স্টাফ রিপোর্টার, নওগাঁঃ নওগাঁয় বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ার দীর্ঘ ৩ মাসপর ৯ম শ্রেণীতে পড়ুয়া এক কিশোরী স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ ঐ ছাত্রীর প্রেমিক (কথিত স্বামীর) থাকার শয়ন ঘড় থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ময়না তদন্ত শেষে সোমবার ৪ জানুয়ারী স্বজনদের কাছে মৃতদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। নওগাঁ জেলা সদর উপজেলার বলিহার ইউনিয়নের কুড়মইল গ্রামে ঐ কিশোরী স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানিয়রা ঘটনাটি পুলিশকে জানালে রবিবার রাতেই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট অন্তে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করেন নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশ।
স্থানিয়রা জানান, নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের তেজপাইন গ্রামের অসিত হাওয়ালদারের মেয়ে ও রসুলপুর উচ্চ-বিদ্যালয়ের ৯ শ্রেণীর শিক্ষার্থী বৈশাখী হাওয়ারদার (১৫) হঠাৎ করেই আনুমানিক প্রায় ৩ মাস পূর্বে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়।
নিখোঁজের পর থেকে ঐ ছাত্রীর পিতা-মাতা আত্বীয় স্বজন সহ বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে জানতে পারেন যে আত্বীয়তার সুবাদে তাদের নাবালিকা স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নওগাঁ সদর উপজেলার বলিহার ইউনিয়নের কুড়মইল গ্রামের নব হাওয়ালাদারের যুবক ছেলে টুটুল হাওয়াদার (২৩) পালিয়ে নিয়েগেছে।
এরপর কিছুদিন পরই টুটুল হাওয়ালাদার স্কুলছাত্রী বৈশাখীকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে এসে বৈশাখীকে বিয়ে করেছেন বলে জানালে সে সময় টুটুল এর পরিবার বিয়ে মেনে নিতে অস্বিকার করায় টুটুল তার ( কথিত স্ত্রী) বৈশাখীকে নিয়ে বাড়ির পার্শ্বে দিদিমার বাড়িতে স্বামী স্ত্রী হিসাবে বসবাস শুরু করেন।
এরিমাঝে রবিবার সন্ধায় কুড়মইল গ্রামে ( কথিত স্বামী) প্রেমিক টুটুলের শয়ন ঘড়ে স্কুল ছাত্রীর ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পেয়ে স্থানিয়রা ঘটনাটি থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে প্রাথমিক সুরতহাল রির্পোট অন্তে ময়না তদন্তের জন্য রাতেই মৃতদেহ উদ্ধার করেন।
ঘটনাটি নিশ্চিত করে বলিহার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুমন জানান, আমি খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। স্থানিয়দের বরাতদিয়ে তিনি আরো বলেন, টুটুল প্রায় ৫/৬ মাস পূর্বে মেয়েটিকে বিয়ে করে ঘড় সংসার করে আসাকালেই বাড়ির লোকজনের অজান্তে নিজ শয়ন ঘড়ে গলায় ফাঁসদিয়ে আত্নহত্যা করেছেন।
অপরদিকে স্কুল ছাত্রী বৈশাখীর পিতা অসিত হাওয়ালাদার জানান, আমার স্কুল পড়ুয়া নাবালিকা মেয়ে বৈশাখী (১৫) কে আত্বীয়তার সুবাদে টুটুল প্রেমের ফাঁদে ফেলে প্রায় ৩ মাস পূর্বে আমাদের অজান্তে পালিয়ে নিয়ে যায় এবং বেশ কিছুদিন গোপনে পালিয়ে থাকার পর নিজ বাড়িতে আসলে টুটুলের পরিবার ও তাদের বাড়িতে না তোলার কারনে তারা টুটুলের দিদিমার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
এরিমধ্যেই আমি খবর পাই যে আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে এমন খবর পেয়ে আমি ও স্থানিয় ইউপি সদস্য বিপুল কুমার ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার মেয়ের মৃতদেহ দেখি এব্যাপারে আমি আইনানুগ ব্যবস্থা নিব বলেও জানান অসিত হাওয়ালাদার।
এব্যাপারে ইউপি সদস্য বিপুল কুমার বলেন, খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম কিন্তু স্কুল ছাত্রীর স্বামী পরিচয়দানকারী টুটুল হাওয়ালাদার বিয়ের কোন কাগজপত্র বা প্রমান দেখাতে না পারার কারনে মেয়ের পরিবার সন্দিহান হয়ে পরেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি মোঃ সরোওয়ারর্দী হোসেন বলেন, এক গৃহবধূ গলায় ফাঁসদিয়ে আত্নহত্যা করেছেন বলে স্থানিয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার পূর্বক নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের মৃতদেহ সোমবার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।