ঢাকা ১১:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম প্রয়ান দিবস

সংগৃহীত ছবি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

স্টাফ রিপোর্টার : আজ বাইশে শ্রাবণ। বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতির সবচেয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম প্রয়াণ দিবস।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই কবি ১২৬৮ বাংলা সালের পঁচিশে বৈশাখ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তার পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাতা সারদা সুন্দরী দেবী। ১৯৪১ সালের ৬ আগস্ট, বাংলা ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২শে শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ৮০ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন রবীন্দ্রনাথ।

বাঙালি সুখে-দুঃখে বারবার ফিরে যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছেই। বাঙালির এমন কোনো অনুভূতি নেই, যার প্রকাশ ঘটেনি ক্ষণজন্মা এই বাঙালির সৃজনকর্মে।

বিশ্বজুড়ে যখন কভিড মহামারি চলছে, তখনো প্রাসঙ্গিক রবীন্দ্রনাথ। বাঙালি শ্রোতারা বারবার ফিরে যায় রবীন্দ্রসংগীতের অমিয় সুরের ধারায়, যেখানে ধ্বনিত হয় প্রশান্তির বারিধারা।

‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে।/তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে/ তবু প্রাণ নিত্যধারা, হাসে সূর্য চন্দ্র তারা…’ এ রকম অগণিত গান থেকে মানুষ পায় দুঃসময় মোকাবেলার প্রেরণা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী ও গল্পকার। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।

১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। লিখেছেন বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়।

বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের পাঠ্যসূচিতে তার লেখা সংযোজিত হয়েছে।

১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। এ সময় থেকেই কবির বিভিন্ন ঘরানার লেখা দেশ-বিদেশে পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেতে থাকে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক জীবনে সাহিত্যের এমন বিচিত্র এক জগৎ রচনা করেছেন, যা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি বিশ্বসাহিত্যের আসরে করেছে মহিমান্বিত।

১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তাঁর নোবেলপ্রাপ্তি বাংলা সাহিত্যকে বিরল গৌরব এনে দেয়। শুধু সৃজনশীল সাহিত্য রচনায় নয়; সমাজ, রাষ্ট্র, শিক্ষা, অর্থনীতি নিয়ে স্বকীয় ভাবনাও তাঁকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।

বিপুল তাঁর রচনা, বিচিত্র তাঁর বিষয়। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই ফলেছে রাশি রাশি সোনা। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত, ভ্রমণকাহিনি, চিঠিপত্র, সমালোচনা, চিত্রকলা সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর অজস্র অনন্য সৃষ্টিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই অনন্য ব্যক্তিত্ব, যাঁর লেখা গান বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে মনোনীত হয়েছে। করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে ২২শে শ্রাবণ উপলক্ষে এবার তেমন কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন নেই।

তবে বাঙালি মননের চিরনবীন এই সারথির প্রয়াণ দিবসে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে আজ বিকেল ৪টায় অনলাইনে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

‘শ্রাবণের আমন্ত্রণে’ শীর্ষক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট। রাত ৯টায় অনুষ্ঠানটি ছায়ানটের ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

আজ বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম প্রয়ান দিবস

আপডেট সময় ১১:১২:২৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ অগাস্ট ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : আজ বাইশে শ্রাবণ। বাঙালির সাহিত্য-সংস্কৃতির সবচেয়ে উজ্জ্বলতম নক্ষত্র কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮০তম প্রয়াণ দিবস।

বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই কবি ১২৬৮ বাংলা সালের পঁচিশে বৈশাখ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

তার পিতার নাম দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। মাতা সারদা সুন্দরী দেবী। ১৯৪১ সালের ৬ আগস্ট, বাংলা ১৩৪৮ বঙ্গাব্দের ২২শে শ্রাবণ কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতে ৮০ বছর বয়সে পরলোকগমন করেন রবীন্দ্রনাথ।

বাঙালি সুখে-দুঃখে বারবার ফিরে যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কাছেই। বাঙালির এমন কোনো অনুভূতি নেই, যার প্রকাশ ঘটেনি ক্ষণজন্মা এই বাঙালির সৃজনকর্মে।

বিশ্বজুড়ে যখন কভিড মহামারি চলছে, তখনো প্রাসঙ্গিক রবীন্দ্রনাথ। বাঙালি শ্রোতারা বারবার ফিরে যায় রবীন্দ্রসংগীতের অমিয় সুরের ধারায়, যেখানে ধ্বনিত হয় প্রশান্তির বারিধারা।

‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে।/তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে/ তবু প্রাণ নিত্যধারা, হাসে সূর্য চন্দ্র তারা…’ এ রকম অগণিত গান থেকে মানুষ পায় দুঃসময় মোকাবেলার প্রেরণা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ, চিত্রশিল্পী ও গল্পকার। আট বছর বয়সে তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন।

১৮৭৪ সালে ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তার প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। অসাধারণ সৃষ্টিশীল লেখক ও সাহিত্যিক হিসেবে সমসাময়িক বিশ্বে তিনি খ্যাতি লাভ করেন। লিখেছেন বাংলা ও ইংরেজি ভাষায়।

বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় তার সাহিত্যকর্ম অনূদিত হয়েছে। বিভিন্ন দেশের পাঠ্যসূচিতে তার লেখা সংযোজিত হয়েছে।

১৮৭৮ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কবিকাহিনী’ প্রকাশিত হয়। এ সময় থেকেই কবির বিভিন্ন ঘরানার লেখা দেশ-বিদেশে পত্রপত্রিকায় প্রকাশ পেতে থাকে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এক জীবনে সাহিত্যের এমন বিচিত্র এক জগৎ রচনা করেছেন, যা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করার পাশাপাশি বিশ্বসাহিত্যের আসরে করেছে মহিমান্বিত।

১৯১৩ সালে ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যগ্রন্থের জন্য তাঁর নোবেলপ্রাপ্তি বাংলা সাহিত্যকে বিরল গৌরব এনে দেয়। শুধু সৃজনশীল সাহিত্য রচনায় নয়; সমাজ, রাষ্ট্র, শিক্ষা, অর্থনীতি নিয়ে স্বকীয় ভাবনাও তাঁকে অনন্য মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করেছে।

বিপুল তাঁর রচনা, বিচিত্র তাঁর বিষয়। তিনি যেখানে হাত দিয়েছেন, সেখানেই ফলেছে রাশি রাশি সোনা। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, সংগীত, ভ্রমণকাহিনি, চিঠিপত্র, সমালোচনা, চিত্রকলা সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর অজস্র অনন্য সৃষ্টিতে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেই অনন্য ব্যক্তিত্ব, যাঁর লেখা গান বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে মনোনীত হয়েছে। করোনাকালীন পরিস্থিতির কারণে ২২শে শ্রাবণ উপলক্ষে এবার তেমন কোনো আনুষ্ঠানিক আয়োজন নেই।

তবে বাঙালি মননের চিরনবীন এই সারথির প্রয়াণ দিবসে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। বাংলা একাডেমির উদ্যোগে আজ বিকেল ৪টায় অনলাইনে আলোচনাসভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

‘শ্রাবণের আমন্ত্রণে’ শীর্ষক স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট। রাত ৯টায় অনুষ্ঠানটি ছায়ানটের ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে।