সংঘাতপূর্ণ মিয়ানমার সীমান্তে গতকাল শনিবার সামরিক মহড়া শুরু করেছে চীন। দেশটির দক্ষিণ রণাঙ্গনের কমান্ড গতকাল এক বিবৃতিতে বলেছে, সেনাবাহিনী মিয়ানমার সীমান্তে ‘যুদ্ধ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম’ শুরু করেছে। সেনাদের সক্ষমতা পরীক্ষা করার পাশাপাশি সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে রাখাই এ মহড়ার লক্ষ্য।
চীনা সামরিক কর্তৃপক্ষের বিবৃতিতে মহড়ার সময়কাল কিংবা এতে কতজন সেনা অংশ নিয়েছে, তা উল্লেখ করা হয়নি। বিবৃতিতে আরো বলা হয়, চীনের সেনাবাহিনী সব ধরনের জরুরি পরিস্থিতিতে সাড়া দিতে প্রস্তুত রয়েছে। চীন গত শুক্রবার তার নাগরিকদের উত্তর মিয়ানমার থেকে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ ছেড়ে যাওয়ার এবং সংঘাত থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
বেইজিং মিয়ানমারের শাসক জান্তাকে মহড়া সম্পর্কে জানিয়েছে। জান্তার মুখপাত্র জাও মিন তুন গতকাল বলেছেন, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী শান্তি ও সীমান্তে স্থিতিশীলতার জন্য কাজ করতে চীনকে সহযোগিতা করবে। চীন সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় বিদ্রোহী বাহিনীর সঙ্গে জান্তা সরকারের বাহিনীর ব্যাপক সংঘাত চলছে। জাতিসংঘের মতে, এ জন্য সম্প্রতি ৮০ হাজারের বেশি মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
গত মাসে জাতিগত সংখ্যালঘু সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট চীন সীমান্তের কাছে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের আক্রমণ শুরু করে। এই সংঘাতে মোট তিন লাখ ৩২ হাজারেরও বেশি মানুষ নিজেদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। সম্প্রতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো সরকারি বাহিনীর বেশ কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি এবং চীনের সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ একটি শহর দখল করেছে।
গত শুক্রবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন গণমাধ্যম জানিয়েছে, জান্তা সরকারের বিরোধীরা চীনের রুইলি শহরের বিপরীতে সীমান্ত শহর মুসে গত বৃহস্পতিবার ড্রোন ব্যবহার করে পণ্যবাহী ট্রাকের বহরে বোমা ফেলেছে।
বাণিজ্য রুট অচল হওয়ায় জান্তা সরকারের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০২১ সালের অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক বাহিনী যে অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, এ পরিস্থিতি তাকে আরো জটিল করে তুলেছে।