ঢাকা ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আসিফ আলির পথেই হাঁটুক না লিটন, সৌম্য কিংবা বাংলাদেশ!

আসিফ আলির পথেই হাঁটুক না লিটন, সৌম্য কিংবা বাংলাদেশ!

ক্রীড়া ডেস্ক:  বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন কী চলে? সার্কাস!

সাবেক অধিনায়ক স্ট্যাটাস দিয়ে সমালোচনা করেন। তবে ‘অদ্ভুত’ ব্যাপার হচ্ছে যেটি, ওয়ানডে অধিনায়ক থাকা অবস্থায়ই তামিম ইকবাল করছেন একটা ‘শো’, সেখানেও হচ্ছে বিস্তর আলোচনা! কোন ক্রিকেটারের বউ স্ট্যাটাস দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন তো অন্য কারো ভাই স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিক্রিয়াও জানাতে ভুলছেন না।

কখনো এই কেউ, তো কখনো অন্য কেউ। ‘ট্রল’ চলতেই থাকে! সমালোচনা ক্রিকেট জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ জানা আছে ক্রিকেটারদের, তবু সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাই যে বেশি!

এই যে চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল নিয়েই কত কিছুই না হলো! আর এতে যে প্রভাব পড়ছে তার প্রমাণ, ক্রিকেটাররাও এর বিরুদ্ধেই যেন খেলতে নেমে গেছেন! সংবাদ সম্মেলনে এসে কেউ শক্ত মুখে কঠিন উত্তর দিচ্ছেন, তো কেউ আয়নায় মুখ দেখতে বলছেন!

সে যাই হোক, সে সব থেকে ক্রিকেটারদের দূরে থাকাটাই প্রয়োজন। মাশরাফিও তাই ওয়ানডে অধিনায়ককে জানালেন, কোন টুর্নামেন্টের আগে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকার নিয়ম করা উচিত। এবং বর্তমানে যা অবস্থা, এটা তো অতীব জরুরিই হয়ে পড়েছে!

যদি সমালোচনা হজম না করতে পেরে এর নেতিবাচক প্রভাবে ভুগেন, তবে বাংলাদেশের লিটন কিংবা সৌম্য বা যে কেউই সোশ্যাল মিডিয়াকে ‘না’ বলে দিয়ে তাদের পথেই চলা উচিত। আসিফ আলীর মতো তবেই যদি তাদের সামর্থ্য অনূদিত হয় পারফরম্যান্সে!

আসিফ আলিতে মুগ্ধ এখন পুরো ক্রিকেট মহলই। সবচেয়ে খুশি বোধহয় এখন মোহাম্মদ ওয়াসিমই! পাকিস্তানের নির্বাচক যে তিনিই। কারো সামর্থ্যে ভরসা রাখলে সে পারফর্ম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হলে আক্ষেপ যেমন থাকে, সামর্থ্যের প্রমাণে খুশিরও যে তেমনই অন্ত থাকে না

আসিফ আলি ছক্কা হাঁকাতে জানেন। প্রতি ছয়ের মারে তার লেগেছে দশ বলেরও কম। ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে কমপক্ষে ৭৫০ বল খেলেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মাত্র ছয়জনই প্রতি ছয়ে বল নিয়েছেন ১০টির কম। তালিকার অন্যরা- আন্দ্রে রাসেল, কাইরন পোলার্ড, এভিন লুইস, নিকোলাস পুরান, রাহমানুল্লাহ গুরবাজ।

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ সয়লাব ক্রিকেটাঙ্গনের নানা পথে আসিফ আলিরও বিচরণ ঘটে গেছে। সিপিএল, বিপিএল, আফ্রিকার লিগ, নিজেদের পিএসএলসহ ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে তার স্ট্রাইক রেট ১৫৩.০৯। প্রতি ৪.৭৯ বলেই তার থেকে মিলেছে একেকটা বাউন্ডারি। পাকিস্তানের ঘরের ক্রিকেটে ‘পাওয়ার হিটার’ হিসেবে তার সুনাম বেশ!

