ঢাকা ০৭:০৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :
Logo আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি Logo ইউক্রেনের প্রথম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল রাশিয়া Logo সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়াকে সম্ভাষণ জানালেন ড. ইউনূস Logo সুমন হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুলবুল গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার Logo সাফ চ্যাম্পিয়ন তিন নারী খেলোয়াড়কে সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা Logo আপত্তিকর ভিডিও ধারণের অভিযোগ তিশার Logo আমরা সব রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব বজায় রাখব : প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস Logo নতুন আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব পেলেন বাহারুল আলম Logo সিরিয়ার ঐতিহ্যবাহী পালমিরা শহরে ইসরায়েলি ভয়াবহ হামলায়, নিহত ৩৬, আহত ৫০ Logo ঢাকায় ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় চালকদের বিক্ষোভ

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় চার সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করলেও এখন কাজ শুরু হয়নি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে সরকারের তিন বিভাগ থেকে গঠন করা চারটি তদন্ত কমিটির কোনোটি এখন পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে তদন্তকাজ শুরু করেনি। তবে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু না হলেও দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির সদস্যদের ভাষ্য, প্রাথমিকভাবে তাঁরা নিশ্চিত দুর্ঘটনার কারণ ‘সিগন্যাল’ অমান্য। এ ক্ষেত্রে মালবাহী ট্রেনের চালকের ভুলের বিষয়টি সামনে আসছে। বলা হচ্ছে, ভৈরব স্টেশনের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে মালবাহী ট্রেনটিকে আউটার কিংবা হোম—দুটির কোনোটিতেই সবুজবাতি ছিল না। জ্বালানো ছিল লাল বাতি। দুটি সিগন্যাল অমান্য করে চালক ২ নম্বর লাইন থেকে ক্রস করে ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। মাঠপর্যায়ে তদন্তের সময় এ বিষয়কে মাথায় রেখে সামনে এগোবেন তাঁরা।

এদিকে চারটি তদন্ত কমিটির সর্বশেষ তদন্ত কমিটি করা হয় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তিন সদস্যের এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক হাবিবুর রহমানকে।

এর আগে দুর্ঘটনার দিন বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে করা হয় দুটি তদন্ত কমিটি। একটির প্রধান বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাসান মাহমুদ। এ কমিটি তিন সদস্যের। অপর কমিটির প্রধান রেলওয়ে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা। এ কমিটি পাঁচ সদস্যের। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস থেকে করা আরও একটি তদন্ত কমিটি আছে। পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রধান লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম।

দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ের পর আজ বুধবার সকাল থেকে ট্রেনগুলো সময়সূচি ধরে চলাচল করছে। ভৈরব স্টেশন রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার পর আখাউড়া ও ঢাকা থেকে আসা দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন ১৫ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে লাইন পুরোপুরি ট্রেন চলাচলের উপযোগী করেছে। তবে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছিল। আজ সকাল থেকে শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। ঢাকাগামী আন্তনগর এগারসিন্ধুর ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে। ট্রেনটি ১০ মিনিট বিলম্বে ভৈরব স্টেশন ছাড়ে। সিলেটগামী আন্তনগর পারাবত ৯ মিনিট বিলম্বে ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যায়। চট্টগ্রামগামী আন্তনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার সময় ৯টা ১৮ মিনিট। ট্রেনটি স্টেশন ছেড়েছে ১৪ মিনিট দেরিতে।

ভৈরব স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, আজ সকাল থেকে শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। সকাল থেকে ট্রেনগুলো সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট বিলম্বে ভৈরব স্টেশন অতিক্রম করছে। তবে এখনো দুর্ঘটনাস্থল দিয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটারে চলাচল করানো হচ্ছে। রেললাইনের পাশে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগি সরিয়ে রাখা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে ভৈরব রেলস্টেশন এলাকায়
রেললাইনের পাশে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগি সরিয়ে রাখা হয়েছে।
রেলওয়ের একাধিক সূত্রে জানা যায়, তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এখন পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু না করায় মাঠের প্রকৃত আলামত পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। জানানো হয়েছে, রেলওয়ের তদন্ত কমিটি মাঠপর্যায়ে আসবে না। ঢাকা ও চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্য নেওয়া হবে। আজ কয়েকজনকে চট্টগ্রামে তলব করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডাকা হতে পারে ঢাকায়।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা কমিটির সদস্য ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান। তিনি আজ সকালে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের কমিটি আজ দিনের যেকোনো সময় থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করবে। তবে মাঠের কাজ শুরু না হলেও আমরা মোটামুটি নিশ্চিত দুর্ঘটনাটি মূলত সিগন্যাল অমান্য করার কারণে হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সিগন্যাল অমান্যে চালকের ভুল ছিল নাকি নিয়ন্ত্রণকক্ষের ত্রুটি ছিল।’

