ঢাকা ০১:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সর্বশেষ :

মরুভূমির ‘সাম্মাম’ ফল চাষে সফল রেজাউল

কৃষক রেজাউল ইসলাম ও ফল সাম্মাম

স্টাফ রিপোর্টার ,নওগাঁঃ  মরুভূমির ফল সাম্মাম দেখতে তরমুজের মতো। দেশের মাটিতে এ ফল চাষ করে লাভবান হয়েছেন জেলার আত্রাই উপজেলার মীরাপাড়া গ্রামে কৃষক রেজাউল ইসলাম।

তিনি একজন সৌদি প্রবাসী। দেড় বিঘা জমিতে এ ফলের আবাদ করে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করেছেন। নতুন জাতের এ ফল উৎপাদনের-

খবর পেয়ে দেখতে আসছেন কৃষকরা। কেউ কেউ আগামীতে নতুন জাতের এ রসালো ফল উৎপাদনের জন্য পরামর্শও নিচ্ছেন।

জানা যায়, সুস্বাদু ফল সাম্মাম। ফলটি দেখতে অনেকটা বেল কিংবা বাতাবি লেবুর মতো। ভেতরে রসালো তরমুজের মতো এবং সুস্বাদু।

প্রতিটির ওজন প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি। জমিতে রোপণের দেড় মাসের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যেই পরিপক্ক হয়। এ ফলের তেমন একটা রোগবালাই নেই। এছাড়া খুবই সামান্য সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।

সৌদি আরবে অবস্থানের সময় রেজাউল ইসলাম ফলটি খেয়েছেন। দেশে ফেরার পর ফলটি চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বগুড়ায় এগ্রো ওয়ান নামের এক কৃষি গবেষণা খামারে তার ভাতিজা কৃষিবিদ মো. সামিউল ইসলামের সুবাদে সেখানে চারার সন্ধান পান।

সেখান থেকে চারা সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে নিজের দেড় বিঘা জমিতে সাম্মাম ফলের চাষ করেন। জমি চাষ, চারা কেনা, জাংলা তৈরি, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ আনুষঙ্গিক প্রায় ৬০ হাজার টাকা খচর হয়েছে।

মাত্র তিন মাসের মধ্যে ফলটি বাজারজাত করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এসব বিক্রি করছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় করেছেন।

কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘এ মৌসুমে প্রায় দুই হাজার ফল উৎপাদিত হয়েছে। প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি।

প্রতিকেজি সাম্মাম পাইকারি দেড়শ টাকা এবং খুচরা প্রায় দুই থেকে আড়াইশ টাকা বিক্রি হয়েছে। এ ফলের চাষ অত্যন্ত লাভজনক।’

রেজাউল ইসলামের ছেলে সোহানুর রহমান বলেন, ‘পড়াশোনার ফাঁকে বাবাকে সহায়তা করি। সাম্মাম উৎপাদনে তেমন বেগ পেতে হয়নি।

বীজ রোপণ থেকে পরিচর্যার উপর গুরুত্ব দিতে হয়েছে। এ ছাড়া সময়মতো জৈব সার দেওয়া হয়। এ ফলের বেশ চাহিদা রয়েছে।’

আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, ‘গতানুগতিক ফসল উৎপাদন এখন আর লাভজনক নয়।

কৃষকরা প্রথাগত ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছেন। কৃষকদের লাভজনক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ফসলে নতুনত্ব আনা হচ্ছে। সাম্মামের চারা উৎপাদনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে।’

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নুর আহম্মেদ বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের উন্নতমানের ফুল ও ফসল বাংলাদেশে চাষ করে জনপ্রিয় করে তুলছেন কৃষকরা।

এতে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে এসব বিদেশি ফল-ফসলের স্বাদ ও পুষ্টি গ্রহণ করে উপকৃত হচ্ছে এ দেশের মানুষ।’

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া চ্যাম্পিয়নরা আজ রাতে দেশে ফিরছেন

