মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: গাছে ধরেছে থোকা থোকা আঙুর। নিচ থেকে দেখলে দারুন এক আনন্দ জাগে মনে। হাত দিয়ে ছুঁতে ইচ্ছে করে সেগুলো। তারপর হাত দিয়ে ধরার পরই শুরু হয়, ডাল থেকে ছিঁড়ে মুখে দেওয়া সহজাত লোভ!
উঠানের একটি অংশ ফেলে রাখাই ছিলো। তাতে কোনো ফলের গাছ ছিলো না বললেই চলে। তিন বছর আগে একটি স্থানীয় নার্সারি থেকে চারা কিনে লাগানো হয়। দু-তিন বছর পর বাড়ি সবাইকে অবাক করে ফল আসা শুরু হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলার ইছবপুর গ্রামে অবস্থিত শৈখিন বৃক্ষপ্রেমী পরিতোষ দেবের বাড়িতে শোভা ছড়িয়েছে এই থোকা থোকা আঙুরগুলো।
আঙুর গাছের মালিক পরিতোষ দেব বলেন, এ ফলের চারা আমি দুইশ টাকা দিয়ে শ্রীমঙ্গলের বনশ্রী নার্সারি থেকে কিনে নিয়ে আসি তিন বছর আগে।
তারপর মাটি খুঁড়ে গাছটি লাগাই। নিয়মিত যত্ন-আত্তি করতে থাকি। গত বছর সামান্য ফল এসেছিল। কিন্তু এসেছে গতবারের তুলনায় এবার বহুগুণ বেশি ফলে এসেছে। নিজের হাতে লাগানো গাছের এ ফলগুলো দেখলে মন ভরে উঠে।
ফল ধরা এবং এর স্বাদ সম্পর্কে তিনি বলেন, গতবার এসেছিল এক গুচ্ছ। এবার প্রায় পঁচিশটার গুচ্ছ এসেছে। একেকটি গুচ্ছে প্রায় ২০-২৫টি করে আঙুর রয়েছে। তবে এই আঙুর যে মিষ্টি তা কিন্তু নয়। কিছুটা টক। এ টকের কারণটা বুঝতে পারছি না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অজিত কুমার পাল এ প্রসঙ্গে বলেন, আঙুর ফল মূলত মিষ্টি জাতীয় রসালো ফল।
তবে সঠিক পরিচর্যাজনিত ত্রুটির কারণে অনেক সময় আঙুর ফলে টক হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নতুন করে গাছটির কিছু পরিচর্যা করলে পরবর্তী মৌসুমে ফলটি মিষ্টিতে রূপান্তরিত হতে পারে।
আঙুর ফলটি টক থেকে মিষ্টিতে রূপান্তরের পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, পরিচর্যার কারণে আঙুর ফল টক হয়। টকভাব দূর করার জন্য ফল ধরা শেষ হলে গাছটিকে হালকা প্রুনিং (অঙ্গ ছাঁটাই) করতে হবে।
তারপর সুষমমাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে। এক্ষেত্রে পটাশিয়ামের মাত্রাটা একটু বাড়িয়ে দিতে হয়। তারপর নিয়মিত জৈবসার দিতে হবে।
‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি খুবই মূল্যবান একটি কথা বলেছেন যে- নিজেদের অব্যবহৃত একটুকরো জায়গাও যেন আমরা অবহেলায় ফেলে না রাখি। এটা বিশেষ করে আমাদের কৃষি ব্যবস্থাপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ কথা।’
‘নিজের বাড়ির ফেলে রাখা উঠনে বা ছাদে অনেকেই এভাবে আঙুরসহ বিভিন্ন ফলের গাছ লাগিয়ে পরিচর্যা করতে পারেন। নিজের হাতে লাগানো গাছের ফল ধরার আনন্দ অনেক বেশি।
শুধু তা-ই নয়; এর মাধ্যমে দুটো বড় উপকার হয়ে থাকে। একটি হলো গাছের সঙ্গে সুন্দর সময় ব্যয় করা, দ্বিতীয়টি হলো এই ফল খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ হওয়া’ -এমনটি জানালেন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অজিত কুমার পাল।