এখন চড়া।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এক এলাকার অস্ত্র আরেক এলাকায় ভাড়ায় খাটানোরও ঘটনা রয়েছে। একজনের অস্ত্র আরেকজন ভাড়া নিচ্ছে। কোনো এলাকায় ভোটের মাঠ গরম করতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা অস্ত্রের সঙ্গে ক্যাডারও ভাড়া করছেন। অধিকাংশ অবৈধ অস্ত্রের চালান আসছে ভারত থেকে।

পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, অবৈধ অস্ত্রের মধ্যে নাইন এমএম পিস্তল, সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ পিস্তল, থ্রিটু বোরের রিভলবার এবং টুটু বোরের রিভলবার বেশি আসছে। এসব অস্ত্রের সঙ্গে আসছে গুলির চালান। একটি নাইন এমএম পিস্তল সীমান্ত থেকে বাংলাদেশি অস্ত্র ব্যবসায়ীরা কিনছে ২৫ থেকে ৪০ হাজার টাকায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সেই অস্ত্র বিক্রি হচ্ছে ৬০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্যন্ত।

সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ পিস্তল সীমান্তে বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকার মধ্যে। সেই অস্ত্র ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে ৬০ হাজার থেকে ৮০ হাজার টাকায়। থ্রিটু রিভলবার সীমান্তে বিক্রি হচ্ছে ৩০ হাজার থেকে শুরু করে ৫০ হাজার টাকায়। ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত। টুটু বোরের রিভলবার সীমান্তে বিক্রি হচ্ছে ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকায়।

বাইরে দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা। অবৈধ অস্ত্রের গতিবিধির ওপর নজর রাখে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের অ্যান্টি ইলিগ্যাল আর্মস অ্যান্ড ক্যানাইন টিম। এই টিমের সদস্যরা গত ৩১ অক্টোবর ৪টি পিস্তল, একটি শটগান ও ৩০১ রাউন্ড গুলিসহ চার অস্ত্র ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে দেশের অস্ত্র ও গুলি চোরাচালানের অনেক অজানা তথ্য জানা যায়।

গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানায়, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশে অস্ত্র-গুলির চাহিদা বেড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বারপ্রার্থীরা আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্র-গুলি মজুদ করছেন। সিটিটিসির প্রধান ডিআইজি মো. আসাদুজ্জামান বলেন, অবৈধ অস্ত্র-গুলির চোরাচালান পরিস্থিতির ওপর তারা নজর রাখছেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অস্ত্র কারবারিদের গ্রেপ্তারও করা হচ্ছে।

সিটিটিসি সূত্রে জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন কেন্দ্র করে অবৈধ অস্ত্রের পাশাপাশি গুলি চোরাচালান বেড়েছে। প্রতি রাউন্ড গুলি ২০০ টাকা দিয়ে প্রতিবেশী দেশ থেকে কিনছে অস্ত্র চোরাকারবারিরা। সেই গুলি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বেশিরভাগ সময় সীমান্তের ওপারের চোরাচালানিরা অস্ত্রের সঙ্গে কয়েক রাউন্ড গুলি উপহার হিসেবে দেন। উপহারের বাইরে গুলি কিনে নিতে হয়।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ভারতের ত্রিপুরা ও মিজোরাম সীমান্তে অবৈধ অস্ত্র তৈরির কয়েকটি কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় তৈরি ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্র হাতবদল হয়ে বাংলাদেশে আসছে। রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি এলাকা দিয়ে মাঝে মধ্যেই ক্ষুদ্র আগ্নেয়াস্ত্রের চালান আসে। তেমনি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তের ওপারেও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের কারাখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানার অস্ত্র শিবগঞ্জের তেলটুপি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার পুলিশ সুপার এএইচএম আবদুর রকিব বলেন, বিজিবির পাশাপাশি শিবগঞ্জ সীমান্তে তাদের নজরদারি রয়েছে। মাঝে মধ্যে অস্ত্র ধরাও পড়ছে। যারা অস্ত্র চোরাচালান করে থাকে, তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই সীমান্ত দিয়ে অস্ত্র চোরাচালান হলেও এখানে অস্ত্র ব্যবহার হয় না।

 


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471