বিশ্বের দুই বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যকার প্রতিযোগিতামূলক সম্পর্কের অবসান হওয়া দরকার বলে মনে করেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ‘অর্থনৈতিক সুসম্পর্ক পুনঃস্থাপন’ প্রয়োজন।
সান ফ্রান্সিসকোতে চীনের ভাইস প্রধানমন্ত্রী হে লিফেংয়ের সঙ্গে টানা দুই দিনের বৈঠক শেষে গতকাল শুক্রবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, ইউক্রেনে যুদ্ধ চালাতে রাশিয়ার জন্য প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহকারী চীনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বেইজিং যদি ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়, তবে একতরফা ব্যবস্থা নিতে যুক্তরাষ্ট্র পিছপা হবে না।
ইয়েলেন সাংবাদিকদের আরও বলেন, ‘আমরা চীন থেকে আমাদের অর্থনীতিকে বিচ্ছিন্ন করতে চাই না। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দুই দেশের জন্যই এটি ক্ষতির কারণ হবে এবং তা বিশ্বকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রধানমন্ত্রী সি চিন পিং আসন্ন অ্যাপেক (এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন) সম্মেলনে যোগ দেবেন। এর আগে আগেই ইয়েলেন ও হে লিফেংয়ের মধ্যে বৈঠকটি হলো।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেয়াদে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে টানাপোড়েন দেখা দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে সমৃদ্ধ করতে ট্রাম্প বিভিন্ন চীনা পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে শুল্ক আরোপ করেন। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলেও অবস্থার তেমন উন্নতি ঘটেনি। বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব মোকাবিলার অংশ হিসেবে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বেড়ে যাওয়ার পর ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যে টানাপোড়েন আরও বেড়েছে।
তবে উত্তেজনা কমাতে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় বাইডেন প্রশাসন কয়েকটি ছোটখাটো পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন চীন সফর করেছেন। এর ধারাবাহিকতায় অর্থমন্ত্রী ইয়েলেন ও বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমন্ডো চীন সফর করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ইয়েলেন বলেন, সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনার কোনো বিকল্প নেই। আগামী বছর আবারও চীন সফরে যাওয়ার ব্যাপারে ভাইস প্রধানমন্ত্রী হে এবং তিনি একমত হয়েছেন। তবে হেকে সতর্ক করে ইয়েলেন বলেন, ইউক্রেনে হামলার জন্য চীনা কোম্পানিগুলো রাশিয়াকে সহযোগিতা করছে বলে ওয়াশিংটনের কাছে তথ্য আছে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞা কর্মসূচি বহাল রাখার পরও চীনা কোম্পানিগুলো তা উপেক্ষা করছে। তারা রাশিয়ার সেনাবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত সরঞ্জামগুলো দেশটির কাছে সরবরাহ করছে। তবে ইয়েলেন বলেছেন, চীন সরকার এ দুষ্কর্মে সহযোগিতা করছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মনে করে না।