চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চসিক নির্বাচনের বাকি আর মাত্র চারদিন। নির্বাচনী প্রচারণা এখন জমজমাট। বিগত নির্বাচনগুলোর চাইতে এবার একটু বেশিই বাজছে নির্বাচনের ঢোল।
প্রতিদিন দুপুর থেকে রিকশা-টেক্সিতে মাইক বেঁধে চলছে ‘নির্বাচনী গান’। রেকর্ড করা গান বাজানোর পাশাপাশি শিল্পীরা সরাসরি কি-বোর্ড বাজিয়ে প্রার্থীকে নিয়ে গান গেয়ে ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন।
কেউ গাইছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের থিম সং ‘জয় বাংলা, জিতবে আবার নৌকা/শেখ হাসিনার সালাম নিন, নৌকা মার্কায় ভোট দিন’।
আবার কেউ গাইছেন- ‘এসে গেছে নির্বাচন-ভোট দাও জনগণ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় তোমাদের প্রয়োজন। শাহাদাত ভাইয়ের সালাম নিন, ধানের শীষে ভোট দিন’।
আওয়ামী লীগ-বিএনপির দুই প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী ও ডা. শাহাদাত হোসেন ছাড়া চসিক নির্বাচনে আরও ৫ জন মেয়র প্রার্থী আছেন মাঠে। তবে তাদের তেমন প্রচারণা নেই।
স্বতন্ত্র প্রার্থী (হাতি প্রতীক) খোকন চৌধুরী, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এর প্রার্থী (মোমবাতি) এম এ মতিন, ন্যাশনাল পিপলস্ পার্টির প্রার্থী (আম) আবুল মনজুর, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ এর প্রার্থী (চেয়ার) মুহাম্মদ ওয়াহেদ মুরাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থী (হাতপাখা) মো. জান্নাতুল ইসলাম এর পক্ষে প্রচারণা চলছে নামকা ওয়াস্তে।
২৭ জানুয়ারি চসিক নির্বাচনে কাউন্সিলর পদে ১৭১ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৭ জন প্রার্থী বিরামহীন প্রচারণা চালাচ্ছেন ওয়ার্ডকেন্দ্রিক। তারা ভোটারদের দিচ্ছেন নানান প্রতিশ্রুতি।
কেউবা দিচ্ছেন করোনা সুরক্ষাসামগ্রীও। এছাড়া লিফলেট বিলি ও হ্যান্ড মাইকে প্রচারণা, প্রার্থী ও প্রার্থীদের পক্ষে রাজনৈতিক নেতাদের প্রচারণায় এখন সরগরম পুরো নগর। অলি-গলি ছেয়ে গেছে পোস্টারে। রশিতে বাঁধা পোস্টার-প্রতীক ঝুলছে সর্বত্র। নির্বাচনী ক্যাম্পে চলছে আড্ডা।
এদিকে নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই সহিংস হয়ে উঠছে পরিবেশ। প্রতিদিনই প্রতিদ্বন্দ্বী মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
এতে ভোটাররাও আছেন আতঙ্কে। জানা গেছে, এ পর্যন্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা ৫৩টি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। নির্বাচনী সংঘাতে নিহত হয়েছেন ২ জন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে চালাচ্ছে তল্লাশি। করছে মাইকিংও।
এদিকে ২৫ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ২৯ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত নির্বাচনী এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচনের বিভিন্ন অপরাধ আমলে নিয়ে বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৪১টি ওয়ার্ডে ২০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এবার ভোটগ্রহণ হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। ৪১টি ওয়ার্ডে ভোটকেন্দ্র রয়েছে ৭৩৫টি। মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ লাখ ৩৮ হাজার ৭০৬ জন।
এদের মধ্যে নারী ৯ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭৩ জন এবং পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯২ হাজার ৩৩ জন। ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী তারেক সোলেমান সেলিমের মৃত্যুতে ওই ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।