কিন্ত সেই আসিফ যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার ছায়া হয়েই থাকলেন! বিশ্বকাপের আগে ২৭ ইনিংস খেলে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ১৬.৩৮ গড়ে রান ছিল ৩৪৪, এবং স্ট্রাইক রেট ১২৩.৭৪। সামর্থ্যের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না, তবু তার সামর্থ্যে বিশ্বাস রেখে পাকিস্তান তাকে সুযোগ দিয়ে গেছে।

বিশেষ করে বলতে গেলে মিসবাহ উল হক। তবে একটা সময় তাকে বাদ পড়তেই হলো! বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন এপ্রিলে, এরপর পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সিরিজের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও ছিলেন না তিনি।

কিন্ত বিশ্বকাপের দলে উঠে এলো তার নাম। আসিফ আলির হিটিং পাওয়ারে আরও একবার বিশ্বাস রাখতে চাইলো পাকিস্তান! সেই যে শুরু সমালোচনা। দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনেই একজন জিজ্ঞেস করেই ফেললেন, এই মাঝের সময়ে আসিফ কী করলেন যে তাকে আবার দলে নেওয়া হলো? নির্বাচক মোহাম্মদ ওয়াসিমের কাছে সেই একই কথাটা ছাড়া বলার মতো আর কিছু ছিলই না, তার সক্ষমতায় আরও একবার আস্থা রাখতে চাইলেন।

এই যে এতো সমালোচনা আসিফ আলিকে ঘিরে, সে সব কী তার কানে যায়নি? এখন তো ‘সোশ্যাল মিডিয়া’ নামের এক বস্ত আছে, যেখানে মত প্রকাশে কোন ধরাবাঁধা নেই। সে সব সমালোচনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি কি তার উপর?

উত্তর হলো, না! সোশ্যাল মিডিয়া যদি নাই দেখেন তাহলে তো আর প্রভাবের কোনও কথাই আসে না! আসিফ আলি সোশ্যাল মিডিয়ায় কান দেন না, তাই সমালোচনা তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তিনি এগিয়ে যান তার পথে। পাকিস্তানের জার্সি পরিহিত আসিফ আলিতেও তাই সামর্থ্যের ছাপ দেখা গেল।

আসিফ আলির পথেই তাহলে হাঁটুক না লিটন, সৌম্য কিংবা বাংলাদেশ!

ট্যাগস

আসিফ আলির পথেই হাঁটুক না লিটন, সৌম্য কিংবা বাংলাদেশ!

আপডেট সময় ০৪:৩১:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২১

ক্রীড়া ডেস্ক:  বাংলাদেশের ক্রিকেটে এখন কী চলে? সার্কাস!

সাবেক অধিনায়ক স্ট্যাটাস দিয়ে সমালোচনা করেন। তবে ‘অদ্ভুত’ ব্যাপার হচ্ছে যেটি, ওয়ানডে অধিনায়ক থাকা অবস্থায়ই তামিম ইকবাল করছেন একটা ‘শো’, সেখানেও হচ্ছে বিস্তর আলোচনা! কোন ক্রিকেটারের বউ স্ট্যাটাস দিয়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন তো অন্য কারো ভাই স্ট্যাটাস দিয়ে প্রতিক্রিয়াও জানাতে ভুলছেন না।

কখনো এই কেউ, তো কখনো অন্য কেউ। ‘ট্রল’ চলতেই থাকে! সমালোচনা ক্রিকেট জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ জানা আছে ক্রিকেটারদের, তবু সোশ্যাল মিডিয়ার সমালোচনায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার সম্ভাবনাই যে বেশি!

এই যে চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল নিয়েই কত কিছুই না হলো! আর এতে যে প্রভাব পড়ছে তার প্রমাণ, ক্রিকেটাররাও এর বিরুদ্ধেই যেন খেলতে নেমে গেছেন! সংবাদ সম্মেলনে এসে কেউ শক্ত মুখে কঠিন উত্তর দিচ্ছেন, তো কেউ আয়নায় মুখ দেখতে বলছেন!

সে যাই হোক, সে সব থেকে ক্রিকেটারদের দূরে থাকাটাই প্রয়োজন। মাশরাফিও তাই ওয়ানডে অধিনায়ককে জানালেন, কোন টুর্নামেন্টের আগে তাদের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকার নিয়ম করা উচিত। এবং বর্তমানে যা অবস্থা, এটা তো অতীব জরুরিই হয়ে পড়েছে!

যদি সমালোচনা হজম না করতে পেরে এর নেতিবাচক প্রভাবে ভুগেন, তবে বাংলাদেশের লিটন কিংবা সৌম্য বা যে কেউই সোশ্যাল মিডিয়াকে ‘না’ বলে দিয়ে তাদের পথেই চলা উচিত। আসিফ আলীর মতো তবেই যদি তাদের সামর্থ্য অনূদিত হয় পারফরম্যান্সে!

