নারী ফুটবলে বাংলাদেশ আর সিঙ্গাপুরের শক্তির পার্থক্য কাছাকাছি। সিঙ্গাপুর র্যাংকিয়ে এগিয়ে থাকলেও দূরত্বটা বেশি নয়। বাংলাদেশ ১৪২, সিঙ্গাপুর ১৩০। তাই দুই দলের লড়াইটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণই হওয়ার কথা।
কিন্তু ৬ বছর আগে এই দুই দল যখন প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল তখন কাগজ-কলমের শক্তির পার্থক্যটা মাঠে আরো বড় করে ফেলেছিল সিঙ্গাপুরের মেয়েরা। ঘরের মাঠ জালান বেসার স্টেডিয়ামে তারা গুনে গুনে ৩ গোল দিয়েছিল বাংলাদেশের জালে। সিঙ্গাপুরের ডেভেলপমেন্ট টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচটি স্বাগতিকদের কাছে ৩-০ গোলে হেরে মাঠ ছেড়েছিলেন সাবিনারা।
৬ বছর আগেও কাগজ-কলমের শক্তিতে বাংলাদেশের (১০৩) কাছাকাছিই ছিল সিঙ্গাপুর (৯২)। ওই সময় ১১ ধাপ এগিয়ে থাকা সিঙ্গাপুর এখন এগিয়ে ১২ ধাপ। দুই দেশই ৬ বছরে র্যাংকিংয়ে পিছিয়েছে। অর্ধযুগ পর আবার মুখোমুখি হচ্ছে দুই দেশ।
এবার দুটি ম্যাচ সাবিনাদের ঘরের মাঠে। শুক্রবার কমলাপুর স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের মেয়েদের সামনে ৬ বছর আগে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ। পারবে কি লাল-সবুজ জার্সিধারী মেয়েরা? সময় পাল্টেছে। পাল্টিয়েছে বাংলাদেশের কোচও। গোলাম রব্বানী ছোটনের হাতে গড়া দলটির দায়িত্বে এখন সাইফুল বারী টিটু। গত হাংজু এশিয়ান গেমস থেকে মেয়েদের ডাগআউট সামলাচ্ছেন দেশের অভিজ্ঞ এই কোচ।
বুধবার বিকেলে বাফুফে ভবনে এই সিরিজ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কোচ সাইফুল বারী টিটু বলেছেন, ‘এশিয়ান গেমস থেকে ফেরার পর অক্টোবরের শেষ দিকে লেবানন সফরে গিয়ে দুটি ম্যাচ খেলার কথা ছিল আমাদের। ওই দুই ম্যাচের জন্য আমাদের খুব ভালো প্রস্তুতিও ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা ওই সিরিজ খেলতে পারিনি। খেলতে পারলে আমাদের অনেক কিছু পাওয়া হতো। এখন সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে ম্যাচ আয়োজন করেছে বাফুফে। এ জন্য বাফুফেকে ধন্যবাদ দিতেই হবে।’
সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুই ম্যাচের জন্য কেমন প্রস্তুতি আপনার? সাবিনাদের কোচ বলেন, ‘এশিয়ান গেমসের পর আমরা প্রস্তুতির ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি। আমরা দুটি ম্যাচ খেলবো। এখন আমরা শুক্রবারের ম্যাচ নিয়েই ভাবছি। আমি মনে করি, ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাবাটাই শ্রেয়। সিঙ্গাপুর দলটা একটু অপরিচিত আমাদের কাছে। তবে ওদের কোচকে আমি খুব ভালো করে চিনি। ভারতের মোহন বাগান, চার্চিল ব্রাদার্সে কাজ করেছেন। চার্চিল ব্রাদার্সেই ওর সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। যেটা বলছিলাম, আমরা আপাতত প্রথম ম্যাচ নিয়েই ভাবছি।
৬ বছর আগে সিঙ্গাপুরের কাছে ওই হারের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‘ওদের বিপক্ষে আমাদের একটা ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা ছিল। সেখানে সম্ভবত ২-১ গোলে (হবে ৩-০) আমরা ওদের কাছি হারি। অনেক বছর পর ওদের বিপক্ষে খেলতে যাচ্ছি। আগের চেয়ে আমাদের বর্তমান দলটা অবশ্যই অনেক ভারসাম্যপূর্ণ। টেকনিক্যাল, ট্যাকটিক্যাল, ফিজিক্যাল-সবদিকে উন্নতি হয়েছে আমাদের। আশা করি দর্শক মাঠে আসবে, দুটি চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ দেখবে। আমরা গোল করলে দর্শকরাই তো সবচেয়ে বেশি খুশি হন। দেশের ফুটবলের মান যেন রাখতে পারি, উন্নতির ধারাবাহিকতা রাখতে পারি। দেশের মাটিতে খেলা, অবশ্যই লক্ষ্য থাকবে জয়ের।’
মধ্যমাঠের করিগর মারিয়া মান্ডা বলেছেন, ‘দেশের মাটিতে খেলার সুযোগ পেয়েছি। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে আমরা সর্বোচ্চ দিয়ে খেলব। এতদিন যে প্রস্তুতি নিয়েছি, সেটা আমরা ম্যাচ থেকে বুঝতে পারব। কোথায় উন্নতি করতে হবে, সেটা ম্যাচে দেখে নিতে পারব। সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুটি ম্যাচে চেষ্টা করব ভালো খেলার। আমরা জয়ের জন্যই খেলবো।’