প্রযুক্তি ডেক্সঃ সোমবার (২৯ মার্চ) বিটিআরসির এক বিবৃতিতে জানা যায়, নতুন তরঙ্গ বিন্যাস ও পরিবর্তনের কারণে আগামী ১ ও ৮ এপ্রিল মোবাইল গ্রাহকদের সেবা প্রদানে বিঘ্নতার সৃষ্টি হতে পারে।
অনিচ্ছাকৃত এই সমস্যার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
বিবৃতি বলা হয়, প্রথম ধাপে ১৮০০ মেগাহার্টজের তরঙ্গ বিন্যাসের কারণে ১ এপ্রিল রাত ১১টা থেকে ২ এপ্রিল সকাল ৭টা পর্যন্ত ৮ ঘণ্টা এবং দ্বিতীয় ধাপে ২১০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গের নতুন বিন্যাসের জন্য ৭ এপ্রিল রাত ১১টা থেকে ৮ এপ্রিল সকাল ৭টা পর্যন্ত মোবাইল ফোন সেবায় সমস্যা হবে।
৬৩৪ কোটি টাকায় তরঙ্গ বিক্রি করে সরকার। নিলামে এ পরিমাণ টাকায় ২৭ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বিক্রি হয়। পাঁচ বছরের কিস্তিতে অপারেটররা অর্থ পরিশোধ করবেন।
আফ্রিকার ইথিওপিয়া-সুদান থেকে দশভাগ পিছিয়ে থাকা নেটওয়ার্ক উন্নত করতে তরঙ্গ কিনেছে মুঠোফোন অপারেটররা। নিলামে তোলা ২৭ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গের পুরোটাই কিনেছে বেসরকারি তিন অপারেটর। দুটি ব্যান্ডে সর্বোচ্চ ১০ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ তরঙ্গ কিনেছে গ্রামীণফোন। বিটিআরসি বলছে, মোট দামের চার ভাগের এক ভাগ দিতে হবে ২২ মার্চের মধ্যেই।
মুঠোফোন সেবার এমন দুর্গতি দূর করতে গত ৮ মার্চ তরঙ্গ নিলামে তোলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসি। যেখানে ২১০০ মেগাহার্টজ ব্যান্ডে ৯ নম্বর ব্লকের ৫ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্দ পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় নামে রবি ও গ্রামীণফোন। ৮ ঘণ্টার যুদ্ধশেষে রবিকে হারিয়ে ২৭ মিলিয়ন ডলার ভিত্তিমূল্যের তরঙ্গ ৪৬ দশমিক সাত পাঁচ মিলিয়ন ডলারে কিনে নেয় গ্রামীণফোন। যদিও নিলামে অংশ নিয়েও কোনো তরঙ্গ না কিনেই ফেরত যায় সরকারি অপারেটর টেলিটক।
নিলাম শেষে জানানো হয়, গ্রামীণফোন দুটি ব্যান্ডে ১০ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ; রবি ৭ দশমিক ৬ মেগাহার্টজ ও বাংলালিংক কিনেছে ৯ দশমিক ৪ মেগাহার্টজ। তরঙ্গ কেনার ২৫ শতাংশ অর্থ পরিশোধ করতে হবে আগামী ২২ মার্চের মধ্যে। এরপরও বাড়তি তরঙ্গে সেবা দিতে সময় লাগবে আরও এক থেকে দেড় মাস।
ইন্টারনেট গতি মাপার আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ওকলার সবশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোবাইল ইন্টারনেটে ডাউনলোডের গড় গতি ১০ দশমিক ৫৭ এমবিপিএস এবং আপলোডের গতি ৭ দশমিক ১৯ এমবিপিএস। এ ধীরগতি নিয়ে বিশ্বের ১৪০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৩৬তম। আফ্রিকার পিছিয়েপড়া দেশ ইথিওপিয়া-সুদানের চেয়েও যার গতি দুর্বল।
উল্লেখ্য, নতুন তরঙ্গ নিয়ে গ্রামীণফোনের তরঙ্গ পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৭.৪ মেগাহার্টজ; রবির ৪৪ মেগাহার্টজ এবং বাংলালিংকের ৪০ মেগাহার্টজ।
বিটিআরসির হিসাবে, বর্তমানে গ্রামীণফোনের গ্রাহক ৮ কোটির কিছু বেশি। রবির গ্রাহক ৫ কোটি ১৫ লাখ। আর বাংলালিংকের গ্রাহক ৩ কোটি ৫৯ লাখ এবং টেলিটকের ৫৫ লাখ।