নায়িকা নয়, ভালো অভিনেত্রী হওয়ার সাধ নিয়ে কলকাতায় কাজ করেছেন পরীমনি। দেবরাজ সিংয়ের ‘ফেলু বক্সী’ তার প্রথম কাজ। ভিসা সমস্যায় শহরে ছবির প্রচারে যোগ দিতে পারেননি। এ ছবিতে অভিনয়সহ প্রেম, ক্যারিয়ার নিয়েই সম্প্রতি ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন এ নায়িকা।
‘ফেলু বক্সী’তে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়ে কেমন লেগেছিলো? এ নায়িকা বলেন, সত্যি বলতে অভিনয় করার ভাবনা নিয়ে কলকাতায় আসিনি। মনে মনে কোনও প্রস্তুতি না থাকলে সেটা হলে বা না হলে কোনও অনুভূতি তৈরি হয় না। আমারও তাই। কারণ, তখনও আমি পুরোপুরি মাতৃত্বে ডুবে। পদ্ম আরও ছোট। ওকে সামলে কী করে কাজ করব, সেটাই একমাত্র চিন্তা। ওকে ছেড়ে কাজ করার ভাবনাও নেই।
কিন্তু ছবিতে আমার অভিনীত চরিত্র শোনার পর সেই আমি কিছুতেই ‘না’ বলতে পারলাম না। একটাই অনুরোধ, এক্ষুনি চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন করবেন না। বললে ছবি দেখার আনন্দই মাটি (হাসি)। টলিউডে অভিনয় মানেই অধিকাংশের স্বপ্ন, দেব বা জিতের নায়িকা। নয়তো কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় কাজ। হল না বলে মন খারাপ?
পরী বলেন, বিশ্বাস করুন, একটুও না! আমি রাজি হব, সেটাই তো ঠিক ছিল না। আমার কাছে যে কোনও কাজ সম্মানের, গুরুত্বপূর্ণ। কেউ একদিনে নাম করে ফেলেন না। তা ছাড়া, কে বলতে পারে, আজ যিনি নতুন তিনি তার প্রথম কাজেই বিখ্যাত হবেন না? নতুনদের প্রতি তাই সমান বিশ্বাসী, শ্রদ্ধাশীল। দলের প্রত্যেকে প্রচণ্ড সুসংবদ্ধ। ভীষণ নিয়মনিষ্ঠ। যা দেখে মনে হবে না, ওরা নতুন।
পরী কি খুব দুষ্টু? না ছেলেমানুষ এখনও? পুরুষ বন্ধুর হাত নিয়ে খেলা করে সকলের ঘুম ছুটিয়ে দেন…!
পরী বলেন, ও আমার ছোটবেলার বন্ধু। আমি যখন প্রথম নাচ করতাম তখনকার বন্ধু। এত ভালো নাচে যে ওকে ‘দীপিকা পাড়ুকোন’ বলে ডাকি। আসল নাম চঞ্চল। একদিন এক সঙ্গে গাড়িতে আড্ডা দিতে দিতে ফিরছিলাম। হঠাৎ মনে হল, এ রকম কিছু করলে কেমন হয়? তার যে এই ফলাফল হবে বুঝতে পারিনি। অনুরাগীরা ভাবলেন, আপনি আবার প্রেমে। সকলে শুভেচ্ছায় ভরিয়ে দিলেন…! উত্তরে পরী বলেন, কী করে যে বোঝাই, আমার আর প্রেম আসে না। ওই জোন থেকে বেরিয়ে এসেছি। সকলের শুভেচ্ছা পড়তে পড়তে মনে হল, বুঝি বেশিই বাড়াবাড়ি করে ফেলেছি। পরের দিন ঘুম থেকে উঠে তাই সমাজমাধ্যমে ভিডিওর পুরো অংশ দিয়ে আত্মসমর্পণ করলাম। আরও একটা জিনিস উপলব্ধি করলাম…।
ওই যে বলে না, যার বিয়ে তার হুঁশ নেই, পাড়াপড়শির ঘুম নেই। আমার যেন সেই দশা। আমার প্রেম নিয়ে আমার যত না মাথাব্যথা, বাকিদের যেন বেশি! আরে, আমার প্রেম, নতুন প্রেম— কোথায় আমি উত্তেজনায় ফুটব। জেগে স্বপ্ন দেখব। আনন্দে মেঘমুলকে ভাসব— তা না! তাদের দেখি কী উৎসাহ-উদ্দীপনা। আমার প্রেম হলে ওঁদের যে কী সমস্যা! দেখি, মন-টন ভেঙে যায়। আমি কারও হব না— তাতে লোকে খুশি। একজন কারও হলেই বিশাল ব্যথা! আনন্দবাজার অনলাইনের মারফত তাই সমস্ত অনুরাগীদের জানাচ্ছি, আমি কারও নই বাবা! তোমরা খুশি থাকো।
পরী আর নায়িকা নয়, অভিনেত্রী হতে চান। দুষ্টুমি করতে চান না। নতুন করে প্রেমে পড়তেও নারাজ! জীবন কি পরীকে বড় করে দিল? পরীমনি বলেন, বড় না, জীবন অনেক কিছু শিখিয়ে দিল। অনেক রকম ভাবে চলতে শেখাল। সম্ভবত, আমার এখন সেই অবস্থা যাচ্ছে। তা ছাড়া, এত প্রেম করেছি! আমার মতো ফাটিয়ে প্রেম বোধহয় ইন্ডাস্ট্রিতে কেউ করেনি (হা হা হাসি)। আমার প্রেমের তাই কোটা শেষ।