ঢাকা ০৪:২১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে পানিবন্দি ২২ লাখ মানুষ, আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে ২০ হাজার

  • স্টাফ রিপোটার :
  • আপডেট সময় ১০:১৫:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪
  • ৬০১ Time View

টানা বৃষ্টি এবং মুহুরী ও ফেনী নদীর পানিতে নোয়াখালীর ৮ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ২২ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৩৪৫ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ২০ হাজার মানুষ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও খারাপ অবস্থা হতে পারে নোয়াখালীর। 

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৭ ইউনিয়ন। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২২ লাখ মানুষ। স্থাপন করা হয়েছে ৩৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র। যাতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে ৮৮টি মেডিকেল টিম। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে কৃষি জমি। ভেসে গেছে মাছের ঘের। ডুবে গেছে সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় দীর্ঘ সময়ের ব্যাপক জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নোয়াখালীবাসীর।

আবহাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার  সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাইজদী কোর্ট,  নোয়াখালী অফিস কর্তৃক রেকর্ডকৃত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪৪ মিলিমিটার। রাতভর বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাথিবুর রহমান তাসিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, গুচ্ছগ্রামসহ পুরো কোম্পানীগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানুষ দিনভর নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়েছে। আমাদের এদিকে স্লুইচ গেট দিয়ে পানি নামছে। তবে বৃষ্টির সাথে কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না।সেনবাগ উপজেলার কাউসার আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাড়ি এলাকার উঁচু স্থানে। কোনো বন্যা আমাদের বাড়িতে পানি উঠে নাই। কিন্তু এবার মনে হয় উঠবে। রান্নাঘরসহ অন্য সব ডুবে গেছে। আল্লাহর কাছে বৃষ্টি না দেওয়ার জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যদি সহায় হয়। তাহলে আমাদের রক্ষা হবে। না হয় আমরা শেষ।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিচ্ছিন্ন হাতিয়া উপজেলা ব্যতীত জেলার আট উপজেলার ৮৭ ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২২ লাখ মানুষ। ৩৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। সময় বাড়ার সাথে সাথে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ বাড়ছে। ইতোমধ্যে ৮৮ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ত্রাণের জন্য বরাদ্দ ১৫ লাখ টাকার মধ্যে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ও ৮০০ মেট্রিক টন চালের মধ্যে ১৭৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।  জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমরা আগে পড়েনি। প্রচুর বৃষ্টিতে প্রথমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন আবার মুহুরী নদী, ফেনী নদী থেকে পানি আসছে। সে হিসেবে হাতিয়া উপজেলা ছাড়া বাকি ৮টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। আমরা সব স্কুল, কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছি। ইতোমধ্যে ২০ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে এসেছেন। পানি কোথাও নামছে না। আরও বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন।

ট্যাগস

নোয়াখালীতে পানিবন্দি ২২ লাখ মানুষ, আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছে ২০ হাজার

আপডেট সময় ১০:১৫:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ অগাস্ট ২০২৪

টানা বৃষ্টি এবং মুহুরী ও ফেনী নদীর পানিতে নোয়াখালীর ৮ উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন ২২ লাখ মানুষ। এর মধ্যে ৩৪৫ আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ২০ হাজার মানুষ। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আরও খারাপ অবস্থা হতে পারে নোয়াখালীর। 

জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে ৮৭ ইউনিয়ন। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২২ লাখ মানুষ। স্থাপন করা হয়েছে ৩৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র। যাতে আশ্রয় নিয়েছেন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। ইতোমধ্যে গঠন করা হয়েছে ৮৮টি মেডিকেল টিম। সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা গেছে, বেশির ভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে কৃষি জমি। ভেসে গেছে মাছের ঘের। ডুবে গেছে সড়ক, বাসাবাড়িতেও ঢুকছে পানি। পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় দীর্ঘ সময়ের ব্যাপক জলাবদ্ধতায় চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে নোয়াখালীবাসীর।

আবহাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার  সন্ধ্যা ৬টা থেকে আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মাইজদী কোর্ট,  নোয়াখালী অফিস কর্তৃক রেকর্ডকৃত মোট বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪৪ মিলিমিটার। রাতভর বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা সাথিবুর রহমান তাসিব ঢাকা পোস্টকে বলেন, গুচ্ছগ্রামসহ পুরো কোম্পানীগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। মানুষ দিনভর নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়েছে। আমাদের এদিকে স্লুইচ গেট দিয়ে পানি নামছে। তবে বৃষ্টির সাথে কুলিয়ে ওঠা যাচ্ছে না।সেনবাগ উপজেলার কাউসার আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের বাড়ি এলাকার উঁচু স্থানে। কোনো বন্যা আমাদের বাড়িতে পানি উঠে নাই। কিন্তু এবার মনে হয় উঠবে। রান্নাঘরসহ অন্য সব ডুবে গেছে। আল্লাহর কাছে বৃষ্টি না দেওয়ার জন্য দোয়া করি। আল্লাহ যদি সহায় হয়। তাহলে আমাদের রক্ষা হবে। না হয় আমরা শেষ।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদ হাসান খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিচ্ছিন্ন হাতিয়া উপজেলা ব্যতীত জেলার আট উপজেলার ৮৭ ইউনিয়ন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন অন্তত ২২ লাখ মানুষ। ৩৪৫টি আশ্রয়কেন্দ্র আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ২০ হাজার মানুষ। সময় বাড়ার সাথে সাথে আশ্রয়কেন্দ্রে মানুষ বাড়ছে। ইতোমধ্যে ৮৮ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ত্রাণের জন্য বরাদ্দ ১৫ লাখ টাকার মধ্যে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ও ৮০০ মেট্রিক টন চালের মধ্যে ১৭৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।  জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এমন পরিস্থিতিতে আমরা আগে পড়েনি। প্রচুর বৃষ্টিতে প্রথমে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এখন আবার মুহুরী নদী, ফেনী নদী থেকে পানি আসছে। সে হিসেবে হাতিয়া উপজেলা ছাড়া বাকি ৮টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছে। আমরা সব স্কুল, কলেজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছি। ইতোমধ্যে ২০ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে চলে এসেছেন। পানি কোথাও নামছে না। আরও বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। বিভিন্ন জায়গায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছেন।