ইরানসহ বিশ্বব্যাপী আজ (শুক্রবার) উদযাপিত হচ্ছে বিশ্ব কুদস দিবস। ইহুদিবাদীদের কবল থেকে মুসলমানদের প্রথম ক্বেবলাসমৃদ্ধ নগরী জেরুজালেম আল-কুদসকে মুক্ত করার প্রত্যয় নিয়ে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের স্থপতি ইমাম খোমেনী (রহ.) ১৯৭৯ সালে প্রথম এ দিবস পালন করার কথা ঘোষণা করেন।
তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে তখন থেকে প্রতি বছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবার বিশ্ব কুদস দিবস হিসেবে পালিত হয়ে এসেছে। এ দিবসে বিশ্বের মুসলমানরা ইসরাইল বিরোধী বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন এবং আমেরিকা ও ইসরাইলের পতাকায় অগ্নিসংযোগ করেন। তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলের দখলদারিত্ব থেকে আল-কুদসকে মুক্ত করার শপথ নেন।
আল-কুদস দিবস বা আন্তর্জাতিক আল-কুদস দিবস। প্রতি বছর রমজান মাসের শেষ শুক্রবার পালিত হয়ে থাকে, যা ১৯৭৯ সালে ইরানে শুরু হয়েছিল।এই দিবস পালনের উদ্দেশ্য হলো ফিলিস্তিনী জনগণের সাথে একাত্মতা প্রকাশ, জায়নবাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ এবং ইসরাইল কর্তৃক জেরুযালেম দখলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ।-সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
সমগ্র ইরানজুড়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিল। মিছিলে যোগ দেয় ইরানের সর্বস্তরের জনগণ। তেহরানের রোজাদার জনগণ আজ বিশ্ব কুদস দিবসের মিছিলে ফিলিস্তিনি জনগণের প্রতি যথারীতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করে। মিছিল চলাকালে তারা ইহুদিবাদী ইসরাইলের অপরাধ মোকাবেলার আহ্বান জানিয়ে একটি দীর্ঘ পিটিশনে স্বাক্ষর করে।
প্রতি বছর রমজানের শেষ শুক্রবার বিশ্বব্যাপী কুদস দিবস পালিত হয়। ইরানের ইসলামি বিপ্লবের রূপকার মরহুম ইমাম খোমেনি ওই কুদস দিবস পালনের আহ্বান জানান। ফিলিস্তিনের মৌলিক সমস্যা বিশ্বব্যাপী তুলে ধরে তাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করা এবং কুদস শরিফকে দখলদারদের কবল থেকে মুক্ত করার পাশাপাশি শক্তিশালী মুসলিম ঐক্য গড়ে তোলাই ছিল কুদস দিবস পালনের উদ্দেশ্য।
ইরানে অনুষ্ঠিত আজকের কুদস মিছিলের রূপ ছিল একেবারেই ভিন্ন রকমের। করোনার কারণে বিগত দুই বছর কুদস দিবসের মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছেল গাড়ির মাধ্যমে। এ বছর জনগণের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সমগ্র ইরানজুড়ে অনুষ্ঠিত হয় কুদস দিবসের মিছিল।
কেবল ইরানেই নয় ফিলিস্তিনি জনগণের সমর্থনে সারা বিশ্বের আনাচে কানাচে অনুষ্ঠিত হয়েছে কুদস দিবসের মিছিল। তেহরানের ইহুদি স্বদেশীরাও প্যালেস্টাইন স্ট্রিটের সিল্ক সিনাগগের সামনে কুদস দিবসের মিছিলে যোগ দিয়েছে। ইরানের পার্লামেন্টে ইহুদি প্রতিনিধি সামে ইয়াহ নাজাফাবাদী বলেছেন: কুদস দিবস হলো বিশ্বের সকল গণতন্ত্রকামী মানুষের সহানুভূতির দিন।
তিনি এই দিবসের গুরুত্ব সম্পর্কে আরও বলেন, কুদস দিবস কেবল বিশ্ব মুসলমানেরই নয় বরং ইসরাইলের মোকাবেলায় বিক্ষুব্ধ এবং ফিলিস্তিনের মুক্তিকামী বিশ্বের সকল জাগ্রত বিবেকের অধিকারী মানুষের।
নাজাফাবাদী আরও বলেন: কুদস হল ফিলিস্তিনের নিপীড়িত জনগণের সাথে সংহতি প্রকাশের দিন, ফিলিস্তিনের দুর্দশাগ্রস্ত জনগণকে উত্সাহিত করার দিন। মিছিলকারীরা ইনস্টাগ্রাম থেকে শহীদ কাসেম সোলেইমানির ছবি মুছে ফেলার ঘটনারও প্রতীকি বিরোধিতা করে। তারা কাসেম সোলাইমানি হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিশোধ নেওয়ার ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বার্তাও প্রতীকি মোবাইলের মাধ্যমে তুলে ধরে।
সূত্রঃ পার্সটুডে