স্টাফ রিপোর্টারঃ করোনা ভাইরাসের প্রকোপের মুখেই এসেছে এবারের পহেলা বৈশাখ। প্রায় মাসব্যাপী সাধারণ ছুটিতে এখন গৃহবন্দী সারাদেশের মানুষ। ফলে এবারে অনেকটাই চাঞ্চল্যহীন নববর্ষ বরণ উৎসব।
স্বাধীনতার পর এবারই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হচ্ছে না। করোনা পরিস্থিতিতে বৃহত্তর জনস্বার্থের কথা বিবেচনা করেই নববর্ষে জনসমাগম না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে দেশজুড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পহেলা বৈশাখে উদযাপিত না হলেও, পারিবারিক আবহে ঘরে বসেই মানুষ নববর্ষকে স্বাগত জানাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) বাংলা বর্ষ ১৪২৭-এর প্রথম দিন। সকালে ঘুম থেকে উঠেই কোন শাড়ি, কোন টিপ আর কোন চুড়ি পরবেন তা নিয়ে ভাবছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তাবাসসুম। মা-বাবা-ভাই-বোন নিয়ে তাবাসসুমের পরিবার। এবারের বর্ষবরণে যেহেতু বাইরে যাওয়ার অনুমতি নেই, তাই ঘরে বসে পরিবারের সঙ্গেই নববর্ষ উদযাপনের পরিকল্পনা তার।
গত মাসের ২১ তারিখ থেকে ঘরবন্দি রাজধানীর আফতাবনগরের বাসিন্দা নিরা। এ অবস্থায় পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, না হোক বের হওয়া। আমরা সবাই মিলে বাসায়ই পহেলা বৈশাখ উদযাপন করবো। সকালে পান্তা-ইলিশসহ হরেক রকম বাঙালি খাবার তৈরি করেছি। আগামী দিনগুলো কেমন হবে জানি না। ফলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে এ আয়োজন।
রাজধানীর নিকেতনের বাসিন্দা জিএম হারুন-অর রশিদ। স্ত্রী-ছেলে-মেয়েকে নিয়ে এবার সাদামাটাভাবে বৈশাখ উদযাপন করছেন জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিবার পহেলা বৈশাখে সবাইকে নিয়ে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরে ঘুরে বেড়াতাম, কিন্তু এবার করোনার কারণে বাইরে যাওয়া হচ্ছে না। বাসাতেই ভিন্ন রকম আয়োজন করেছি। সারাদিন টিভিতে বৈশাখী অনুষ্ঠান দেখে পার করবো। বেঁচে থাকলে আবারও পুরোনা রূপে বৈশাখ উদযাপন করবো।
উত্তরার বাসিন্দা এম সোহেল রানা বলেন, আমরা যে বেঁচে আছি, সেটাই বড় কথা। বেঁচে থাকলে আবারও উদযাপন করবো বৈশাখ। এবার না হয় সাদামাটা ঘরোয়া নববর্ষ উদযাপন করলাম।
কলেজশিক্ষার্থী ফাহমি বলেন, আগামী দিনগুলো যেন ভাল কাটে সে জন্য মন খারাপ না করে অনুপ্রেরণা নিয়েই এ দিনটি শুরু করা যেতে পারে।
এদিকে নববর্ষের দিন ঘরবন্দি অনেক অসহায় পরিবারে খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছেন অনেকেই। তাদেরই একজন রাজধানীর মিরপুরের বাসিন্দা সাইফুল। তিনি বলেন, পাশের ঘরে না খেয়ে থাকা পরিবারটির খাবার ব্যবস্থা করে দেওয়াই হোক নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়।