ঢাকা ১১:১৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড Logo ডিবিসির সাংবাদিক সাজুর উপর হামলাকারী কনক কে ১০ দিনেও আটক করতে পারেনি পুলিশ Logo ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত ৫৮০ Logo পৃথিবীর কোনো শক্তি ফেব্রুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না: প্রেস সচিব Logo নওগাঁ ভর্তি ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে মারধর Logo পদত্যাগ করছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা Logo ৫ বছর পর দেশে এসেছেন শাবানা Logo নুরাল পাগলের কবর ভাঙচুরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ৫ নেতা গ্রেপ্তার Logo মার্কিন বাণিজ্যে শুল্ক ছাড় পাচ্ছে মিত্র দেশগুলো, ট্রাম্পের নতুন আদেশ Logo বরগুনায় নিজ বসতঘর থেকে স্ত্রীর গলাকাটা ও স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

গর্বে ও ঐতিহ্যের মাটির বাড়ি আর ধানের গোলা

ছবিঃ ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈরি বাড়ি ও গোলা ঘর

স্টাফ রিপোর্টারঃ    মাটির দোতলা বাড়ির সামনে ধান রাখার বিরাট ছয়টি মাটির গোলা। নওগাঁর নিয়ামতপুরের দেওয়ানপাড়া দিয়ে গেলে রাস্তার পাশেই চোখে পড়ে এ দৃশ্য। ব্যস্ত পাকা রাস্তার ঠিক কোল ঘেঁষেই গোলার শুরু।

তাই এই রাস্তা পার হওয়ার সময় আনমনা না থাকলে এ গোলাওয়ালা বাড়ি চোখে না পড়ার কোনো কারণ নেই। এই বাড়ি চেনে না—নিয়ামতপুরে এমন মানুষ পাওয়া ভার। ক্রমে কমতে থাকলেও বরেন্দ্র এলাকায় মাটির বাড়ি সাধারণত চোখে পড়েই।

কিন্তু বাড়ির সামনে আগের মতো ধান রাখার বড় বড় মাটির গোলা আর চোখে পড়ে না। সেদিক থেকে বরেন্দ্রভূমির ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের প্রতীক ও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেন এ বাড়ি আর গোলাগুলো।

এ বাড়ির আরেক কৃতী সন্তান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, তিনবারের সাবেক সাংসদ প্রয়াত আজিজুর রহমানের কারণেও বেশ পরিচিত। ৫০০ থেকে ৫৫০ মণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন গোলগুলো কেবল ঐতিহ্য হিসেবে প্রদর্শন করার জন্য নয়। বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে অবস্থানকালেও এই গোলায় ধানের মজুত থাকে। বাপ-দাদার আমলের কীর্তি, বরেন্দ্রভূমির ঐতিহ্য-আভিজাত্য আর স্বাস্থ্যসম্মত ও আরামদায়ক বসবাসের জন্য ভালো লাগা থেকেই প্রয়াত আজিজুর রহমানের তিন সন্তানই চান পিতৃপুরুষের এই স্মৃতি অটুট রাখুক তাঁদের সন্তানেরাও।

কথা হয় আজিজুর রহমানের ছেলে সাইদুর রহমান (৬৫), জায়দুর রহমান (৬৭) ও লুৎফর রহমানের (৭০) সঙ্গে। তাঁরা বলেন, বাঁশের তৈরি কাঠামোর ওপর উভয় পাশে মাটি দিয়ে লেপে নির্মাণ করা হয়েছে ধান রাখার গোলা। আধুনিক পাকা অট্টালিকার বদলে এই মাটির বাড়ি, মাটির গোলা তাঁদের কাছে অনেক প্রশান্তির, অনেক মর্যাদার।

আর ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসা তো আছেই। সেই ভালোবাসা থেকেই ব্রিটিশ আমলের, কমপক্ষে শত বছরের পিতৃপুরুষের অন্য একটি মাটির দোতলা বাড়িও অক্ষত রেখেছেন তাঁরা। অনেক কৌতূহলী মানুষ এগুলো পরিদর্শনে আসেন। এই নিয়ে গর্বিত ওই বাড়ির সন্তানেরা। এই অঞ্চলে প্রথম বসতি স্থাপনকারী পূর্বপুরুষ তেলেঙ্গা মোড়লকে নিয়েও তাঁদের গর্বের সীমা নেই। কথায় কথায় তাঁরা জানালেন, তেলেঙ্গা মোড়ল ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের বীর নেত্রী ঝাঁসির রানির অনুসারী। লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তখন এই এলাকা জনমানবহীন ঝাড়-জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। তিনি বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমজীবীশ্রেণির মানুষকে একত্র করে গড়ে তোলেন এই গ্রাম।

নিয়ামতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ  বলেন, শুধু নিয়ামতপুর উপজেলাই নয়, নওগাঁ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে আছে এ বাড়ির পরিচিতি। নওগাঁর একপ্রান্ত নিয়ামতপুরের মানুষ হয়েও আজিজুর রহমান দীর্ঘদিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ১৯৭০ সালসহ তিনবারের সাংসদ।

