বাগেরহাট প্রতিনিধি: পাঠ্যপুস্তকে নয়, মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে বাগেরহাটের শিক্ষার্থীরা। করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন ধরে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
এ সুযোগে মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ছে শিক্ষার্থীরা। এ আসক্তি এখন জেলা সদর থেকে গ্রামের জনপদে ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় মাধ্যমিক ও প্রাথমিক ছাত্র-ছাত্রীদের মোবাইলের মাধ্যমে পড়ালেখা তথা ফোন ব্যবহার বন্ধ করার জোর দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় অনলাইনে ক্লাসে চাপ দিচ্ছেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা।
তাদের তাগাদার কারণেই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে স্মার্টফোন তুলে দিচ্ছেন সন্তানদের হাতে। তবে প্রথম দু-চারদিন পড়ালেখা করলেও মোবাইলের বিভিন্ন গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ছে তারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাগেরহাটের বেশিরভাগ এলাকার শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসের চেয়ে বেশি সময় দিচ্ছে ভিডিও গেমসে।
ফোন হাতে পেলেই নানা অজুহাতে গেমস খেলে সময় কাটাচ্ছে তারা। অবসর সময়ে এসব শিক্ষার্থী খেলার মাঠে বা শারীরিক কসরত হয় এমন কোনো খেলাধুলার ধারে-কাছেও ভিড়ছে না।
অভিভাবকরা বলছেন, অনলাইনে ক্লাস করার কথা বলে শিক্ষার্থীরা বাসা থেকে বের হয়ে তাদের বন্ধুদের নিয়ে দলবেঁধে বিভিন্ন হাট-বাজারসহ নানা জায়গায় বসে ভিডিও গেমস খেলে সময় কাটাচ্ছে।
প্রতিনিয়ত এমন দৃশ্য চোখে পড়ছে অনেকেরই। বেশিরভাগ শিক্ষার্থী অনলাইনে ফ্রি-ফায়ার ও পাবজি গেমস খেলতে খেলতে তার অনুরাগী হয়ে গেছে। অনেকে আবার বন্ধুদের সঙ্গে গেমস খেলা দেখাদেখি করতে গিয়েও আসক্ত হয়ে পড়ছে।
বাগেরহাটের এক ছাত্রের অভিভাবক মো. রইস। তিনি জাগো নিইজকে বলেন, ‘অনলাইনে ক্লাস করার জন্য স্কুল থেকে শিক্ষকরা অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনে দিতে বলেন। কষ্ট হলেও সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কথা ভেবে ফোন কিনে দিতে বাধ্য হয়েছি।
কিন্তু অনলাইনে ক্লাসের কথা বলে ইন্টারনেটে তারা অন্য দিকে আসক্ত হচ্ছে। অনলাইন নামের এই সিস্টেম এখন দেখছি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পড়াশোনা বাদ দিয়ে গেমস খেললে কী করব? কতক্ষণ তাদের চেক দেব? শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে জরুরি ভিক্তিতে এই আধুনিকতার নামে ক্ষতিকর পদ্ধতি বন্ধ করা করা উচিত।’
প্রত্যন্ত এলাকা শরণখোলার অভিভাবক আলম জোমাদ্দার বলেন, ‘আমি তেমন লেখাপড়া জানি না। মেয়েকে ফোন কিনে দিয়েছিলাম।
সে ইন্টারনেটে ক্লাসের চেয়ে নানা গেমস খেলায় ব্যস্ত থাকায় ফোন ব্যবহার বন্ধ করে দিয়েছি। ভালোর থেকে চরম খারাপ হওয়ার আশঙ্কায় এই কাজ করেছি বাধ্য হয়ে।’