ফের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত থেকে উদ্ধার হলো বিপুল পরিমাণ সোনার বার। এই ঘটনায় এক চোরাকারবারিকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের আধীনে ৬৮ ব্যাটালিয়নের সীমান্ত চৌকি রানাঘাটের ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যদের হাতে আটক হন ওই ব্যক্তি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা ওই এলাকা থেকে ১৭টি সোনার বারসহ উদ্ধার করেন।
জব্দ করা সোনার ওজন আনুমানিক ১৬.৭ কেজি যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১০ কোটি ২৩ লাখ রুপি বা প্রায় সাড়ে ১৩ কোটি টাকা। এই সোনার বারগুলো চোরাকারবারিরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, তারা গোপন সূত্রে খবর পান যে বিশাল পরিমাণে সোনার বার বেআইনিভাবে পাচারের চেষ্টা হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কমান্ডরের নেতৃত্বে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা দুটি দলে ভাগ হয়ে সন্দেহজনক এলাকায় রাস্তার পাশে লুকিয়ে পাচারকারীদের অপেক্ষা করতে থাকেন।
শনিবার (৪ নভেম্বর) রাত ১১টার সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা একটি সন্দেহজন বাইক আরোহীকে আসতে দেখেন। তার কাছে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। জিজ্ঞাসাবাদের সময় লোকটি কথায় সন্দেহ হওয়ায় তাকে ও তার বাইকটিতে চিরুনি তল্লাশি শুরু করেন। সে সময় ওই ব্যক্তির কোমরে বাঁধা কাপড়ের বেল্টের ভেতরে ১৭টি সোনার বার পাওয়া যায়। সঙ্গে সঙ্গেই সোনার বার বাজেয়াপ্ত করা হয় এবং ওই বাইক চালককে আটক করা হয়।
আটক আজর মন্ডলের বয়স ২৭ বছর। তিনি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার রাজকোল গ্ৰামের বাসিন্দা। জিজ্ঞাসাবাদে আজর মন্ডল বলেন, আমি ফুল চাষি। গত ছয় মাস ধরে সীমান্তে পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে জানান। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মাটিলা গ্ৰামের বাসিন্দা আলম মন্ডলের কাছ থেকে এই সোনার বার নিয়েছিলেন তিনি এবং পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁয় হস্তান্তর করতে যাচ্ছিলে। কিন্তু পথে তল্লাশির সময় সীমান্তরক্ষী বাহিনী সোনার বারসহ তাকে গ্ৰেফতার করে।
আটক ওই ব্যক্তি এবং জব্দকৃত সোনা পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য কলকাতা শুল্ক দপ্তরের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এর আগে গত সেপ্টেম্বরেও রানাঘাট সীমান্ত চৌকির সদস্যরা ২৩ কেজি সোনার একটি বিশাল চালান আটক করে এবং এক পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়। চলতি বছরের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা এখন পর্যন্ত ১৫০ কেজি সোনা বাজেয়াপ্ত করেছে। এ বিষয়ে দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিআইজি এ কে আর্য জানান, কুখ্যাত চোরাকারবারীরা গরীব ও নিরীহ মানুষকে অল্প পরিমাণ অর্থের প্রলোভন দিয়ে ফাঁদে ফেলে। কুখ্যাত চোরাকারবারীদের দল সরাসরি চোরা চালানোর মতো অপরাধে জড়িত না হয়ে তারা দরিদ্র মানুষকে টার্গেট করে।
তিনি সীমান্তে বসবাসকারী লোকজনের কাছে আবেদন করেন, সোনা চোরাচালন সংক্রান্ত কোনো তথ্য তাদের নজরে এলে তারা যেন বিএসএফের সীমান্ত সাথী হেল্পলাইনে জানান। সঠিক তথ্য প্রদানকারী ব্যক্তিকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জানানো হয়।