সূত্রঃ প্রথম আলো

নওগাঁয় নকল ওষুধ কারখানার সন্ধান, পরিচালককে কারাদণ্ড

গর্বে ও ঐতিহ্যের মাটির বাড়ি আর ধানের গোলা

আপডেট সময় ০৮:৫৮:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী ২০২১

স্টাফ রিপোর্টারঃ    মাটির দোতলা বাড়ির সামনে ধান রাখার বিরাট ছয়টি মাটির গোলা। নওগাঁর নিয়ামতপুরের দেওয়ানপাড়া দিয়ে গেলে রাস্তার পাশেই চোখে পড়ে এ দৃশ্য। ব্যস্ত পাকা রাস্তার ঠিক কোল ঘেঁষেই গোলার শুরু।

তাই এই রাস্তা পার হওয়ার সময় আনমনা না থাকলে এ গোলাওয়ালা বাড়ি চোখে না পড়ার কোনো কারণ নেই। এই বাড়ি চেনে না—নিয়ামতপুরে এমন মানুষ পাওয়া ভার। ক্রমে কমতে থাকলেও বরেন্দ্র এলাকায় মাটির বাড়ি সাধারণত চোখে পড়েই।

কিন্তু বাড়ির সামনে আগের মতো ধান রাখার বড় বড় মাটির গোলা আর চোখে পড়ে না। সেদিক থেকে বরেন্দ্রভূমির ঐতিহ্য আর আভিজাত্যের প্রতীক ও কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেন এ বাড়ি আর গোলাগুলো।

এ বাড়ির আরেক কৃতী সন্তান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, তিনবারের সাবেক সাংসদ প্রয়াত আজিজুর রহমানের কারণেও বেশ পরিচিত। ৫০০ থেকে ৫৫০ মণ ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন গোলগুলো কেবল ঐতিহ্য হিসেবে প্রদর্শন করার জন্য নয়। বাসিন্দারা বাড়ির বাইরে অবস্থানকালেও এই গোলায় ধানের মজুত থাকে। বাপ-দাদার আমলের কীর্তি, বরেন্দ্রভূমির ঐতিহ্য-আভিজাত্য আর স্বাস্থ্যসম্মত ও আরামদায়ক বসবাসের জন্য ভালো লাগা থেকেই প্রয়াত আজিজুর রহমানের তিন সন্তানই চান পিতৃপুরুষের এই স্মৃতি অটুট রাখুক তাঁদের সন্তানেরাও।

কথা হয় আজিজুর রহমানের ছেলে সাইদুর রহমান (৬৫), জায়দুর রহমান (৬৭) ও লুৎফর রহমানের (৭০) সঙ্গে। তাঁরা বলেন, বাঁশের তৈরি কাঠামোর ওপর উভয় পাশে মাটি দিয়ে লেপে নির্মাণ করা হয়েছে ধান রাখার গোলা। আধুনিক পাকা অট্টালিকার বদলে এই মাটির বাড়ি, মাটির গোলা তাঁদের কাছে অনেক প্রশান্তির, অনেক মর্যাদার।

আর ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসা তো আছেই। সেই ভালোবাসা থেকেই ব্রিটিশ আমলের, কমপক্ষে শত বছরের পিতৃপুরুষের অন্য একটি মাটির দোতলা বাড়িও অক্ষত রেখেছেন তাঁরা। অনেক কৌতূহলী মানুষ এগুলো পরিদর্শনে আসেন। এই নিয়ে গর্বিত ওই বাড়ির সন্তানেরা। এই অঞ্চলে প্রথম বসতি স্থাপনকারী পূর্বপুরুষ তেলেঙ্গা মোড়লকে নিয়েও তাঁদের গর্বের সীমা নেই। কথায় কথায় তাঁরা জানালেন, তেলেঙ্গা মোড়ল ছিলেন ব্রিটিশবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রামের বীর নেত্রী ঝাঁসির রানির অনুসারী। লড়াইয়ে পরাস্ত হয়ে এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। তখন এই এলাকা জনমানবহীন ঝাড়-জঙ্গলে পরিপূর্ণ ছিল। তিনি বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমজীবীশ্রেণির মানুষকে একত্র করে গড়ে তোলেন এই গ্রাম।

নিয়ামতপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ফরিদ আহমেদ  বলেন, শুধু নিয়ামতপুর উপজেলাই নয়, নওগাঁ জেলার বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের কাছে আছে এ বাড়ির পরিচিতি। নওগাঁর একপ্রান্ত নিয়ামতপুরের মানুষ হয়েও আজিজুর রহমান দীর্ঘদিন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও ১৯৭০ সালসহ তিনবারের সাংসদ।

সূত্রঃ প্রথম আলো


Notice: ob_end_flush(): failed to send buffer of zlib output compression (0) in /home2/visionnewstoday/public_html/wp-includes/functions.php on line 5471