ঢাকা ১১:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ৮ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর ঘটনায় অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ

  • স্টাফ রিপোটার :
  • আপডেট সময় ১১:৫২:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৯৫ Time View

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২৮ জুলাই অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এরই ধারাবাহিকতায় সকালে আলোচিত এ মামলার ৮ আসামিকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১৯ জুন আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে আশুলিয়া থানার সামনে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া একজন গুলিতে গুরুতর আহত হন। পরে আহত এক ব্যক্তি ও নিহত পাঁচজনকে প্রথমে একটি ভ্যানে তোলা হয়। এরপর তাদের পুলিশ একটি গাড়িতে তুলে নেয়। পরবর্তী সময়ে ওই গাড়ির মধ্যেই এই ছয়জনকে (যাদের মধ্যে একজন জীবিত) পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে যে ৫ জন শহীদ হন তারা হলেন- সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি ও আবুল হোসেন। এ ছাড়া একজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি (অজ্ঞাত)।

ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ের দিন ৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নিপীড়ক পুলিশ, স্থানীয় এমপি সাইফুল ইসলাম ও তার ক্যাডার বাহিনী ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে আশুলিয়ায় নিহত হন অন্তত ৩১ জন। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১৫ জন মারা যান। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দেড় হাজারের বেশি মানুষ, যাদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন।

সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যান অন্তত ৭৫ জন। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে লাশ পোড়ানোর একটি ভিডিও। মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ও রোমহর্ষক ওই ঘটনায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ছিল ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের।

ভিডিতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকাদের দুজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে ভ্যানে একটি লাশ নিক্ষেপ করছেন। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা মেলে। ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের।

সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার আশপাশে। পুলিশ লাশগুলো তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। দুটি অভিযোগই অভিন্ন হওয়ায় একটি মামলা হয়।

ট্যাগস

সর্বাধিক পঠিত

আশুলিয়ায় ৬ লাশ পোড়ানোর ঘটনায় অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ

আপডেট সময় ১১:৫২:১২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ অগাস্ট ২০২৫

ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের সময় ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ।

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এ অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

গত ২৮ জুলাই অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। এরই ধারাবাহিকতায় সকালে আলোচিত এ মামলার ৮ আসামিকে প্রিজনভ্যানে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা গত ১৯ জুন আলোচিত এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে দাখিল করে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, গত বছরের ৫ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে আশুলিয়া থানার সামনে পাঁচজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ছাড়া একজন গুলিতে গুরুতর আহত হন। পরে আহত এক ব্যক্তি ও নিহত পাঁচজনকে প্রথমে একটি ভ্যানে তোলা হয়। এরপর তাদের পুলিশ একটি গাড়িতে তুলে নেয়। পরবর্তী সময়ে ওই গাড়ির মধ্যেই এই ছয়জনকে (যাদের মধ্যে একজন জীবিত) পেট্রোল ছড়িয়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

৫ আগস্ট সাভারের আশুলিয়ায় পুলিশের গুলিতে যে ৫ জন শহীদ হন তারা হলেন- সাজ্জাদ হোসেন (সজল), আস সাবুর, তানজীল মাহমুদ সুজয়, বায়েজিদ বুসতামি ও আবুল হোসেন। এ ছাড়া একজনের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি (অজ্ঞাত)।

ছাত্র আন্দোলনে বিজয়ের দিন ৫ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত নিপীড়ক পুলিশ, স্থানীয় এমপি সাইফুল ইসলাম ও তার ক্যাডার বাহিনী ছাত্রলীগ-যুবলীগের গুলিতে আশুলিয়ায় নিহত হন অন্তত ৩১ জন। পরদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ১৫ জন মারা যান। এ ছাড়া গুলিবিদ্ধ হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন দেড় হাজারের বেশি মানুষ, যাদের অনেকেই পঙ্গু হয়ে গেছেন।

সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যান অন্তত ৭৫ জন। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে লাশ পোড়ানোর একটি ভিডিও। মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ও রোমহর্ষক ওই ঘটনায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি ছিল ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের।

ভিডিতে দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে থাকাদের দুজন পুলিশ সদস্যের একজন হাত ও একজন পা ধরে ভ্যানে একটি লাশ নিক্ষেপ করছেন। সর্বশেষ লাশটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। শেষে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি দেখা মেলে। ভিডিওর ১ মিনিট ৬ সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের।

সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার আশপাশে। পুলিশ লাশগুলো তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

লাশ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। দুটি অভিযোগই অভিন্ন হওয়ায় একটি মামলা হয়।