পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনায় অবসরপ্রাপ্ত এক ব্যাংক কর্মকর্তা এবং তার স্ত্রী-মেয়েকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
শুক্রবার (৫ জুন) বিকালে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে শহরের দক্ষিণ রাঘবপুরের একটি বাড়ির দরজা ভেঙ্গে ৩ জনের পচন ধরা গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
এই তিনজন হলেন- রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল জব্বার (৬২), তার স্ত্রী ছুম্মা খাতুন (৫৬) এবং মেয়ে সানজিদা খাতুন (১২)।
পাবনা সদর থানার ওসি নাসিম আহম্মেদ জানান, দক্ষিণ রাঘবপুরের জনৈক আবদুল খালেকের ৪ ইউনিটের একটি দোতলা বাড়ির নিচ তলার একটি ইউনিটে সপরিবারে ভাড়া থাকতেন আবদুল জব্বার।
বাড়ির মালিক ঢাকায় বসবাস করেন। বাড়িটির দোতলা এবং নিচ তলার একটি ইউনিট ফাঁকা।
তিনি জানান, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ শুক্রবার বিকাল ৩টার দিকে ওই বাড়ির নিচতলার একটি কক্ষ থেকে আবদুর জব্বার ও তার স্ত্রী এবং অপর একটি কক্ষ থেকে মেয়ে সানজিদার লাশ উদ্ধার করে।
সানজিদা পাবনা শহরের কালেক্টরেট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৭ম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
ওসি জানান, লাশের শরীরে অসংখ্য ধারালো অস্ত্রের আঘাতের ক্ষত রয়েছে এবং মুখে বালিশ চাপা দেওয়া রয়েছে। এখন মরদেহে পচন ধরেছে এবং গন্ধ বেরিয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে ৩-৪ দিন আগে দুর্বৃত্তরা তিনজনকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে।
ওসি আরও জানান, আবদুল জব্বার যে ইউনিটে ভাড়া থাকতেন সে ইউনিটের কক্ষগুলো তছনছ করা এবং আলমিরা ভাঙ্গা পাওয়া গেছে।
লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে নিহত আবদুল জব্বারের স্বজনরা ছুটে আসেন।
সদর উপজেলার ভাড়ায় বসবাস করা নিহত আবদুল জব্বারের ছোট ভাই মনিরুজ্জামান (৫০) এবং ছোট বোন নাজমা আকতার (৪৫) জানান, তারাও বুঝতে পারছেন না, কেন এবং কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।
স্বজনরা জানান, আবদুল জব্বারের গ্রামের বাড়ি সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুরে। তিনি পাবনায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক থেকে অফিসার হিসেবে অবসর নিয়ে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন।
আবদুল জব্বার নিঃসন্তান ছিলেন। নিহত সানজিদা তার পালিত মেয়ে।
পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম বিপিএম, পিপিএম বলেন, কী কারণে এবং কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে উদঘাটন করা যাচ্ছে না।
তবে ধারণা করা হচ্ছে, ডাকাতি শেষে দুর্বৃত্তরা তাদেরকে হত্যা করতে পারে।
পুলিশ সুপার আরও জানান, পুলিশের একাধিক ইউনিট রহস্য উদঘাটনে ইতিমধ্যেই মাঠে নেমেছে। এ ছাড়া রাজশাহী থেকে পুলিশের ক্রাইম ইউনিটের বিশেষ টিম রওনা হয়েছে।
তারা এসে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও সুরহতাল দেখবে। আলামত যাতে নষ্ট না হয়, সে জন্য রাজশাহী থেকে টিম না আসা পর্যন্ত লাশ ওই বাড়িতেই থাকবে। পুলিশ বাড়িটি পাহারা দিচ্ছে।