আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতের মহাসমাবেশ কে কেন্দ্র করে। গণপরিবহন সংকটে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরাও।আমিনবাজার এলাকায় দূরপাল্লার বাস থামিয়ে তল্লাশি চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বিভিন্ন পরিবহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সকাল থেকে দীর্ঘ সময় নিয়ে তল্লাশি করার কারণে অনেক যাত্রী পায়ে হেঁটে ঢাকা প্রবেশ করা শুরু করেন। পরে গাবতলী সেতু পার হয়ে আরেক দফায় পুলিশের জেরার মুখে পড়েন অনেকে।
যাত্রীদের অভিযোগ জিজ্ঞাসাবাদের নামে অযথাই হয়রানি করা হচ্ছে। পুলিশ সদস্যরা যাত্রীদের মুঠোফোন চেক করে দেখছেন। এছাড়া ঢাকায় আসার যৌক্তিক কারণ দেখাতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় আইডি কার্ড ও কাগজপত্র না দেখাতে পারলে আটক করা হচ্ছে। শুধু দূরপাল্লার গণপরিবহন নয় চেক নয় ঢাকার অভ্যন্তরেও পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। ফলে ঢাকার অভ্যন্তরেও যাত্রীরা গণপরিবহনে চড়তে পারছেন না। শনিবার (২৮ অক্টোবর) ঢাকার গাবতলী ব্রিজ, আমিন বাজার ও আশপাশের শহরের কয়েকটি এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
গাবতলী সেতুর পাশে পর্বত সিনেমা হলের সামনে বসানো হয়েছে পুলিশের তল্লাশি চৌকি। গাড়ি না থাকায় অফিসযাত্রীসহ নানা কাজে ঢাকায় আসা যাত্রীদের পায়ে হেঁটে গন্তব্যের দিকে রওয়ানা হতে হয়। রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশাসহ অন্য কোনো যানবাহনও প্রায় নেই সকাল থেকে। ফলে ঢাকার অভ্যন্তরে ও দূরপাল্লার গণপরিবহন থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্ন যাত্রীরা।
গাবতলীতে বাস প্রবেশে বাধা থাকলেও ঢাকা থেকে ছেড়ে যেতে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু যাত্রীশূন্য গাবতলীতে কেবল দেখা যাচ্ছে চালক ও হেলপারদের। একজন যাত্রী আসলে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়ছে। যাত্রী শুন্যতার কারণে গাবতলী থেকেও বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। এছাড়া ঢাকায় যে সব বাস প্রবেশ করছে সে সব বাস কয়েকটি স্থানে তল্লাশির মুখে পড়ছে। ফলে ঢাকায় দূরপাল্লার বাস প্রবেশে নানা জটিলতা তৈরি হয়েছে।
গাবতলীর কাউন্টারের কর্মীরা জানান, সকাল থেকে কাউন্টার বন্ধ রাখতে হয়েছিল। রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে যাত্রী আসেনি। ভয়ে আর আতঙ্কে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে না। ঢাকার ভেতরেও যানবাহন কম। যে কারণে অনেক যাত্রীর প্রয়োজন হলেও গাবতলী আসতে পারছেন না। সকাল ৬টা ৩০ মিনিটে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের উদ্দেশ্যে কমফোর্ট পরিবহন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্ত যাত্রী না পাওয়ার কারণে বাসটি ছেড়ে যায়নি। অধিকাংশ কাউন্টার বন্ধ। কাউন্টার মাস্টার মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, মানুষ ভয় আর আতঙ্কে ঘর থেকে বের হয় না। ঢাকার অভ্যন্তরেও যানবাহন কম। যে কারণে আমরা যাত্রী পাচ্ছি না। যাত্রী না পাওয়ার কারণে গাড়ি ছাড়তে পারছি না।
অথচ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি আগে থেকেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমাবেশের দিনও সব যানবাহন চলাচল করবে। কিন্তু পরিবেশ পরিস্থিতি এমনভাবে তৈরি হয়েছে কার্যত গণপরিবহন ব্যবহার করতে পারছেন না যাত্রীরা। পুলিশের তল্লাশি ও ঢাকার অভ্যন্তরে কয়েকটি জায়গায় পুলিশের ব্যারিকেডের কারণেই পরিবহন থেকে মূলত বিচ্ছিন্ন যাত্রীরা।
তবে এ বিষয়ে বার বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েতুল্লাহ খানের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। সযদিও শুক্রবার এনায়েতুল্লাহ খান বলেন, পরিবেশ ঠিক থাকলেও শুধু দূরপাল্লা নয় ঢাকার অভ্যন্তরেও সব ধরনের পরিবহন চলাচল করবে।