গতকাল শুক্রবার ইতালির প্রধান মন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানিয়েছেন, টেলিভিশন সাংবাদিক আন্দ্রেয়া গিয়ামব্রুনোর সঙ্গে তাঁর আর সম্পর্ক নেই। তাঁরা দুজন এখন আলাদা হয়ে গেছেন। এ থেকে তাদের ১০ বছরের সর্ম্পকের সমাপ্তি ঘটল । সম্প্রতি বিতর্কিত মন্তব্য করে তুমুল সমালোচিত হয়েছিলেন আন্দ্রেয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক পোস্টে গতকাল ৪৬ বছর বয়সী জর্জিয়া মেলোনি লিখেন, ‘আন্দ্রেয়ার সঙ্গে আমার সম্পর্ক প্রায় ১০ বছরের। এটা এখানেই শেষ হচ্ছে। আমাদের পথ ভিন্ন হয়েছে এবং এটা স্বীকার করার সময় এসেছে।’ আন্দ্রেয়া–মেলোনির ৭ বছরের একটি মেয়েসন্তান রয়েছে।
ইতালির মিডিয়াসেট চ্যানেলের সাংবাদিক ও সংবাদ উপস্থাপক আন্দ্রেয়া। এই চ্যানেলটি ইতালির সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনির এমএফই মিডিয়া গ্রুপের মালিকানাধীন। মেলোনির রাজনৈতিক মিত্র ছিলেন বেরলুসকোনি। একটি দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ভুক্তভোগীকে দায়ী করে মন্তব্য করায় গত আগস্ট মাসে সমালোচিত হয়েছিলেন আন্দ্রেয়া। পরে নিজের চ্যানেলে অনুষ্ঠানের ফাঁকে নারী সহকর্মীর প্রতি অশ্লীল মন্তব্য নিয়েও তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়।
জর্জিয়া মেলোনির জন্ম ১৯৭৭ সালে। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি ইতালির রাজনৈতিক দল মোভিমেন্তো সোশিয়ালে ইতালিয়ানোর (এমএসআই) তরুণদের সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দলটি গড়ে তুলেছিলেন ইতালির ফ্যাসিবাদী শাসক বেনিতো মুসোলিনির অনুসারীরা।
২০১২ সালে রাজনৈতিক জীবনে সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত নেন তিনি—ফ্রাতেল্লি দি’ ইতালিয়ার প্রতিষ্ঠা। জাতীয়তাবাদ, রক্ষণশীলতা ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে সংশয়ের আদর্শে গড়ে ওঠে কট্টর ডানপন্থী এ রাজনৈতিক দল। আন্তর্জাতিক আর্থিক বাজার, অভিবাসী ও সমকামীদের অধিকার নিয়ে খোলাখুলিভাবে অসহিষ্ণুতা দেখিয়েছে দলটি। মেলোনির অতি রক্ষণশীল ও জাতীয়তাবাদী আচরণ তাঁকে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। ২০২২ সালের অক্টোবরে তিনি ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হন।