আসিফ আলিতে মুগ্ধ এখন পুরো ক্রিকেট মহলই। সবচেয়ে খুশি বোধহয় এখন মোহাম্মদ ওয়াসিমই! পাকিস্তানের নির্বাচক যে তিনিই। কারো সামর্থ্যে ভরসা রাখলে সে পারফর্ম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হলে আক্ষেপ যেমন থাকে, সামর্থ্যের প্রমাণে খুশিরও যে তেমনই অন্ত থাকে না

আসিফ আলি ছক্কা হাঁকাতে জানেন। প্রতি ছয়ের মারে তার লেগেছে দশ বলেরও কম। ২০১৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত টি-টোয়েন্টিতে কমপক্ষে ৭৫০ বল খেলেছেন এমন ব্যাটসম্যানদের মধ্যে মাত্র ছয়জনই প্রতি ছয়ে বল নিয়েছেন ১০টির কম। তালিকার অন্যরা- আন্দ্রে রাসেল, কাইরন পোলার্ড, এভিন লুইস, নিকোলাস পুরান, রাহমানুল্লাহ গুরবাজ।

ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ সয়লাব ক্রিকেটাঙ্গনের নানা পথে আসিফ আলিরও বিচরণ ঘটে গেছে। সিপিএল, বিপিএল, আফ্রিকার লিগ, নিজেদের পিএসএলসহ ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে তার স্ট্রাইক রেট ১৫৩.০৯। প্রতি ৪.৭৯ বলেই তার থেকে মিলেছে একেকটা বাউন্ডারি। পাকিস্তানের ঘরের ক্রিকেটে ‘পাওয়ার হিটার’ হিসেবে তার সুনাম বেশ!

কিন্ত সেই আসিফ যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার ছায়া হয়েই থাকলেন! বিশ্বকাপের আগে ২৭ ইনিংস খেলে পাকিস্তানের জার্সি গায়ে ১৬.৩৮ গড়ে রান ছিল ৩৪৪, এবং স্ট্রাইক রেট ১২৩.৭৪। সামর্থ্যের প্রতি সুবিচার করতে পারছিলেন না, তবু তার সামর্থ্যে বিশ্বাস রেখে পাকিস্তান তাকে সুযোগ দিয়ে গেছে।

বিশেষ করে বলতে গেলে মিসবাহ উল হক। তবে একটা সময় তাকে বাদ পড়তেই হলো! বিশ্বকাপের আগে শেষ আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন এপ্রিলে, এরপর পাকিস্তানের ইংল্যান্ড সিরিজের পর ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও ছিলেন না তিনি।

কিন্ত বিশ্বকাপের দলে উঠে এলো তার নাম। আসিফ আলির হিটিং পাওয়ারে আরও একবার বিশ্বাস রাখতে চাইলো পাকিস্তান! সেই যে শুরু সমালোচনা। দল ঘোষণার সংবাদ সম্মেলনেই একজন জিজ্ঞেস করেই ফেললেন, এই মাঝের সময়ে আসিফ কী করলেন যে তাকে আবার দলে নেওয়া হলো? নির্বাচক মোহাম্মদ ওয়াসিমের কাছে সেই একই কথাটা ছাড়া বলার মতো আর কিছু ছিলই না, তার সক্ষমতায় আরও একবার আস্থা রাখতে চাইলেন।

এই যে এতো সমালোচনা আসিফ আলিকে ঘিরে, সে সব কী তার কানে যায়নি? এখন তো ‘সোশ্যাল মিডিয়া’ নামের এক বস্ত আছে, যেখানে মত প্রকাশে কোন ধরাবাঁধা নেই। সে সব সমালোচনার নেতিবাচক প্রভাব পড়েনি কি তার উপর?

উত্তর হলো, না! সোশ্যাল মিডিয়া যদি নাই দেখেন তাহলে তো আর প্রভাবের কোনও কথাই আসে না! আসিফ আলি সোশ্যাল মিডিয়ায় কান দেন না, তাই সমালোচনা তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। তিনি এগিয়ে যান তার পথে। পাকিস্তানের জার্সি পরিহিত আসিফ আলিতেও তাই সামর্থ্যের ছাপ দেখা গেল।

আসিফ আলির পথেই তাহলে হাঁটুক না লিটন, সৌম্য কিংবা বাংলাদেশ!