ঢাকা ১১:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নরসিংদীতে গলাকেটে হত্যা

নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মণপাড়ার একটি তিনতলা বাড়ির ছাদে মো. কামরুজ্জামান (৪২) নামের এক যুবককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আসামি রবিন মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তারের আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

রবিন মিয়া শহরের ঘোষপাড়া এলাকার আলী হোসেনের ছেলে। গত বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার গুরু দাসের তিনতলা বাড়ির ছাদে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই মো. শামসুজ্জামান নরসিংদী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে রবিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহত মো. কামরুজ্জামান (৪২) নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া এলাকার মৃত আবদুল হামিদের ছেলে। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশা ছেড়ে তিনি সৌদি আরবে ১০ বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরে কয়েকটি টিউশনি শুরু করেছিলেন। তাঁর আট বছর বয়সী এক মেয়ে ও পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলে আছে।

পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের পরপরই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাড়ির ছাদ থেকে দুটো মুঠোফোন উদ্ধার করে। একটি ভিকটিমের, অপরটি হত্যাকারীর। দুই মুঠোফোনের কললিস্ট সূত্রে পরস্পরের কথোপকথনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ফেলে যাওয়া হত্যাকারীর মুঠোফোনের নিবন্ধন অনুযায়ী তাঁর নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এ ছাড়া স্ক্রিনে থাকা ছবি আর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তির ছবিও মিলে যায়। এর পরপরই প্রযুক্তির সহযোগিতায় রবিনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তারের অভিযানে নামে পুলিশ। গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার মাধবদীর মহিষাশুড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল গাফফার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গাফফার জানান, আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে দেওয়া জবানবন্দিতে রবিন বলেছেন, বুধবার কামরুজ্জামানই তাঁকে কল করে ওই ছাদে ডেকে নেন। কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে কামরুজ্জামান সঙ্গে আনা ছুরি দিয়ে রবিনের হাতে কোপ দেন। পরে ওই ছুরি ছিনিয়ে নিয়ে ধস্তাধস্তির মধ্যে কামরুজ্জামানের গলায় গভীর আঘাত করেন তিনি। একপর্যায়ে পাশের ভবনের ছাদ বেয়ে পালিয়ে যান। জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই ও মামলার বাদী মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘রবিন আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তার সর্বোচ্চ বিচার চাই আমরা।’
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, কামরুজ্জামানকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন রবিন। জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

মামলার এজাহার বলছে, বুধবার রাতে বাড়িটির ছাদে গেলে রাত সোয়া ৯টার দিকে কামরুজ্জামানের গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার ঘটনা ঘটে। পাশের নির্মাণাধীন আরেকটি ভবনে লাফিয়ে পড়ে গলি ধরে দৌড়ে পালিয়ে যান হত্যাকারী। এ সময় কামরুজ্জামান নিজের গলা চেপে ধরে ছাদ থেকে নেমে এলে স্থানীয় লোকজন তাঁর স্বজনদের খবর দেন।

৯টা ২৫ মিনিটে তাঁকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত তাঁকে ঢাকায় পাঠান। অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়ার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাপে পৌঁছার পরই পৌনে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

নরসিংদীতে গলাকেটে হত্যা

আপডেট সময় ১২:৪৫:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ নভেম্বর ২০২৩

নরসিংদী শহরের ব্রাহ্মণপাড়ার একটি তিনতলা বাড়ির ছাদে মো. কামরুজ্জামান (৪২) নামের এক যুবককে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় আসামি রবিন মিয়াকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তারের আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন তিনি।

রবিন মিয়া শহরের ঘোষপাড়া এলাকার আলী হোসেনের ছেলে। গত বুধবার রাত সোয়া ৯টার দিকে পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণপাড়া এলাকার গুরু দাসের তিনতলা বাড়ির ছাদে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই মো. শামসুজ্জামান নরসিংদী মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে রবিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নিহত মো. কামরুজ্জামান (৪২) নরসিংদী শহরের সাটিরপাড়া এলাকার মৃত আবদুল হামিদের ছেলে। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশা ছেড়ে তিনি সৌদি আরবে ১০ বছর প্রবাসজীবন কাটিয়ে সম্প্রতি দেশে ফিরে কয়েকটি টিউশনি শুরু করেছিলেন। তাঁর আট বছর বয়সী এক মেয়ে ও পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলে আছে।

পুলিশ বলছে, হত্যাকাণ্ডের পরপরই পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই বাড়ির ছাদ থেকে দুটো মুঠোফোন উদ্ধার করে। একটি ভিকটিমের, অপরটি হত্যাকারীর। দুই মুঠোফোনের কললিস্ট সূত্রে পরস্পরের কথোপকথনের প্রমাণ পাওয়া যায়। ফেলে যাওয়া হত্যাকারীর মুঠোফোনের নিবন্ধন অনুযায়ী তাঁর নাম-পরিচয় নিশ্চিত হয় পুলিশ। এ ছাড়া স্ক্রিনে থাকা ছবি আর সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তির ছবিও মিলে যায়। এর পরপরই প্রযুক্তির সহযোগিতায় রবিনের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাঁকে গ্রেপ্তারের অভিযানে নামে পুলিশ। গতকাল দুপুরে সদর উপজেলার মাধবদীর মহিষাশুড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল গাফফার।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই গাফফার জানান, আদালতে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে দেওয়া জবানবন্দিতে রবিন বলেছেন, বুধবার কামরুজ্জামানই তাঁকে কল করে ওই ছাদে ডেকে নেন। কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে কামরুজ্জামান সঙ্গে আনা ছুরি দিয়ে রবিনের হাতে কোপ দেন। পরে ওই ছুরি ছিনিয়ে নিয়ে ধস্তাধস্তির মধ্যে কামরুজ্জামানের গলায় গভীর আঘাত করেন তিনি। একপর্যায়ে পাশের ভবনের ছাদ বেয়ে পালিয়ে যান। জানতে চাইলে নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই ও মামলার বাদী মো. শামসুজ্জামান বলেন, ‘রবিন আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে, তার সর্বোচ্চ বিচার চাই আমরা।’
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া জানান, কামরুজ্জামানকে গলা কেটে হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন রবিন। জবানবন্দি দেওয়ার পর আদালতের বিচারক তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

মামলার এজাহার বলছে, বুধবার রাতে বাড়িটির ছাদে গেলে রাত সোয়া ৯টার দিকে কামরুজ্জামানের গলায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার ঘটনা ঘটে। পাশের নির্মাণাধীন আরেকটি ভবনে লাফিয়ে পড়ে গলি ধরে দৌড়ে পালিয়ে যান হত্যাকারী। এ সময় কামরুজ্জামান নিজের গলা চেপে ধরে ছাদ থেকে নেমে এলে স্থানীয় লোকজন তাঁর স্বজনদের খবর দেন।

৯টা ২৫ মিনিটে তাঁকে নরসিংদী সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে দ্রুত তাঁকে ঢাকায় পাঠান। অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়ার পথে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সাহেপ্রতাপে পৌঁছার পরই পৌনে ১০টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।