সমঝোতা ছাড়াই নির্বাচন কমিশন একতরফা তফসিল ঘোষণা করতে চাইলে তফসিল ঘোষণার দিন ঢাকায় নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিল করার কর্মসূচি দিয়েছে দলটি।
আজ রোববার দুপুরে পুরানা পল্টনের নোয়াখালী টাওয়ারের তৃতীয় তলায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন ইসলামী আন্দোলনের আমির ও চরমোনাই পীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, একতরফা তফসিল ঘোষণা করা হলে নির্বাচন কমিশন অভিমুখে গণমিছিল ছাড়া তফসিল ঘোষণার পরদিন সারা দেশে প্রতিটি জেলা ও মহানগরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করা হবে।
জাতীয় সংকট নিরসনে সকল রাজনৈতিক দল, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক এবং বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে আগামী ২০ নভেম্বর ঢাকায় সংলাপ করে পরবর্তী করণীয় ঠিক করা হবে বলেও জানিয়েছেন চরমোনাই পীর। আন্দোলনরত অন্যান্য বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ সকল কর্মসূচির প্রতি ইসলামী আন্দোলনের পূর্ব সমর্থন থাকবে বলেও জানিয়েছেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
লিখিত বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, দলান্ধ নির্বাচন কমিশন ক্ষমতাসীনদের চাহিদামতো তড়িঘড়ি করে বিরোধী দলগুলোকে বাইরে রেখে একটি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পাঁয়তারা করছে। তফসিল ঘোষণা করলে উদ্ভূত পরিস্থিতির দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে।
আওয়ামী লীগের চরিত্রের যে পরিবর্তন হবে না, সর্বশেষ লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নির্বাচন তার বড় প্রমাণ বলেও মনে করেন সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ইসলামের রীতি হলো কোনো শক্ত অবস্থান নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষকে সতর্ক করতে হয়, সময় দিতে হয়। তাঁরাও সরকারকে সময় দিয়েছিলেন।
বিদ্যমান অবস্থায় তফসিল ঘোষণা হলে আপনারা নির্বাচনে যাবেন, কি যাবেন না, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে চরমোনাই পীর বলেন, ‘দুই বছর আগে জাতীয় সমাবেশে ঘোষণা করেছিলাম, সেই অবস্থানের এখন পর্যন্ত ব্যতিক্রম হয়নি, হবে না। আমরা বলেছিলাম, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন যদি জাতীয় নির্বাচনে ঘোষণা করা হয় সেই নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন অংশ নেবে না, যাবে না।’
নির্বাচনে নিতে সরকারের পক্ষ থেকে কেউ যোগাযোগ করেছে কিনা, এমন প্রশ্নে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, সরকার তার দায়িত্ব, হীন স্বার্থ এবং তার পক্ষে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আবার একটা পাতানো নির্বাচন করার জন্য সমস্ত চেষ্টা, চিন্তা সেটা করবেই। সে হিসাবে কেবল আমাদের সঙ্গেই শুধু নয়, সবার সঙ্গে, বিএনপির সঙ্গেও তাঁরা যোগাযোগ করতে পারে। কিন্তু আমাদের পরিষ্কার কথা হলো, সরকার যদি ক্ষমতায় থেকে পাতানো নির্বাচন করতে চায় আমরা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করব না।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মুহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল হুদা ফয়েজী, মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, মাহবুবুর রহমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ।