ঢাকা ০৩:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মারা গেলেন কবর খুঁড়তে ছুটে যাওয়া সেই মনু মিয়া

মাটি খুঁড়ে মানুষের শেষ ঠিকানা গড়ে তোলা সেই নিঃস্বার্থ গোরখোদক মনু মিয়া চলে গেছেন না-ফেরার দেশে। জীবনের প্রায় অর্ধশতক কাটিয়ে দেওয়া এই মানুষটি শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগা পাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

কিন্তু এই বয়সের প্রায় পুরোটা জুড়ে ছিল এক ব্যতিক্রমী ও মানবিক অধ্যায়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করেন। এরপর ৪৯ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজ হাতে খুঁড়েছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর—সবই নিঃস্বার্থভাবে, কোনো পারিশ্রমিক বা বখশিস গ্রহণ না করেই। মৃত্যু-পরবর্তী মর্যাদা রক্ষার এই কাজকে তিনি নিয়েছিলেন আত্মিক দায়িত্ব হিসেবে।

দূর-দূরান্তের খবর পেয়ে কবর খোঁড়ার কাজে ছুটে যেতে হতো তাকে প্রায়ই। যাতায়াত সহজ করতে নিজের ধানী জমি বিক্রি করে কেনেন একটি ঘোড়া। সেই ঘোড়ার পিঠেই যন্ত্রপাতি নিয়ে ছুটে যেতেন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে, যেন মৃত্যুর শেষ ঠিকানার প্রস্তুতি নিতে কারও যেন দেরি না হয়।

মনু মিয়া ছিলেন এক নিঃস্বার্থ কর্মী, একজন নীরব সমাজসেবক। যার হাতে হাজার হাজার মানুষ তাদের চিরনিদ্রার ঘর পেয়েছেন সম্মান নিয়ে।

ট্যাগস

মারা গেলেন কবর খুঁড়তে ছুটে যাওয়া সেই মনু মিয়া

আপডেট সময় ১২:৫৪:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫

মাটি খুঁড়ে মানুষের শেষ ঠিকানা গড়ে তোলা সেই নিঃস্বার্থ গোরখোদক মনু মিয়া চলে গেছেন না-ফেরার দেশে। জীবনের প্রায় অর্ধশতক কাটিয়ে দেওয়া এই মানুষটি শনিবার (২৮ জুন) সকাল ১০টা ২০ মিনিটে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগা পাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৭ বছর।

কিন্তু এই বয়সের প্রায় পুরোটা জুড়ে ছিল এক ব্যতিক্রমী ও মানবিক অধ্যায়। মাত্র ১৮ বছর বয়সে তিনি কবর খোঁড়ার কাজ শুরু করেন। এরপর ৪৯ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে নিজ হাতে খুঁড়েছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর—সবই নিঃস্বার্থভাবে, কোনো পারিশ্রমিক বা বখশিস গ্রহণ না করেই। মৃত্যু-পরবর্তী মর্যাদা রক্ষার এই কাজকে তিনি নিয়েছিলেন আত্মিক দায়িত্ব হিসেবে।

দূর-দূরান্তের খবর পেয়ে কবর খোঁড়ার কাজে ছুটে যেতে হতো তাকে প্রায়ই। যাতায়াত সহজ করতে নিজের ধানী জমি বিক্রি করে কেনেন একটি ঘোড়া। সেই ঘোড়ার পিঠেই যন্ত্রপাতি নিয়ে ছুটে যেতেন এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে, যেন মৃত্যুর শেষ ঠিকানার প্রস্তুতি নিতে কারও যেন দেরি না হয়।

মনু মিয়া ছিলেন এক নিঃস্বার্থ কর্মী, একজন নীরব সমাজসেবক। যার হাতে হাজার হাজার মানুষ তাদের চিরনিদ্রার ঘর পেয়েছেন সম্মান নিয়ে।