তবে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, সিগন্যালে ভৈরব নিয়ন্ত্রণকক্ষের ত্রুটি ছিল না। ভৈরব নিয়ন্ত্রণকক্ষের সিগন্যাল প্যানেল আধুনিক প্রযুক্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। দুর্ঘটনার সময় নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বে ছিলেন কেবিন স্টেশনমাস্টার (গ্রেড-৪) জহুরুন্নেছা। তিনি বলেন, ঢাকাগামী এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে ছেড়ে যাওয়ার জন্য বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দৌলতকান্দি স্টেশন নিয়ন্ত্রণকক্ষের অনুমতির জন্য বার্তা পাঠানো হয়। এক মিনিট পর ঠিক ‘লাইন ক্লিয়ারের’ ফিরতি বার্তা আসে।

এরপর এগারসিন্দুর ট্রেনটি ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যেতে সবুজবাতি জ্বালানো হয়। ট্রেনটি তখন স্টেশনের ৩ নম্বর লাইনে অবস্থান করছিল। ঠিক বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে ৩ নম্বর লাইন থেকে ১ নম্বর লাইন অতিক্রম করছিল এগারসিন্দুর। সেই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রেনটির ‘হোম সিগন্যালে’ প্রবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। কিন্তু চালক সিগন্যাল অমান্য করে ২ নম্বর লাইন থেকে ১ নম্বর লাইনে ক্রস করেন। এতেই এগারসিন্দুর ট্রেনের পেছনের দুটি বগির সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটে।

গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ঢাকায় উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনের দুই বগির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়ছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এ ঘটনায় মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনায় চার সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করলেও এখন কাজ শুরু হয়নি

আপডেট সময় ১২:২৯:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৩

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে সরকারের তিন বিভাগ থেকে গঠন করা চারটি তদন্ত কমিটির কোনোটি এখন পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে তদন্তকাজ শুরু করেনি। তবে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু না হলেও দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে বলে তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।

তদন্ত কমিটির সদস্যদের ভাষ্য, প্রাথমিকভাবে তাঁরা নিশ্চিত দুর্ঘটনার কারণ ‘সিগন্যাল’ অমান্য। এ ক্ষেত্রে মালবাহী ট্রেনের চালকের ভুলের বিষয়টি সামনে আসছে। বলা হচ্ছে, ভৈরব স্টেশনের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে মালবাহী ট্রেনটিকে আউটার কিংবা হোম—দুটির কোনোটিতেই সবুজবাতি ছিল না। জ্বালানো ছিল লাল বাতি। দুটি সিগন্যাল অমান্য করে চালক ২ নম্বর লাইন থেকে ক্রস করে ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করার কারণে দুর্ঘটনা ঘটে। মাঠপর্যায়ে তদন্তের সময় এ বিষয়কে মাথায় রেখে সামনে এগোবেন তাঁরা।

এদিকে চারটি তদন্ত কমিটির সর্বশেষ তদন্ত কমিটি করা হয় গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। তিন সদস্যের এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক হাবিবুর রহমানকে।

এর আগে দুর্ঘটনার দিন বাংলাদেশ রেলওয়ে থেকে করা হয় দুটি তদন্ত কমিটি। একটির প্রধান বাংলাদেশ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হাসান মাহমুদ। এ কমিটি তিন সদস্যের। অপর কমিটির প্রধান রেলওয়ে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা। এ কমিটি পাঁচ সদস্যের। এ ছাড়া ফায়ার সার্ভিস থেকে করা আরও একটি তদন্ত কমিটি আছে। পাঁচ সদস্যের কমিটির প্রধান লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম।

দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভয়াবহ শিডিউল বিপর্যয়ের পর আজ বুধবার সকাল থেকে ট্রেনগুলো সময়সূচি ধরে চলাচল করছে। ভৈরব স্টেশন রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুর্ঘটনার পর আখাউড়া ও ঢাকা থেকে আসা দুটি উদ্ধারকারী ট্রেন ১৫ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে লাইন পুরোপুরি ট্রেন চলাচলের উপযোগী করেছে। তবে ট্রেন চলাচল শুরু হলেও শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছিল। আজ সকাল থেকে শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে পেরেছে। ঢাকাগামী আন্তনগর এগারসিন্ধুর ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে। ট্রেনটি ১০ মিনিট বিলম্বে ভৈরব স্টেশন ছাড়ে। সিলেটগামী আন্তনগর পারাবত ৯ মিনিট বিলম্বে ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যায়। চট্টগ্রামগামী আন্তনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার সময় ৯টা ১৮ মিনিট। ট্রেনটি স্টেশন ছেড়েছে ১৪ মিনিট দেরিতে।

ভৈরব স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, আজ সকাল থেকে শিডিউল বিপর্যয় কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়েছে। সকাল থেকে ট্রেনগুলো সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট বিলম্বে ভৈরব স্টেশন অতিক্রম করছে। তবে এখনো দুর্ঘটনাস্থল দিয়ে ট্রেনের গতি কমিয়ে সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটারে চলাচল করানো হচ্ছে। রেললাইনের পাশে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগি সরিয়ে রাখা হয়েছে। বুধবার বেলা ১১টার দিকে ভৈরব রেলস্টেশন এলাকায়
রেললাইনের পাশে দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের বগি সরিয়ে রাখা হয়েছে।
রেলওয়ের একাধিক সূত্রে জানা যায়, তদন্তসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এখন পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু না করায় মাঠের প্রকৃত আলামত পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে পারেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের সাক্ষাৎ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। জানানো হয়েছে, রেলওয়ের তদন্ত কমিটি মাঠপর্যায়ে আসবে না। ঢাকা ও চট্টগ্রামে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ভাষ্য নেওয়া হবে। আজ কয়েকজনকে চট্টগ্রামে তলব করা হয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডাকা হতে পারে ঢাকায়।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা কমিটির সদস্য ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাদিকুর রহমান। তিনি আজ সকালে বলেন, ‘জেলা প্রশাসনের কমিটি আজ দিনের যেকোনো সময় থেকে মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করবে। তবে মাঠের কাজ শুরু না হলেও আমরা মোটামুটি নিশ্চিত দুর্ঘটনাটি মূলত সিগন্যাল অমান্য করার কারণে হয়েছে। এখন দেখার বিষয়, সিগন্যাল অমান্যে চালকের ভুল ছিল নাকি নিয়ন্ত্রণকক্ষের ত্রুটি ছিল।’

তবে নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে স্পষ্ট করে জানানো হয়েছে, সিগন্যালে ভৈরব নিয়ন্ত্রণকক্ষের ত্রুটি ছিল না। ভৈরব নিয়ন্ত্রণকক্ষের সিগন্যাল প্যানেল আধুনিক প্রযুক্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। দুর্ঘটনার সময় নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বে ছিলেন কেবিন স্টেশনমাস্টার (গ্রেড-৪) জহুরুন্নেছা। তিনি বলেন, ঢাকাগামী এগারসিন্দুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে ছেড়ে যাওয়ার জন্য বেলা ৩টা ২৫ মিনিটে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার দৌলতকান্দি স্টেশন নিয়ন্ত্রণকক্ষের অনুমতির জন্য বার্তা পাঠানো হয়। এক মিনিট পর ঠিক ‘লাইন ক্লিয়ারের’ ফিরতি বার্তা আসে।

এরপর এগারসিন্দুর ট্রেনটি ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যেতে সবুজবাতি জ্বালানো হয়। ট্রেনটি তখন স্টেশনের ৩ নম্বর লাইনে অবস্থান করছিল। ঠিক বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে ৩ নম্বর লাইন থেকে ১ নম্বর লাইন অতিক্রম করছিল এগারসিন্দুর। সেই সময় বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রেনটির ‘হোম সিগন্যালে’ প্রবেশের কোনো অনুমতি ছিল না। কিন্তু চালক সিগন্যাল অমান্য করে ২ নম্বর লাইন থেকে ১ নম্বর লাইনে ক্রস করেন। এতেই এগারসিন্দুর ট্রেনের পেছনের দুটি বগির সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনা ঘটে।

গত সোমবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ভৈরব রেলস্টেশন থেকে ঢাকায় উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া আন্তনগর এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ট্রেনের পেছনের দুই বগির সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়ছেন। আহত হয়েছেন শতাধিক মানুষ। এ ঘটনায় মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।