বদলগাছী, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর বদলগাছীতে পূর্বশত্রুতার জেরে দরিদ্র এক পরিবারকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বাড়ি থেকে বের হতে না পেরে অসহায় হয়ে পড়েছে দরিদ্র আব্দুস সালামের পরিবার।
স্থানীয় প্রভাবশালী সাবেক ইউপি মেম্বার মফের আলীর ছেলে সোহেল রানা। উপজেলার বালুভরা ইউনিয়নের কুশারমুড়ি গ্রামে গত দুইদিন থেকে বাড়ির দুই পাশে চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা হয়েছে। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ট এলাকাবাসী। অসহায় আব্দুস সালাম প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কুশারমুড়ি গ্রামের প্রভাবশালী সাবেক ইউপি মেম্বার মফের আলীর ছেলে সোহেল রানা দরিদ্র অসহায় আব্দুস সালামের স্ত্রীকে দীর্ঘদিন থেকে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল।
গত দুই মাস আগে আব্দুস সালামের বাড়িতে মাদক আছে সন্দেহে তাকে ও তার স্ত্রীকে মারপিট করে সোহেল রানা। ঘটনায় বদলগাছী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সোহেল রানাসহ পাঁচজনকে আসামী করে মামলা হয়। মামলায় সোহেল রানাকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায় থানা পুলিশ। ১২ দিন হাজতবাস করে জামিনে বেরিয়ে আসেন সোহেল রানা।
এরপর মামলা তুলে নিতে আসামীরা বিভিন্নভাবে হুমকি অব্যাহত রাখছে বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। সর্বশেষ শনিবার (২১ নভেম্বর) অসহায় আব্দুস সালামের বাড়ির উত্তর ও দক্ষিণ পাশে চলাচলের রাস্তায় সোহেল রানা তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে বাঁশের শক্ত বেড়া দিয়ে চলাচলের প্রতিবন্ধকতা তৈরী করেছে।
এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে আব্দুস সালামের পরিবারের ৬ সদস্য। দরিদ্র অসহায় পরিবারটি বাড়ি থেকে বের হতে পারছেন না। খেটে খাওয়া দরিদ্র পরিবারটি এখন প্রায় উপোশ থাকার মতো অবস্থা।
কুশারমুড়ি গ্রামের ভুক্তভোগী আব্দুস সালাম বলেন, প্রভাবশালী মফের আলীর ছেলে সোহেল রানা দীর্ঘদিন তার পরিবারের উপর বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার করে আসছে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলাও হয়েছে। মামলার পর তারা আরো বেপারোয় হয়ে পড়েছে। মামলা তুলে নিতে এখন হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। মামলা তুলে নিতে না চাওয়ায় তারা শনিবার বাড়ির দুই পাশে চলাচলের রাস্তায় বাঁশের বেড়া দিয়েছে। বাড়ি থেকে বের হতে পারছিনা। প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তিনি।
একই গ্রামের সাজ্জাদ হোসেন বলেন, তারা প্রভাবশালী হওয়ায় আমাদের জমি জোরপূর্বক দখলে নিতে চায়। এনিয়ে গত দুই বছরের অধিক সময় ধরে মামলা চলছে। তারা কোন কিছুকে তোয়াক্কা করতে চাননা। প্রভাবশালীদের এ অত্যাচার থেকে মুক্তি পেতে চান স্থানীয়রা।
এদিকে অভিযুক্ত সোহেল রানা হুমকি ধামকি দেয়ার অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, কাউকে অবরুদ্ধ করতে নয়; বরং কবরস্থান রক্ষায় বাঁশের বেড়া দেয়া হয়েছে। এতোদিন কেন বেড়া দেয়নি এমন প্রশ্নের কোন উত্তর তিনি দেননি।
স্থানীয় বালুভরা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ মোঃ আয়েন উদ্দীন বলেন, ঘটনাস্থল দেখেছেন। একটি বাড়ির সামনে চলাচলের পথে বেড়া দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরী করা ঠিক হয়নি। দুই পক্ষ যদি আসে আপোষ করে একটি ফায়সালার ব্যবস্থা করা হবে।
বদলগাছী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) চৌধূরী জোবায়ের আহাম্মদ বিষয়টি অবগত নয় বলে জানান। তবে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান তিনি।