ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ আবারও দেখা যাবে! আবারও মাঠে মুখোমুখি হচ্ছে হলুদ এবং আকাশী-নীল জার্সি। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টায় শুরু হবে ম্যাচটি। রিও ডি জেনিরোর বিখ্যাত এস্টাডিও মারাকানায় অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি।
কাতার বিশ্বকাপ জয়ের পর এক কথায় অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে আর্জেন্টিনা। কেউ যেন থামানোর নেই তাদেরকে। যদিও, গত সপ্তাহেই মেসিদের অপরাজেয় যাত্রা থামিয়ে দিয়েছিলো উরুগুয়ে। আর্জেন্টিনার মাঠে গিয়েই ২-০ ব্যবধানে দুর্দান্ত এক জয় তুলে নিয়েছিলো রোনাল্ড আরাউজো এবং ডারউইন নুনেজরা। বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের কাছে হারের পর এটাই এই প্রথম হার মেসিদের। এছাড়া লিওনেল স্কালোনির দলটিকে অপ্রতিরোধ্যই মনে হবে যে কারও।
অন্যদিকে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে সময় পার করছে ব্রাজিল। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে এবারই প্রথম টানা দুই ম্যাচ হেরেছে তারা। এমনটা এর আগে কখনো হয়নি সেলেসাওদের। সব মিলিয়ে শেষ তিন ম্যাচে তাদের এসেছে মাত্র ১ পয়েন্ট। অপ্রতিরোধ্য আর্জেন্টিনা যেহেতু সর্বশেষ ম্যাচে হেরে গেছে, সে কারণে আজ ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষ্য মেসিদের। মারাকানা স্টেডিয়ামে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর লড়াই জিতে কারা ছন্দে ফিরতে পারবে? উত্তর জানা যাবে আগামীকাল ভোরে। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা মহারণ দেখার জন্য ৬৯ হাজার ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামের সব টিকিট এরই মধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে।
একে তো ইনজুরির কারণে নেইমার নেই দলে। তারওপর, ভিনিসিয়ুস জুনিয়রও খেলতে পারবেন না এই ম্যাচে। তাহলে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে এই ম্যাচে কী করবে ব্রাজিল?
অন্যদিকে পরিসংখ্যান আবার তাদের আশা জোগাচ্ছে। কারণ, ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ বাছাইয়ে কখনো হারেনি ব্রাজিল। কিন্তু দলের যে অবস্থা, তাতে অতীত রেকর্ড কী অক্ষুণ্ণ থাকবে তাদের? সংশয়ের কারণ, সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স কথা বলছে না ব্রাজিলের হয়ে। শুধু নেইমার, ভিনিসিয়ুসই নয়, ইনজুরির কারণে আজকের ম্যাচে দলে নেই কাসেমিরো, এডার মিলিতাও, এডারসন ময়েস এবং দানিলোও। সুতরাং বলাই যায়, আর্জেন্টিনার বিপক্ষে পূর্ণ শক্তির দল পাচ্ছেন না কোচ দিনিজ। তাকে অন্যদের ওপরই আস্থা রাখতে হচ্ছে। ব্রাজিলের অন্তর্বর্তীকালীন এই কোচ বলেন, ‘দল কী অবস্থায় আছে, সেটা বুঝেই পরিকল্পনা সাজাচ্ছি। এই মুহূর্তে আমাদের দরকার জয়ে ফেরা। জানি, সেটা সহজ হবে না। আর্জেন্টিনা দারুণ করছে। ওদের বিপক্ষে কঠিন লড়াই হবে।’
পাঁচ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বাছাইয়ের পাঁচ নম্বর অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল। অন্যদিকে ৫ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে আর্জেন্টিনা। টানা চার ম্যাচ জেতার পর উরুগুয়ের কাছে হারের তেতো স্বাদ পেয়েছে আর্জেন্টিনা। শীর্ষস্থান ধরে রাখতে হলে ব্রাজিলের বিপক্ষে জিততে হবে লা আলবিসেলেস্তেদের।
উরুগুয়ের কাছে হারের ক্ষত ভুলে ছন্দে ফিরতে মুখিয়ে আছেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ারা, ‘আমাদের ওই ব্যর্থতা ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে হবে এবং সামনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে সঠিক পরিকল্পনা করতে হবে। পাঁচ দিনের ব্যবধানে দুটি কঠিন ম্যাচ। ব্রাজিল সব সময় বিপজ্জনক দল। দারুণ একটি ম্যাচ হতে যাচ্ছে।’ মারাকানায় ডি মারিয়ার সর্বশেষ অভিজ্ঞতা ছিল স্মরণীয়। ২০২১ কোপা আমেরিকার ফাইনালে তার একমাত্র গোলেই ব্রাজিলকে হারিয়ে উৎসবে মেতেছিল আর্জেন্টিনা। এবারও দলকে জেতাতে নিজেকে নিংড়ে দিতে চান এই উইঙ্গার, ‘ব্রাজিলের মাটিতে তাদের হারানো আমাদের জন্য দারুণ কিছু। এটা আমরা সব সময় করতে চাই। এবারও আমাদের লক্ষ্য ৩ পয়েন্ট নিয়ে ফেরা।’
লাতিন অঞ্চলের বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ৩১ গোল নিয়ে সবার ওপরে আছেন লিওনেল মেসি। কিন্তু প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে এখনো ব্রাজিলের বিপক্ষে গোলের খাতা খুলতে পারেননি তিনি। মারাকানায় মেসি কি পারবেন রেকর্ড বদলাতে?