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

মরুভূমির ‘সাম্মাম’ ফল চাষে সফল রেজাউল

আপডেট সময় ০৮:১০:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুন ২০২০

স্টাফ রিপোর্টার ,নওগাঁঃ  মরুভূমির ফল সাম্মাম দেখতে তরমুজের মতো। দেশের মাটিতে এ ফল চাষ করে লাভবান হয়েছেন জেলার আত্রাই উপজেলার মীরাপাড়া গ্রামে কৃষক রেজাউল ইসলাম।

তিনি একজন সৌদি প্রবাসী। দেড় বিঘা জমিতে এ ফলের আবাদ করে প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করেছেন। নতুন জাতের এ ফল উৎপাদনের-

খবর পেয়ে দেখতে আসছেন কৃষকরা। কেউ কেউ আগামীতে নতুন জাতের এ রসালো ফল উৎপাদনের জন্য পরামর্শও নিচ্ছেন।

জানা যায়, সুস্বাদু ফল সাম্মাম। ফলটি দেখতে অনেকটা বেল কিংবা বাতাবি লেবুর মতো। ভেতরে রসালো তরমুজের মতো এবং সুস্বাদু।

প্রতিটির ওজন প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি। জমিতে রোপণের দেড় মাসের মধ্যেই গাছে ফল আসতে শুরু করে। তিন মাসের মধ্যেই পরিপক্ক হয়। এ ফলের তেমন একটা রোগবালাই নেই। এছাড়া খুবই সামান্য সার ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়।

সৌদি আরবে অবস্থানের সময় রেজাউল ইসলাম ফলটি খেয়েছেন। দেশে ফেরার পর ফলটি চাষ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

বগুড়ায় এগ্রো ওয়ান নামের এক কৃষি গবেষণা খামারে তার ভাতিজা কৃষিবিদ মো. সামিউল ইসলামের সুবাদে সেখানে চারার সন্ধান পান।

সেখান থেকে চারা সংগ্রহ করে প্রাথমিকভাবে নিজের দেড় বিঘা জমিতে সাম্মাম ফলের চাষ করেন। জমি চাষ, চারা কেনা, জাংলা তৈরি, কীটনাশক ও শ্রমিকসহ আনুষঙ্গিক প্রায় ৬০ হাজার টাকা খচর হয়েছে।

মাত্র তিন মাসের মধ্যে ফলটি বাজারজাত করা হয়েছে। ঢাকার বিভিন্ন বাজারে এসব বিক্রি করছেন। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় ৩ লাখ টাকা আয় করেছেন।

কৃষক রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘এ মৌসুমে প্রায় দুই হাজার ফল উৎপাদিত হয়েছে। প্রতিটি ফলের ওজন প্রায় দুই থেকে আড়াই কেজি।

প্রতিকেজি সাম্মাম পাইকারি দেড়শ টাকা এবং খুচরা প্রায় দুই থেকে আড়াইশ টাকা বিক্রি হয়েছে। এ ফলের চাষ অত্যন্ত লাভজনক।’

রেজাউল ইসলামের ছেলে সোহানুর রহমান বলেন, ‘পড়াশোনার ফাঁকে বাবাকে সহায়তা করি। সাম্মাম উৎপাদনে তেমন বেগ পেতে হয়নি।

বীজ রোপণ থেকে পরিচর্যার উপর গুরুত্ব দিতে হয়েছে। এ ছাড়া সময়মতো জৈব সার দেওয়া হয়। এ ফলের বেশ চাহিদা রয়েছে।’

আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, ‘গতানুগতিক ফসল উৎপাদন এখন আর লাভজনক নয়।

কৃষকরা প্রথাগত ফসল উৎপাদনে আগ্রহ হারাচ্ছেন। কৃষকদের লাভজনক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে ফসলে নতুনত্ব আনা হচ্ছে। সাম্মামের চারা উৎপাদনের মাধ্যমে ফসল উৎপাদনে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হবে।’

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নুর আহম্মেদ বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের উন্নতমানের ফুল ও ফসল বাংলাদেশে চাষ করে জনপ্রিয় করে তুলছেন কৃষকরা।

এতে একদিকে যেমন আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে এসব বিদেশি ফল-ফসলের স্বাদ ও পুষ্টি গ্রহণ করে উপকৃত হচ্ছে এ দেশের মানুষ।’