“সাফল্য হল সফলতার সাথে নিজের ঠিক করা লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা” – (আর্ল নাইটেঙ্গেল )
হ্যাঁ লক্ষ ঠিক রেখেই তিনি এগিয়েছেন আর তাই অর্জনের ঝুঁড়ি আজ বেশ ভারী । তৃনমুল মানুষের মানন্নোয়ন, সামাজিক শৃংখলা, সৌহার্দ সম্প্রীতির মাধমে ত্বরান্বিত উন্নয়ন সুচকের যে মানদন্ড রয়েছে জন বান্ধব প্রশাসক হিসাবে তার সব খেতাবই তিনি অর্জন করেছেন যোগদানের মাত্র ১ বছরেই ।
বলছিলাম নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজানুর রহমানের কথা । উপজেলা প্রশাসক হিসাবে গেল বছর ৯ জুলাই মহাদেবপুরে যোগ দেন । মাত্র এক বছরেই তার ব্যাতিক্রমী নানা কার্যক্রমের ফলে সব শ্রেনী পেশার মানুরে কাছে আলাদা একটি জায়গা করে নেন । ইউ এন ও মিজানুরের জন বান্ধব কাজ এখন উপজেলার মানুষের মুখে মুখে ।
সরকারের কল্যান মুখী প্রকল্পের সুফল উপকারভুগী তৃনমুল মানুষের দরজায় পৌছে দিতে ক্লান্তিহীন ছুঁটেচলা ইউ এন ও মিজানুর রহমান নাম টি এখন সাধারন মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয় । আর এ কারণে মহাদেবপুর উপজেলা প্রশাসন আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে উপজেলা বাসীর কাছে ।
মহা দুর্যোগ করোনায় জন কল্যান কর নানা কর্মসুচী বাস্তবায়নে সম্মুখ যোদ্ধা হিসাবে কাজ করছেন ইউ এন মিজানুর । বয়স আর উদ্যমতার অদম্য মনোবল নিয়ে তার এ অগ্রযাত্রাকে সহযোগিতা করছে স্থানীয় সুধী মহল থেকে শুরু করে সব শ্রেনী পেশার মানুষ । ফলে যে কোন উদ্যেগ সহজেই বাস্থবায়ন হচ্ছে ।
যোগদানের পরই দক্ষতার পরিচয় প্রকাশ ঘটে, তিনি উপজেলার বিভিন্ন শ্রেনীর নেতৃবৃন্ধকে সাথে নিয়ে মহাদেবপুরের সমস্যা সম্ভবনা কে খুঁজে বের করে একটি ডেটা প্লানের মাধ্যমে তা বাস্তবায়ন শুরু করেন, একজন দক্ষ প্রশাসকের পরিচয় তখন থেকেই প্রকাশ পেতে থাকে এ কারণে মহাদেবপুরের সব মহলেই উচ্চ প্রসংশিত, বলছিলেন ”মহাদেবপুর অটিষ্টিক প্রতিবন্ধি বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওবাইদুল হক বাচ্চু”
যে সফল কাজ গুলোর জন্য মিজানুর রহমান সাধুবাদ পাচ্ছেন তার মধ্যে অন্যতম হলো, মহাদেবপুর কে গৃহহীণ মুক্ত ঘোষনা, ১০৪৯ জন গৃহহীণ কে আশ্রয়ন প্রকল্পের আওতায় গৃহব্যবস্থা নিশ্চিত করা ।
এ ছাড়া তিনি যোগদানের পর লক্ষ করেন উপজেলা পরিষদে শিল্পকলা কোন কার্যক্রম নেই । স্থানীয় শিল্পীদের মানন্নোয়ন ও টেকসই মেধা প্রকাশের লক্ষ তিনি উপজেলা পরিষদ চত্তরে শিল্পকলার কার্যক্রম চালু করে সেখানে প্রশিক্ষক নিযোগ দেন ।
শিক্ষার গুনগত মান বাড়ানোর জন্য বিদ্যালয় গুলোতে নিয়মিত নিজে পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের মেধা প্রকাশের জন্য স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা চালু করেন । এখন প্রতিটি বিদ্যালয় ও কলেজ থেকে শিক্ষার্থীদের বিতর্ক দল জেলা সদর সহ বাইরের জেলায় অংশ নিয়ে তাদের মেধার কৃতিত্ব তুলে ধরছে বলছিলেন মহাদেবপুর সর্ব মঙ্গলা গার্লস কলেজের প্রফেসর বকুল হোসেন ।
জেলার সব চেয়ে বেশি ধান উৎপাদন হয় মহাদেবপুরে । ধান চালের সুষম বাজার নিশ্চিতের দাবী স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনেক দিনের । এ খাতের সব চেয়ে বড় সফলতা তুলে এনেছেন ইউ এন ও মিজানুর রহমান । মহাদেবপুর এর চাল দেশীয় এবং বিশ্ববাজারে রপ্তানির জন্য অনলাইন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের WTO সেলে যোগাযোগ সহ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে । মহাদেবপুর চাউল কল মিল মালিক সমিতির সভাপতি মো: বেলাল হোসেন বলেন আমরা দীর্ঘ দিন থেকেই দাবী করছি মহাদেবপুরে অত্যান্ত ভাল মানের চাল উৎপাদন হচ্ছে সে চাল বিদেশে রপ্তানীর ক্ষেত্র চাই । বর্তমান ইউ এন ও যথেষ্ট আন্তরিকতার সাথে কাজ করায় আমরাে এখন চাল রপ্তানীর সুযোগ পেয়েছি । অপর বিশিষ্ট চাল ব্যবসায়ী ওসমান আলী বলেন, ইউ এন ওর দুরদর্শী কাজের জন্য মহাদেবপুরের ধান চাল ব্যবসায়ীরা ওনার কাছে কৃতজ্ঞ ।
করোনা কালে ইউ এন ও মিজানুর রহমানের ব্যতিক্রম উদ্যেগ পুরো জেলায় বেশ সাড়া ফেলে । তিনিই প্রথম চালু করেন ’মানবতার ঘর’ । যেখানে স্থানীয় বৃত্তবানদের সহযোগিতা নিয়ে চাল ডাল, আলু সংগ্রহ করে ঘরে রেখে সামাজিক দুরত্ব মেনে নিন্ম আয়ের মানুষ তা নিয়ে যায় । তার এ মডেল মহাদেবপুর উপজেলা ছাড়িয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাস্তবায়ন করার ফলে ভূয়সী প্রশংসা পান মিজানুর রহমান । এ ছাড়া করোনা আক্রান্ত দের প্রতি মানবিকতার উচ্চতর নজির তৈরি করেন তিনি । আক্রান্তদের বাড়ীতে গিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া বিভিন্ন উপহার সামগ্রী পৌছে দেওয়ায় মানবিক এক প্রশাসকের সুনামে তিনি উচ্চসিত হচ্ছেন ।
মহাদেবপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ধলু বলেন, ইউ এন ও মিজানুর স্যার যোগ দানের পর থেকেই তিনি তার মেধা ও যোগ্যতার পরিচয় তুলে ধরছেন । একদিকে যেমন তিনি কঠোর পরিশ্রমী অন্যদিকে সততার অনন্য নজির । এ কারণে উপজেলা প্রশাসন বিগত দিনের চেয়ে অনেক বেশি জন বান্ধব বলে তিনি মত পোষণ করেন ।
গত প্রায় দের যুগের সমস্যা ছিল মহাদেবপুর সড়কের উপর ধানের হাট । সম্প্রতি এ হাট টি সরিয়ে অন্যত্র জায়গায় বসান ইউ এন ও মিজানুর রহমান । ক্রেতা বিক্রেতার চরম ভোগান্তির অবসানে মহাদেবপুরের মানুষ এখন বেশ খুশি ।
গ্রাম পর্যায়ে প্রশাসনের সু শাসন নিশ্চিত, বাল্য বিবাহ রোধ, পরিবেশ সুরক্ষা সহ নানা ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য গত এক বছরেই তুলে ধরেছেন মিজানুর রহমান ।
এ ব্যাপারে তিনি বলেন, সততা নিষ্টার সাথে জন মানুষের কল্যানে কাজ করার চেষ্টা করছি । সরকারের দিক নির্দেশনা আর মাননীয় জেলা প্রশাসকের পরামর্শ নিয়ে যে কোন বিষয়ে প্রদক্ষেপ গ্রহন করি । গত এক বছরের মুল্যায়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, সকলের সার্বিক সহযোগিতা ছিল, যা আগামীতেও এর ধারাবাহিকতা রেখে মহাদেবপুর বাসীর কল্যানে এগিয়ে যাওয়ার আশা প্রকাশ করেন ।
লেখক: এম আর রকি
সম্পাদক: ভিশন নিউজ টুডে ডটকম