ঢাকা ০৪:৩০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বর্ষবরণে শ্লীলতাহানির : তিন বছর পরেও হাজির হয়নি একজন সাক্ষীও

ফাইল ছবি

স্টাফ রিপোর্টারঃ  ২০১৫ সালে বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হলেও সাড়ে তিন বছর আগে কামাল নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ।

এরও ছয় মাস পর কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করলেও আজ পর্যন্ত কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। সাক্ষী না আসায় আলোচিত মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হলেও তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আদালত বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আদালতে সাক্ষী উপস্থিত করানো হবে। আশা করছি মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করব।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আনিছুর রহমান বলেন, মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের প্রতি ধার্য তারিখে সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় দেরি হচ্ছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ জুন কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ মার্চ মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন পুলিশ আদালতে সাক্ষী হাজির করতে না পারায় আদালত আগামী ১২ জুলাই সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই ঘটনায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। নারীদের লাঞ্ছনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আটজনকে শনাক্তের পর গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক একমাত্র কামালকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৩৪ জনকে।

ট্যাগস
সর্বাধিক পঠিত

আলিশান চাল, নওগাঁ

বিজ্ঞাপন দিন

বর্ষবরণে শ্লীলতাহানির : তিন বছর পরেও হাজির হয়নি একজন সাক্ষীও

আপডেট সময় ০২:৩৯:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ এপ্রিল ২০২০

স্টাফ রিপোর্টারঃ  ২০১৫ সালে বাংলা নববর্ষের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) টিএসসি এলাকায় বেশ কয়েকজন নারীর শ্লীলতাহানির ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আট লাঞ্ছনাকারীকে শনাক্ত করা হলেও সাড়ে তিন বছর আগে কামাল নামে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ।

এরও ছয় মাস পর কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করলেও আজ পর্যন্ত কোনো সাক্ষী আদালতে উপস্থিত হননি। সাক্ষী না আসায় আলোচিত মামলাটি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে রয়েছে।

ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু এ বিষয়ে জাগো নিউজকে বলেন, মামলাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাক্ষীদের বিরুদ্ধে সমন জারি হলেও তারা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে আদালত বন্ধ আছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আদালতে সাক্ষী উপস্থিত করানো হবে। আশা করছি মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি করব।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আনিছুর রহমান বলেন, মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের প্রতি ধার্য তারিখে সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত হচ্ছেন না। সাক্ষীরা আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় মামলার বিচার কার্যক্রম পরিচালনায় দেরি হচ্ছে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৯ জুন কামালের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার। বর্তমানে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এ মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম চলছে। এ মামলার একমাত্র আসামি কামাল জামিনে রয়েছেন।

সর্বশেষ চলতি বছরের ১২ মার্চ মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এদিন পুলিশ আদালতে সাক্ষী হাজির করতে না পারায় আদালত আগামী ১২ জুলাই সাক্ষ্য গ্রহণের পরবর্তী দিন ধার্য করেন।

২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ওই ঘটনায় শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। নারীদের লাঞ্ছনার প্রত্যক্ষদর্শী ও ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে আটজনকে শনাক্তের পর গণমাধ্যমে ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তাদের ধরিয়ে দিতে লাখ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়।

২০১৫ সালের ৯ ডিসেম্বর এ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক দীপক কুমার দাস। প্রতিবেদনে আসামি খুঁজে না পাওয়ার কথা বলা হয়। তবে ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক জয়শ্রী সমাদ্দার।

২০১৬ সালের ১৫ ডিসেম্বর পিবিআইর পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক একমাত্র কামালকে আসামি করে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়, তদন্তে আট লাঞ্ছনাকারীর মধ্যে একজন আসামিকে খুঁজে পাওয়া গেছে। অপর সাত আসামিকে খুঁজে না পাওয়ায় তাদের চার্জশিটে নাম অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তাদের খুঁজে পাওয়া গেলে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া হবে। মামলায় সাক্ষী করা হয় ৩৪ জনকে।