নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ৮ নম্বর চরএলাহী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রাজ্জাকের বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ব্যাপক গুলি বর্ষণ ও ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত ককটেল ও গুলির খোসা উদ্ধার করেছে।
এ হামলার ঘটনায় চেয়ারম্যানের স্ত্রী, ছেলে, বোন, ভাগিনাসহ ছয়জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।রোববার (৪ জুলাই) সকালে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) পুষ্প বরণ চাকমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ‘শনিবার (৩ জুলাই) রাত ১১টার দিকে পুলিশ চরএলাহী বাজারে টহল দিচ্ছিল। গুলি ও ককটেলের শব্দ শুনে চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে হামলাকারী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে চারটি অবিস্ফোরিত ককটেল, তিনটি চকলেট বোমা ও একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। চেয়ারম্যানের বসতঘরে ভাঙচুরে চিহ্ন রয়েছে।’
এদিকে হামলায় আহত চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাকের স্ত্রী বিবি রহিমা (৪০), ছেলে রাজীব হোসেন (২২), রনি (১৯), বোন পারুল আক্তার (৪৫), জয়তুন বিবি (৫০), ভাতিজা মো. ইমরান রাসেলকে (২৮) প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ ঘটনায় চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী চরএলাহী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গণি ও তার লোকজনকে দায়ী করেছেন।
তিনি বলেন, ‘মেয়র কাদের মির্জার বিরোধিতা করায় আব্দুল গণির নির্দেশে হেলাল মেম্বারের নেতৃত্বে অস্ত্রধারীরা আমার বাড়িতে হামলা চালায়। আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালালেও আমি তখন বাড়িতে ছিলাম না। সন্ত্রাসীরা আমার বসত ঘর কুপিয়ে তছনছ করেছে। গুলি ও ককটেল নিক্ষেপ করেছে। এতে আমার পরিবারের ছয় সদস্য আহত হয়েছে।’
চরএলাহী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গণি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এটি একটি সাজানো নাটক। যখন হামলার ঘটনা ঘটে তখন আমি বসুরহাটের বাসায় ছিলাম। আমার বাড়িতে হামলায় দায়ের হওয়া মামলার কাউন্টারে এ হামলার নাটক সাজানো হয়েছে।’
এর আগে বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টায় আবদুল গণির বাড়িতে হামলা ও গুলি বর্ষণের ঘটনা ঘটে। এতে কাদের মির্জার আট অনুসারী গুলিবিদ্ধ হন। ওই ঘটনায় আবদুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান ও তার লোকজনকে দায়ী করে থানায় মামলা দায়ের করেন আবদুল গণি।
আবদুল গণি বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী এবং চরএলাহী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আওয়ামী লীগের বিবদমান এ দুই গ্রুপ দীর্ঘদিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে আসছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, ‘হামলার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক পুলিশ ওই বাড়িতে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে ককটেল ও গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযোগ অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’