ছয় দিনের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলের আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। উল্টো দিক পরিবর্তন করে নতুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আগুন। এর মধ্যে ঝড়ো বাতাসের পূর্বাভাসে দেওয়ায় নতুন করে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগুনে এ পর্যন্ত ২৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
দাবানল নতুন করে মোড় নিয়েছে ব্রিটেন উডস এবং সান ফার্নান্দো ভ্যালির দিকে। পালিসেডস, ইটন, কেনেথ, লিডিয়া, হার্স্ট এবং আর্চারের অনেক এলাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। এর মধ্যে প্যালিসেইডসে দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়েছে।
কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, সম্প্রতি সান্তা আনা নামে ঝড়ো বাতাসের গতি কিছুটা কমায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আশার আলো দেখা গিয়েছিল। সপ্তাহ শেষে অপেক্ষাকৃত ‘শান্ত থাকা’ শুষ্ক সান্তা আনা বাতাস রোববার রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত আবার তীব্র হবে। যার গতিবেগ ৬০ মাইল অর্থাৎ ৯৬ কিমি পর্যন্ত পৌঁছাবে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে দাবানল আরও বাড়তে পারে বলে শঙ্কা করা হচ্ছে।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লস অ্যাঞ্জেলেসে কাউন্টি মেডিকেল এক্সামিনার স্থানীয় সময় রোববার দাবানলের আগুনে ২৪ জন মারা যাওয়ার তালিকা দিয়েছে। এছাড়া ১৬ জনের নিখোঁজের কথা জানিয়েছে।
বর্তমানে লস অ্যাঞ্জেলেসে চারটি দাবানল সক্রিয় রয়েছে। এর মধ্যে প্যালিসেইডস দাবানল আরও এক হাজার একর এলাকায় ছড়িয়েছে। আগেই এই দাবানলে পুড়েছে ২২ হাজার একর এলাকা। ক্যালিফোর্নিয়ার ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্যালিসেইডস দাবানল মাত্র ১১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।
নতুন করে এই আগুন বৃদ্ধি পাওয়ার আগে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা প্যালিসেইডস দাবানল ও লস অ্যাঞ্জেলেসের পূর্বাঞ্চলে এটন দাবানল নিয়ন্ত্রণে অগ্রগতির কথা জানিয়েছিলেন। এ দুই দাবানলকে সবচেয়ে ভয়াবহ বলা হচ্ছে। দুই দাবানলে একত্রে ১৪৫ বর্গকিলোমিটার এলাকা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। ভৌগোলিক হিসাবে এই আয়তন নিউইয়র্কের ম্যানহাটান এলাকার চেয়ে আড়াই গুণ বেশি।
ছয় দিনের দাবানলে পুড়ে ছাই হয়েছে ৪০ হাজার একরেরও বেশি এলাকা। আগুনের গ্রাসে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়েছে ১২ হাজারের বেশি বাড়িঘর ও স্থাপনা। উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে এক লাখেরও বেশি মানুষ।
অস্বাস্থ্যকর বাতাসের জন্য স্কুল-কলেজগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়া এবং বাসিন্দাদের মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া অধিদফতর আগামী সপ্তাহের জন্যও লস অ্যাঞ্জেলেস ও সংলগ্ন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডের সতর্কতা জারি করেছে। বিমান এবং হেলিকপ্টার থেকে একযোগে আকাশ থেকে পানি ফেলে ম্যান্ডেভিল ক্যানিয়নে কর্মরত দমকল বাহিনীর কর্মীদের সহায়তা করে প্যালিসেড দাবানল আটকানোর চেষ্টা করছে।