বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বার্থী উলূমে দিনিয়া কওমী মাদরাসার কেতাব বিভাগের ১০ হাফেজ ছাত্রকে হাতুড়ি পেটা করার অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
সোমবার (০১ নভেম্বর) রাতে হাতুড়ি পেটায় আহত হাফেজ মো. সোয়াইব নামে কেতাব বিভাগের এক ছাত্র বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এর আগে সোমবার বেলা ১১টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে কেতাব বিভাগের ছাত্র হাফেজ আবু ইউসুফ, হাফেজ মো. হাসানউদ্দিন, হাফেজ জাহিদুল ইসলাম, মো. হাফেজ হোসেন, হাফেজ হাফিজুর রহমান, হাফেজ মো. সোয়াইব, হাফেজ মো.হোসেন, হাফেজ হাবিবুল্লাহসহ ১০ ছাত্র আহত হন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বার্থী উলূমে দিনিয়া কওমী মাদরাসার নুরানী বিভাগে শিক্ষকতা করেন হাফেজ মানিক বেপারী। তিনি মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি, উপজেলার বার্থী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান প্যাদার ভাগ্নে হন।
রোববার বিকেলে তুচ্ছ কারণে কেতাব বিভাগের ছাত্র মো. শাহ্জালালকে কিলঘুষি মেরে নাক দিয়ে রক্ত ঝরান। মো. শাহজালালের সহপাঠীরা সোমবার সকাল ১০টার দিকে মাদরাসার মুহতামিম মুফতি হাফেজ আমিনুল ইসলামের কাছে গিয়ে এ ঘটনার বিচার দাবি করেন।
এতে মানিক বেপারী ক্ষিপ্ত হয়ে সকাল সোয়া ১০টার দিকে ক্লাসরুমে ঢুকে কেতাব বিভাগের ছাত্র মো. রফিকুল ইসলাম, মাহামুদ হোসেনকে পিটিয়ে আহত করেন। এতে কেতাব বিভাগের ছাত্ররা ক্ষিপ্ত হলে শিক্ষক মানিক দৌড়ে মাদরাসার মুহতামিমের কক্ষে আশ্রয় নিলে বিক্ষুব্ধ ছাত্ররা তাকে আধাঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন।
এর কিছুক্ষণ পর কেতাব বিভাগের ছাত্ররা বিচার দিতে শিক্ষক মানিক বেপারীর মামা বার্থী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান প্যাদার বাড়িতে যান। এ সময় শিক্ষক মানিক বেপরী ও তার ছোট মামা যুবলীগ নেতা জাফর প্যাদার নেতৃত্বে বহিরাগত ১৫/২০ যুবক হাতুড়ি, ব্যালচা, লাঠিসোটা নিয়ে শাহ্জাহান প্যাদার বাড়িতে গিয়ে জঙ্গি অপবাদ দিয়ে কেতাব বিভাগের ছাত্রদের ওপর হামলা চালায়।
এ সময় হামলাকারীরা হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে কেতাব বিভাগের ১০ ছাত্রকে আহত করেন। এতে মাদরাসায় ছাত্রদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে কেতাব বিভাগের ক্লাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।
হামলার শিকার হাফেজ আবু ইউসুফ ও হাফেজ মো. সোয়াইব জানান, শিক্ষক মানিক বেপারী ও মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহ্জাহান প্যাদা ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে হামলার শিকার ছাত্রদের বিরুদ্ধে এখন জঙ্গি তৎপরতাসহ বিভিন্ন কথা রটিয়ে বেড়াচ্ছেন।
মাদরাসার মুহ্তামিম মুফতি আমিনুল ইসলাম জানান, হামলায় কেতাব বিভাগের ১০ ছাত্র আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে হাফেজ জাহিদুল ইসলামকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । এ ঘটনায় মাদরাসার সব ছাত্রদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক মানিক বেপারী বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনিত সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। কেতাব বিভাগের দুই ছাত্র বেয়াদবি করার কারণে তাদের বকাঝকা করা হয়। এতে কেতাব বিভাগের অন্য ছাত্ররা সংঘবদ্ধ হয়ে আমার মামা মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতির বাড়িতে হামলার চেষ্টা চালালে প্রতিরোধ করা হয়।