লাউ বা কুমড়া নয়, মাচায় জাল দিয়ে মোড়ানো ব্যাগের ভেতরে ঝুলে আছে হলুদ-সবুজ-ডোরাকাটা রসালো তরমুজ। অসময়ে উৎপাদিত এই তরমুজ নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখছেন বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের চাকলমা গ্রামের কৃষক জাব্বির হোসেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষেতের চারদিকে বেড়িবাঁধের মতো উঁচু মাটির ঢাল। সেই ঢালে মাচায় শত শত তরমুজ ঝুলে আছে। তরমুজগুলোর রং বাহারি। কোনোটির গায়ে ডোরাকাটা দাগ, কোনোটি কালচে সবুজ, কোনোটি আবার হলুদ। ফলগুলোর ভেতরের রংয়েও পার্থক্য আছে। কাটলে টকটকে লাল বা পাকা মাল্টার মতো কমলা রং দেখা যাবে।
স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শে জাব্বির হোসেন ‘তৃপ্তি’, ‘সুইট ব্ল্যাক’ বা কালো জাত ও ‘গোল্ডেন ক্রাউন’ বা হলুদ জাতের তরমুজ চাষ করেছেন। এ বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শাহাদত। তিনি জাব্বিরকে তরমুজ চাষের জন্য উন্নত জাতের বীজ সংগ্রহ করে দেন।
কৃষক জাব্বির হোসেন জানান, পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র ২০ শতক জমিতে বীজ লাগানো হয়েছে। রোপণের ৪৪ দিনের মাঝে তরমুজে ফুল ও ফল আসে। বর্তমানে প্রায় এক হাজার ৫০০ তরমুজ রয়েছে তার জমিতে। এর মাঝে দুই থেকে তিন কেজি ওজনের তরমুজও আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আর ১৫ থেকে ২০ দিন পরই তিনি তরমুজ সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি করতে পারবেন। এই তরমুজ উৎপাদনে তিনি প্রাকৃতিক জৈব সার ব্যবহার করেছেন। কোনো বিষ এতে প্রয়োগ করা হয়নি। পোকামাকড় নিধনের জন্য তিনি ফেরোমন, ফাঁদ ও ইয়োলো কালার ট্যাপ পদ্ধতি অনুসরণ করেছেন। এসবই তিনি করেছেন কৃষি অফিসের পরামর্শে। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩৭ হাজার টাকার মতো।
এখন বাজারে প্রতি কেজি তরমুজ ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা পাইকারী দরে বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। সেই হিসাব করে লাভের আশায় কৃষক জাব্বির হোসেনের মুখে হাসি ফুটেছে। তিনি বলেন, পরিশ্রম করলে তার ফল আসবেই। কৃষক জাব্বির হোসেন তার প্রমাণ। এই কৃষক সামান্য জমিতে তরমুজের বাম্পার ফলন করে উপজেলায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।