খাদ্য সংকট মোকাবেলায় যখন উৎপাদন বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে, তখন একের পর এক বাড়ছে কৃষি উপকরণের দাম। সবশেষ বাড়ানো হলো সব ধরনের বীজের দাম। বিএডিসির নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সব বীজের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত।
বীজসহ কৃষি উপকরণের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে এখন দিশেহারা কৃষক। কৃষি অর্থনীতিবিদদের মতে, এমন পরিস্থিতিতে স্থানীয়ভাবে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি তো সম্ভবই নয়, বরং কৃষক জমি চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে।চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বজুড়ে তীব্র হচ্ছে খাদ্য সংকট। আর এর প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশেও। পরিস্থিতি সামাল দিতে, তাই স্থানীয়ভাবে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির তাগিদ আসছে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকেও।
কিন্তু উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অন্যতম ভরসা কৃষি একং কৃষকের কপালে এখন চিন্তার ভাঁজ। কৃষি উপকরণের চড়ামূল্যের বাজারে নতুন করে বীজের দাম বৃদ্ধিতে দিশেহারা কৃষক।
গত ১৮ অক্টোবর ধান, গম, ভুট্টা, সরিষাসহ বিভিন্ন শস্যবীজের নতুন দাম বেধে দিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। এতে ডিলার ও কৃষকদের আগের চেয়ে অনেক বেশি দামে কিনতে হবে।ধান থেকে শুরু করে গম, ভুট্টা, ডাল, সরিষাসহ বিভিন্ন ধরনের শস্যবীজ আছে দাম বৃদ্ধির তালিকায়। গবেষকদের আশঙ্কা, বীজসহ কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধির ফলে কৃষক উৎপাদনে নিরূৎসাহিত হতে পারেন।
২০২২-২৩ বিতরণ বর্ষের জন্য ধানবীজের দাম প্রকারভেদে (১০ কেজির বস্তা) ৫৭০ থেকে ৭৫০ টাকা নির্ধারণ হয়। গত বছর চাষি পর্যায়ে এ দর ছিল ৫২০ থেকে ৬৩০ টাকা। ২০২০ সালে দাম ছিল ৪১০ থেকে ৫৮০ টাকা। দাম বেড়েছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা।
কৃষি অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বীজের দাম বেড়েছে ২০-৩০ শতাংশ। এর আগে জ্বালানি তেল ও সারের দাম বেড়েছে। উপকরণের মূল্য এভাবে বাড়তে থাকলে কৃষক হতাশ হবে এটাই স্বাভাবিক। তারা উৎপাদনে নিরুৎসাহিত হবে। উৎপাদন খরচ বেড়ে গেলে কৃষক জমি চাষ না করে খালি ফেলে রাখবে।
খাদ্য সংকট মোকাবেলায় উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নেই, তাই বীজসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম কমানোর পাশাপাশি কৃষিবান্ধব কৌশল নিতে হবে।সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, সারের সরবরাহ ব্যবস্থা, সামনের দিনে বিদ্যুতের দাম স্থিতিশীল রাখার জন্য আমাদেরকে আগে থেকে প্রস্তুত থাকতে হবে। সবধরনের সহযোগিতা করার জন্য সরকারকে প্রস্তুত থাকতে হবে।