নওগাঁয় বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সামনেই গড়ে উঠেছে একের পর এক কোচিং সেন্টার। দেয়া হচ্ছে এ প্লাসসহ গোল্ডেন জিপিএ পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা।
অভিযোগ আছে এসব কোচিং সেন্টার পরিচালনায় জড়িত বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষিকারা। আর সেখানে শিক্ষার্থীদের টানছেন তারাই। অভিভাবকরা বলছেন, প্রশাসনের নজরদারির অভাবেই বাড়ছে কোচিং সেন্টারগুলোর বাণিজ্য।
শহরের বিভিন্ন অলিগলিতে টাঙানো হয়েছে চটকদার বিজ্ঞাপন। দেয়া হচ্ছে এ প্লাসসহ গোল্ডেন জিপিএ পাওয়ার শতভাগ নিশ্চয়তা। আর এতে আকৃষ্ট হয়ে বিদ্যালয় ছেড়ে শিক্ষার্থীরা ছুটছে কোচিং সেন্টারের দিকে ।
নওগাঁয় প্রশাসনের ছাড়পত্র বা নির্দেশনা ছাড়াই এসব কোচিং সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। ৩ মাস বা ৬ মাসের প্যাকেজে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে চলছে রমরমা বাণিজ্য । অভিভাবকরা বলছেন, শিক্ষা নিয়ে এমন বাণিজ্যের লাগাম এখনই টেনে না ধরলে, বিদ্যালয় ছেড়ে কোচিংমুখী হবে শিক্ষার্থীরা। শহরের কেডি’র মোড়একস্ট্র ট্যালেন্ট কোচিং সেন্টারে আসা একাধিক অভিভাবক জানান যদি ক্লাসে ঠিক মতো পড়ানো হতো তাহলে কোচিং করানো দরকার হতোনা । একদিকে নিত্য পন্যের চড়াদাম তার উপর সাবজেক্ট অনুযায়ী কোচিং করানো অনেক টাকা খরচ হচ্ছে । বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এভাবেই সাইন বোর্ড দিয়ে কোচিং করাচ্ছেন ।
বিদ্যালয়গুলোতে ঠিকমতো ক্লাস না করে তাদের কোর্চিং প্রতিষ্টানে শিক্ষার্থীদের টানার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে । শহরের কেডি’র মোড়, তাজের মোড়ে মুক্তির মোড়ে একাধিক বাসা ভাড়া নিয়ে সেখানে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোচিং চালাচ্ছেন । এ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে জেলা স্কুল, কেডি উচ্চ বিদ্যালয়, সীমান্ত উচ্চ বিদ্যালয়, ও বিয়াম,ল্যাবরেটরি উচ্চ বিদ্যালয় । নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, স্যারের কাছে প্রাইভেট না পড়লে মার্ক কম দেয় । তা ছাড়া ক্লাসে ঠিক মতো ভালো আচড়ন করে না । তাই বাধ্য হয়েই তাদের বাসা বাড়ীতে কোচিং করতে হচ্ছে ।
এদিকে কোচিং প্রতিষ্টান গুলো এখন খুব ভালো চলছে না বলে দাবী করেছেন কোর্চি এসোশিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সবুজ হোসেন । তিনি বলেন, যেখানে কিছু বেকারের কর্মসংস্থান হতো সে জায়গায় এখন শহরের সব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ কাজে নেমেছে । কারণ তাদের হাতে ৪০ মার্ক রয়েছে । ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছে পড়তে বাধ্য হচ্ছে । নওগাঁ কেডি উচ্চ বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো: মামুনুর রহমান বলেন কোর্চিং করানোর নীতিমালা রয়েছে । তবে তা সরকারী ফি দিয়ে বিদ্যালয়ে ১০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে । কোন ভাবেই বাণিজ্যক ভাবে করানো যাবে না । তিনি বলেন আমার বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সব সময় বিষয় টি নিয়ে জানানো হয় ।
বিদ্যালয়ের কোন শিক্ষকের কোচিং সেন্টারে জড়িত থাকা ও এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারি নীতিমালা মানা না হলে ব্যবস্থা নেয়ার গতানুগতিক আশ্বাস শিক্ষা কর্মকর্তার ।
নওগাঁ জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো: লুৎফর রহমান বলেন, নতুন নীতিমালায় কোন ভাবেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা কোচিং কারবার করতে পারবে না তা স্পষ্ট করা হয়েছে । যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।
সব শেষ ২০১২ সালের কোচিং নীতিমালায় বলা হয়েছে কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা কোচিং প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা ও এর সাথে যুক্ত হতে পারবেন না।
(কোচিং মালিক সমিতির তথ্য বলছে জেলায় সমিতির আওতায় রয়েছে ৪৪ টি । কিন্ত জেলা ছাড়াও প্রান্তিক পর্যায়ে পরিচালনা হচ্ছে ছোট বড় সাড়ে ৪শ প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ।